দীপ হালদার

বাংলাদেশে ঠিক কাকে ভয় পাচ্ছেন তারেক রহমান? এতটাই ভয় যে, অসুস্থ মাকে দেখতে আসা কিংবা গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের আগে দলের হাল ধরা–কোনোটাই তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না?
বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটির উত্তর আসলে নির্ভর করছে আরেকটি প্রশ্নের ওপর। সবাই জানতে চাচ্ছে, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির শুরুতে জাতীয় নির্বাচন আদৌ অনুষ্ঠিত হবে কি না।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোতে প্রথমে জানানো হয়েছিল যে, ২০২৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা ‘দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড’কে বলেছিলেন, “যেহেতু ৮ ফেব্রুয়ারির ঠিক আগেই দুটি সরকারি ছুটি রয়েছে, তাই শহরের ভোটাররা, বিশেষ করে চাকরিজীবীরা ভোট দিতে গ্রামে যেতে পারবেন।”
এরপর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে খবর আসে, নির্বাচন সম্ভবত ৮ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হবে। সবশেষ, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে–আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তবে এই ঘোষণা নিয়ে বাংলাদেশে বেশ সংশয় রয়েছে। কারণ, এর আগেও জাতীয় নির্বাচন পেছানো হয়েছে। দেশের অন্যতম বড় দল বিএনপি নির্বাচন বিলম্বিত হওয়া নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কার্যত এক ধরনের দ্বন্দ্বে লিপ্ত।
আর এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরেকটি প্রশ্ন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কেন ঢাকায় ফিরছেন না?
তারেক রহমানের মা, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গত ২৩ নভেম্বর থেকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি। অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচনও দরজায় কড়া নাড়ছে। তবুও তারেক রহমান লন্ডনের নির্বাসিত জীবন ছেড়ে দেশে ফেরেননি।
তারেক রহমানের ঢাকা ফেরা এবং বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের ভাগ্য যেন একই সুতোয় গাঁথা।
তারেক রহমান আসলে কাকে ভয় পাচ্ছেন?
তারেক রহমানের অব্যাহত অনুপস্থিতি দেশের বাইরের পর্যবেক্ষকদের মধ্যেও গুঞ্জনের জন্ম দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি যদি ঢাকায় ফিরে আসেন, তবে তার জীবনের ঝুঁকি থাকতে পারে।
গত ২ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বিএনপি নেতাকে তার নিরাপত্তার জন্য যেকোনো ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিলেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদও গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, “আমি বিশ্বাস করি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নভেম্বরের মধ্যেই দেশে ফিরবেন।”
গত ৬ অক্টোবর প্রায় ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি এক সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন যে, তিনি দেশে ফেরার পরিকল্পনা করছেন। তিনি বলেছিলেন, “সময় হয়েছে, ইনশাআল্লাহ আমি শিগগিরই ফিরব।”
কিন্তু ২৯ নভেম্বরের মধ্যে তার সুর বদলে যায়। তিনি বলেন, “এই স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে বিস্তারিত বলার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমাদের পরিবার আশাবাদী যে, রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূল পর্যায়ে পৌঁছালেই আমার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দীর্ঘ ও উদ্বেগজনক অপেক্ষার অবসান ঘটবে।”
কিন্তু তাকে দূরে রাখছে কোন বিষয়গুলো? অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর তার বিরুদ্ধে দায়ের করা বেশির ভাগ মামলা থেকেই তিনি খালাস পেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলাও, যেখানে আগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ হাসিনা এখন ভারতে অবস্থান করছেন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। পাশাপাশি তার দলের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রয়েছে।
তাহলে বাংলাদেশে কার ভয়ে তারেক রহমান এতটাই তটস্থ যে, অসুস্থ মাকে দেখতে বা নির্বাচনের আগে দলের দায়িত্ব নিতে তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না?
জামায়াতের উত্থান
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং অন্যান্য নিবন্ধিত দলগুলো ৩০০টি সংসদীয় আসনের জন্য প্রার্থী চূড়ান্ত করতে ব্যস্ত। নির্বাচনের তফসিলও ঘোষণা হয়ে গেছে।
কিন্তু যারা বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন চান, তাদের মনে একটি গভীর শঙ্কা কাজ করছে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হয়তো হবেই না। আর এর কারণ হলো–বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর জামায়াতে ইসলামীর শক্ত নিয়ন্ত্রণ।
গত সেপ্টেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির এক বিস্ময়কর জয় পায়। এর পর অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও একই ধরনের জয়ের খবর আসতে থাকে। বিশ্ববাসী তখন বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতিতে জামায়াতের ক্রমবর্ধমান প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হয়।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত গত সংসদ নির্বাচনে জামায়াতকে অংশগ্রহণে বাধা দেওয়া হয়েছিল। ২০২৫ সালের ১ জুন সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচন কমিশনকে তাদের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
ঢাকার রাজনীতির ওপর যারা নজর রাখেন, তাদের কাছে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে জামায়াতের উত্থান অদম্য বলে মনে হচ্ছে।
বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের পুষ্প কুমারী লিখেছেন, “বাংলাদেশে দলটির পরিচয় নতুন করে তৈরি হচ্ছে একটি উদীয়মান ‘ইসলামি বাম’ শক্তি হিসেবে, যারা ইসলামি নীতিমালার সঙ্গে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার, অন্তর্ভুক্তি এবং বর্ধিত নাগরিক অধিকারের সংমিশ্রণ ঘটাচ্ছে।”
পুষ্প কুমারী সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর সাম্প্রতিক একটি জাতীয় যুব জরিপ উদ্ধৃত করে দেখান, ৩৫ বছরের কম বয়সী ভোটারদের ৩৯ শতাংশ বিএনপিকে সমর্থন করে, যেখানে প্রায় ২২ শতাংশ ভোটার এখন জামায়াতকে সমর্থন করছে।
তবুও জামায়াত বাংলাদেশে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে, যা তাদের একসময়ের মিত্র বিএনপির বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এক যুব সংলাপে সালাহউদ্দিন আহমদ নির্বাচন বিলম্বিত হওয়া নিয়ে জামায়াতকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, “কিছু পত্রিকায় শিরোনাম হয়েছে যে, জামায়াত নেতারা দাবি করছেন তারা সরকার গঠন করবেন আর বিএনপি বিরোধী দলে বসবে। কিন্তু এটা ঠিক করার মালিক কে? আপনারা, নাকি জনগণ? আপনারা যদি এতই আত্মবিশ্বাসী হন, তবে একের পর এক অজুহাত দেখিয়ে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত না করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না কেন?”
তারেকের ফেরা বা নির্বাচনের জন্য কি প্রস্তুত?
বাংলাদেশের অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক নিশ্চিত যে, জামায়াত যতই শক্তিশালী হোক না কেন, নির্বাচনে জেতার মতো যথেষ্ট জনসমর্থন তাদের নেই। তাই তারা নির্বাচনও চায় না, আবার তারেক রহমান ঢাকায় ফিরে বিএনপির কর্মীদের দ্রুত নির্বাচনের জন্য উজ্জীবিত করুক–সেটাও তারা চায় ।
গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি ঢাকার পল্টন-বিজয়নগর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন, যা পুরো বাংলাদেশে আতঙ্কের সৃষ্টি করে।
দীপ হালদার: লেখক ও সাংবাদিক
[ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট-এ প্রকাশিত মতামতটি চরচা পাঠকদের জন্য কিছুটা সংক্ষেপিত রূপে প্রকাশ করা হলো]

বাংলাদেশে ঠিক কাকে ভয় পাচ্ছেন তারেক রহমান? এতটাই ভয় যে, অসুস্থ মাকে দেখতে আসা কিংবা গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের আগে দলের হাল ধরা–কোনোটাই তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না?
বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটির উত্তর আসলে নির্ভর করছে আরেকটি প্রশ্নের ওপর। সবাই জানতে চাচ্ছে, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির শুরুতে জাতীয় নির্বাচন আদৌ অনুষ্ঠিত হবে কি না।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোতে প্রথমে জানানো হয়েছিল যে, ২০২৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা ‘দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড’কে বলেছিলেন, “যেহেতু ৮ ফেব্রুয়ারির ঠিক আগেই দুটি সরকারি ছুটি রয়েছে, তাই শহরের ভোটাররা, বিশেষ করে চাকরিজীবীরা ভোট দিতে গ্রামে যেতে পারবেন।”
এরপর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে খবর আসে, নির্বাচন সম্ভবত ৮ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হবে। সবশেষ, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে–আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তবে এই ঘোষণা নিয়ে বাংলাদেশে বেশ সংশয় রয়েছে। কারণ, এর আগেও জাতীয় নির্বাচন পেছানো হয়েছে। দেশের অন্যতম বড় দল বিএনপি নির্বাচন বিলম্বিত হওয়া নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কার্যত এক ধরনের দ্বন্দ্বে লিপ্ত।
আর এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরেকটি প্রশ্ন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কেন ঢাকায় ফিরছেন না?
তারেক রহমানের মা, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গত ২৩ নভেম্বর থেকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি। অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচনও দরজায় কড়া নাড়ছে। তবুও তারেক রহমান লন্ডনের নির্বাসিত জীবন ছেড়ে দেশে ফেরেননি।
তারেক রহমানের ঢাকা ফেরা এবং বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের ভাগ্য যেন একই সুতোয় গাঁথা।
তারেক রহমান আসলে কাকে ভয় পাচ্ছেন?
তারেক রহমানের অব্যাহত অনুপস্থিতি দেশের বাইরের পর্যবেক্ষকদের মধ্যেও গুঞ্জনের জন্ম দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি যদি ঢাকায় ফিরে আসেন, তবে তার জীবনের ঝুঁকি থাকতে পারে।
গত ২ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বিএনপি নেতাকে তার নিরাপত্তার জন্য যেকোনো ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিলেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদও গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, “আমি বিশ্বাস করি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নভেম্বরের মধ্যেই দেশে ফিরবেন।”
গত ৬ অক্টোবর প্রায় ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি এক সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন যে, তিনি দেশে ফেরার পরিকল্পনা করছেন। তিনি বলেছিলেন, “সময় হয়েছে, ইনশাআল্লাহ আমি শিগগিরই ফিরব।”
কিন্তু ২৯ নভেম্বরের মধ্যে তার সুর বদলে যায়। তিনি বলেন, “এই স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে বিস্তারিত বলার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমাদের পরিবার আশাবাদী যে, রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূল পর্যায়ে পৌঁছালেই আমার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দীর্ঘ ও উদ্বেগজনক অপেক্ষার অবসান ঘটবে।”
কিন্তু তাকে দূরে রাখছে কোন বিষয়গুলো? অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর তার বিরুদ্ধে দায়ের করা বেশির ভাগ মামলা থেকেই তিনি খালাস পেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলাও, যেখানে আগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ হাসিনা এখন ভারতে অবস্থান করছেন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। পাশাপাশি তার দলের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রয়েছে।
তাহলে বাংলাদেশে কার ভয়ে তারেক রহমান এতটাই তটস্থ যে, অসুস্থ মাকে দেখতে বা নির্বাচনের আগে দলের দায়িত্ব নিতে তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না?
জামায়াতের উত্থান
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং অন্যান্য নিবন্ধিত দলগুলো ৩০০টি সংসদীয় আসনের জন্য প্রার্থী চূড়ান্ত করতে ব্যস্ত। নির্বাচনের তফসিলও ঘোষণা হয়ে গেছে।
কিন্তু যারা বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন চান, তাদের মনে একটি গভীর শঙ্কা কাজ করছে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হয়তো হবেই না। আর এর কারণ হলো–বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর জামায়াতে ইসলামীর শক্ত নিয়ন্ত্রণ।
গত সেপ্টেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির এক বিস্ময়কর জয় পায়। এর পর অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও একই ধরনের জয়ের খবর আসতে থাকে। বিশ্ববাসী তখন বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতিতে জামায়াতের ক্রমবর্ধমান প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হয়।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত গত সংসদ নির্বাচনে জামায়াতকে অংশগ্রহণে বাধা দেওয়া হয়েছিল। ২০২৫ সালের ১ জুন সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচন কমিশনকে তাদের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
ঢাকার রাজনীতির ওপর যারা নজর রাখেন, তাদের কাছে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে জামায়াতের উত্থান অদম্য বলে মনে হচ্ছে।
বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের পুষ্প কুমারী লিখেছেন, “বাংলাদেশে দলটির পরিচয় নতুন করে তৈরি হচ্ছে একটি উদীয়মান ‘ইসলামি বাম’ শক্তি হিসেবে, যারা ইসলামি নীতিমালার সঙ্গে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার, অন্তর্ভুক্তি এবং বর্ধিত নাগরিক অধিকারের সংমিশ্রণ ঘটাচ্ছে।”
পুষ্প কুমারী সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর সাম্প্রতিক একটি জাতীয় যুব জরিপ উদ্ধৃত করে দেখান, ৩৫ বছরের কম বয়সী ভোটারদের ৩৯ শতাংশ বিএনপিকে সমর্থন করে, যেখানে প্রায় ২২ শতাংশ ভোটার এখন জামায়াতকে সমর্থন করছে।
তবুও জামায়াত বাংলাদেশে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে, যা তাদের একসময়ের মিত্র বিএনপির বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এক যুব সংলাপে সালাহউদ্দিন আহমদ নির্বাচন বিলম্বিত হওয়া নিয়ে জামায়াতকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, “কিছু পত্রিকায় শিরোনাম হয়েছে যে, জামায়াত নেতারা দাবি করছেন তারা সরকার গঠন করবেন আর বিএনপি বিরোধী দলে বসবে। কিন্তু এটা ঠিক করার মালিক কে? আপনারা, নাকি জনগণ? আপনারা যদি এতই আত্মবিশ্বাসী হন, তবে একের পর এক অজুহাত দেখিয়ে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত না করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না কেন?”
তারেকের ফেরা বা নির্বাচনের জন্য কি প্রস্তুত?
বাংলাদেশের অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক নিশ্চিত যে, জামায়াত যতই শক্তিশালী হোক না কেন, নির্বাচনে জেতার মতো যথেষ্ট জনসমর্থন তাদের নেই। তাই তারা নির্বাচনও চায় না, আবার তারেক রহমান ঢাকায় ফিরে বিএনপির কর্মীদের দ্রুত নির্বাচনের জন্য উজ্জীবিত করুক–সেটাও তারা চায় ।
গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি ঢাকার পল্টন-বিজয়নগর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন, যা পুরো বাংলাদেশে আতঙ্কের সৃষ্টি করে।
দীপ হালদার: লেখক ও সাংবাদিক
[ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট-এ প্রকাশিত মতামতটি চরচা পাঠকদের জন্য কিছুটা সংক্ষেপিত রূপে প্রকাশ করা হলো]

জহির রায়হান মিরপুরে যাবার আগে ক্যাপ্টেন জিএইচ মোর্শেদ খানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে। মোর্শেদ খান যথাযথ নিরাপত্তা সতর্কতা নিয়ে তাঁকে মিরপুরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন সঙ্গে পুলিশ নিয়ে যেতে। পরে ক্যাপ্টেন মোর্শেদ অভিযানে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

শুধু নেলি কেন, বিহারের ভোটের পর আসামের বিজেপি মন্ত্রী অশোক সিংঘল তার এক্স হ্যান্ডেলে ফুলকপি চাষের একটা ছবি দিয়ে লিখেছেন ‘বিহার অ্যাপ্রুভস গোবি ফার্মিং’। অর্থাৎ বিহার কপি চাষকেই অনুমোদন দিয়েছে। কারণ? ভাগলপুরের ইতিহাস মনে করিয়ে দিতে চাইছেন তিনি। কী হয়েছিল ভাগলপুরে?

কবি মেহেরুন্নেছার মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের বাড়িতে হামলা চালায় স্বাধীনতাবিরোধী বিহারি সন্ত্রাসীরা। জানা যায় মিরপুরের সে সময়ের কুখ্যাত বিহারি সন্ত্রাসী নেহাল গুণ্ডা, হাসিব হাশমী, আখতার গুণ্ডা ও আব্বাস চেয়ারম্যান দলবল নিয়ে মেহেরুন্নেছাদের বাড়ি আক্রমণ করে।