জামায়াতের সঙ্গে জোট না করতে নাহিদকে এনসিপির ৩০ নেতার চিঠি

চরচা প্রতিবেদক
চরচা প্রতিবেদক
জামায়াতের সঙ্গে জোট না করতে নাহিদকে এনসিপির ৩০ নেতার চিঠি
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) লোগো

জামায়াতে ইসলামীসহ আট দলীয় জোটের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজনৈতিক জোট বা আসন সমঝোতা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির ৩০ জন সদস্য দলের নেতা নাহিদ ইসলামকে চিঠি দিয়েছেন।

আজ শনিবার এ বিষয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ জানিয়ে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে চিঠি দিয়েছেন ওই ৩০ নেতা।

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দায়বদ্ধতা ও দলীয় মূল্যবোধের আলোকে সম্ভাব্য জোট বিষয়ে নীতিগত আপত্তি সংক্রান্ত স্মারকলিপি’ শীর্ষক চিঠিতে নেতারা আপত্তির ভিত্তি হিসেবে এনসিপি আদর্শ, জুলাই গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কিত ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা এবং গণতান্ত্রিক নৈতিকতার কথা তুলে ধরেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর বিগত এক বছর ধরে জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবিরের বিভাজনমূলক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, অন্যান্য দলের ভেতরে গুপ্তচরবৃত্তি ও স্যাবোটেজ, এনসিপির ওপর বিভিন্ন অপকর্মের দায় চাপানোর অপচেষ্টা, ছাত্র সংসদ নির্বাচনগুলোতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) এবং পরবর্তীতে ছাত্রশক্তি বিষয়ে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার, তাদের অনলাইন ফোর্সের মাধ্যমে এনসিপি ও আমাদের ছাত্র সংগঠনের নারী সদস্যদের চরিত্রহননের চেষ্টা এবং সর্বোপরি, ধর্মকে কেন্দ্র করে সামাজিক ফ্যাসিবাদের উত্থানের আশঙ্কা দেশের ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত হয়ে উঠেছে।”

চিঠিতে বলা হয়েছে, “জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক ইতিহাস, বিশেষ করে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকা, গণহত্যায় সহযোগিতা এবং সে সময় সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধ প্রশ্নে তাদের অবস্থান-বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চেতনা ও আমাদের দলের মূল্যবোধের সঙ্গে মৌলিকভাবে সাংঘর্ষিক।”

চিঠিতে সই করেছেন যারা
চিঠিতে সই করেছেন যারা

চিঠিতে সই করেছেন যারা
চিঠিতে সই করেছেন যারা

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কোনো ধরনের জোট এনসিপির নৈতিক অবস্থানকে দুর্বল করবে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

চিঠিতে নেতারা বলেন, একাধিকবার ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচনের ঘোষণার পর এখন অল্প কিছু আসনের জন্য কোনো জোটে যাওয়া ‘জাতির সঙ্গে প্রতারণার শামিল’।

চিঠিতে এনসিপির নেতারা আরও বলেছেন, “আমরা অত্যন্ত আশঙ্কার সাথে লক্ষ্য করেছি, যখনই এই জোটের সম্ভাবনার খবর গণমাধ্যমের মাধ্যমে সামনে এসেছে, এর পরপরই আমাদের সমর্থনে থাকা কর্মী-সংগঠকসহ একটা বড় সংখ্যক মানুষ আমাদের দলের প্রতি তাদের সমর্থন সরিয়ে নিতে উদ্যত হয়েছেন। যদি আমাদের সমর্থন করা মধ্যপন্থী এবং নতুন রাজনীতি প্রত্যাশা করা মানুষেরা সমর্থন সরিয়ে নেয়, তাহলে ভবিষ্যতে পার্টির মধ্যপন্থী সমর্থক ভিত্তি হারাব।”

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক জোটে না যেতে ‘স্পষ্ট অবস্থান’ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, নীতিগত অবস্থানের ভিত্তিতে কৌশল নির্ধারিত হওয়া উচিত, কৌশলগত কারণে নীতিগত অবস্থান বিসর্জন দেওয়া উচিত নয়।

চিঠিতে সাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন, কেন্দ্রীয় সংগঠক আরমান হোসাইন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক খান মো. মুরসালীন, সংগঠক রফিকুল ইসলাম আইনী।

সম্পর্কিত