চরচা ডেস্ক

লিফট থাকতে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা অনেকের কাছে বিরক্তিকর ও কষ্টদায়ক মনে হতে পারে। কিন্তু গবেষণা বলছে, নিয়মিত সিঁড়ি ভাঙা শুধু শরীর না, মস্তিষ্কের জন্যও উপকারি।
সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা শরীরের ভারসাম্য উন্নত করে এবং হঠাৎ পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রোধ করে। শরীরের নিম্নাংশের শক্তি বাড়াতেও এটি সহায়ক বলে প্রমাণিত হয়েছে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, দু-এক তলা সিঁড়িতে ওঠা আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। যেমন-সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, স্মৃতিশক্তির উন্নতি এবং সৃজনশীল চিন্তা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
'লো-ইমপ্যাক্ট' বা হালকা ব্যায়ামের একটি ধরন হিসেবে অল্প সময়ে সিঁড়ি ওঠা-নামা হৃদস্বাস্থ্যের ওপর ভালো প্রভাব ফেলে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। নিয়মিত সিঁড়িতে ওঠানামার ফলে শ্বাসযন্ত্রের যে উন্নতি ঘটে, তা জিমের ট্রেডমিল মেশিন ব্যবহারে অর্জিত ফলাফলের প্রায় সমান।
সিঁড়িতে ওঠানামা করা হলো অন্যতম সহজ কার্ডিও ব্যায়াম। কারণ এতে খুব দ্রুত হৃদস্পন্দন বাড়ে। মাধ্যাকর্ষণের বিপরীতে ওঠা স্বাভাবিকভাবেই বেশ কঠিন, তাই এটি অক্সিজেন গ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধি করে। একইসঙ্গে এটি শরীরের নিম্নাংশের পেশিকে সক্রিয় করে, যা সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ুর একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। সিঁড়ি দিয়ে বারবার ওঠানামা করলে মেটাবলিজম বাড়ে, যা হজমের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠার সময় উরু ও পেটের পেশি এক সঙ্গে কাজ করে। উরুর সামনের অংশের পেশি দুটি ভিন্নভাবে কাজ করে: সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠার সময় এগুলো সংকুচিত হয়। একে বলা হয় ‘কনসেন্ট্রিক কন্ট্রাকশন’। সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামার সময় এগুলো প্রসারিত হয়, যাকে ‘একসেন্ট্রিক কন্ট্রাকশন’ বলা হয়। কনসেন্ট্রিক কন্ট্রাকশনে বেশি অক্সিজেন লাগে, ব্যায়ামের সময় বেশি ক্যালরি খরচ হয় এবং এগুলোকে একটু কঠিন মনে হয়। বারবার একসেন্ট্রিক কন্ট্রাকশন করলে পেশিতে শক্তি বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হয়। একই কারণে ব্যায়ামের সময় পেশিতে তুলনামূলকভাবে বেশি চাপ প্রয়োগ করে। তাই পেশি মেরামত ও পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘমেয়াদে বেশি ক্যালরি খরচ হয়।
শুধু শারীরিকভাবে নয়, মস্তিষ্কের উপকারেও সিঁড়ি ভাঙা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম এবং মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধির সাথে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার যোগসূত্র আছে। এছাড়া ঘুম ভালো হওয়া এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও এটি সহায়ক বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
জাপানের ইয়ামাগুচি ইউনিভার্সিটি গ্র্যাজুয়েট স্কুল অফ মেডিসিনের গবেষকদের দ্বারা প্রকাশিত একটি গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে, যারা লিফটে ওঠার চেয়ে দুই তলা সিঁড়ি বেয়ে ওঠেন, কোনো সমস্যা সমাধানের সময় তারা বেশি মনোযোগী থাকেন। একই দলের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, লিফট ব্যবহারকারীদের তুলনায় যারা সিঁড়ি ব্যবহার করে নিচে নামেন তাদের সৃজনশীল চিন্তাশক্তি ৬১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

তাই এমন কোনো সমস্যা যা হয়ত দীর্ঘদিন ধরে সমাধান করার চেষ্টা করছেন কিন্তু পারছেন না, তাহলে একটু সিঁড়িতে ওঠানামা করে দেখতে পারেন কোনো কাজে আসে কি না।
তবে এক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। যাদের হাঁটু ব্যথা বা পায়ের সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে সিঁড়ি ভাঙার বদলে বিকল্প কোনো ব্যায়াম বেছে নেওয়া ভালো। এছাড়া খুব দ্রুত সিঁড়িতে ওঠানামা করলে অনেক সময় পালস রেট বেড়ে যায়, যা ঝুঁকির কারণ হতে পারে। এই বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরুরি।
তথ্যসূত্র: বিবিসি

লিফট থাকতে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা অনেকের কাছে বিরক্তিকর ও কষ্টদায়ক মনে হতে পারে। কিন্তু গবেষণা বলছে, নিয়মিত সিঁড়ি ভাঙা শুধু শরীর না, মস্তিষ্কের জন্যও উপকারি।
সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা শরীরের ভারসাম্য উন্নত করে এবং হঠাৎ পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রোধ করে। শরীরের নিম্নাংশের শক্তি বাড়াতেও এটি সহায়ক বলে প্রমাণিত হয়েছে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, দু-এক তলা সিঁড়িতে ওঠা আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। যেমন-সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, স্মৃতিশক্তির উন্নতি এবং সৃজনশীল চিন্তা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
'লো-ইমপ্যাক্ট' বা হালকা ব্যায়ামের একটি ধরন হিসেবে অল্প সময়ে সিঁড়ি ওঠা-নামা হৃদস্বাস্থ্যের ওপর ভালো প্রভাব ফেলে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। নিয়মিত সিঁড়িতে ওঠানামার ফলে শ্বাসযন্ত্রের যে উন্নতি ঘটে, তা জিমের ট্রেডমিল মেশিন ব্যবহারে অর্জিত ফলাফলের প্রায় সমান।
সিঁড়িতে ওঠানামা করা হলো অন্যতম সহজ কার্ডিও ব্যায়াম। কারণ এতে খুব দ্রুত হৃদস্পন্দন বাড়ে। মাধ্যাকর্ষণের বিপরীতে ওঠা স্বাভাবিকভাবেই বেশ কঠিন, তাই এটি অক্সিজেন গ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধি করে। একইসঙ্গে এটি শরীরের নিম্নাংশের পেশিকে সক্রিয় করে, যা সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ুর একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। সিঁড়ি দিয়ে বারবার ওঠানামা করলে মেটাবলিজম বাড়ে, যা হজমের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠার সময় উরু ও পেটের পেশি এক সঙ্গে কাজ করে। উরুর সামনের অংশের পেশি দুটি ভিন্নভাবে কাজ করে: সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠার সময় এগুলো সংকুচিত হয়। একে বলা হয় ‘কনসেন্ট্রিক কন্ট্রাকশন’। সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামার সময় এগুলো প্রসারিত হয়, যাকে ‘একসেন্ট্রিক কন্ট্রাকশন’ বলা হয়। কনসেন্ট্রিক কন্ট্রাকশনে বেশি অক্সিজেন লাগে, ব্যায়ামের সময় বেশি ক্যালরি খরচ হয় এবং এগুলোকে একটু কঠিন মনে হয়। বারবার একসেন্ট্রিক কন্ট্রাকশন করলে পেশিতে শক্তি বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হয়। একই কারণে ব্যায়ামের সময় পেশিতে তুলনামূলকভাবে বেশি চাপ প্রয়োগ করে। তাই পেশি মেরামত ও পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘমেয়াদে বেশি ক্যালরি খরচ হয়।
শুধু শারীরিকভাবে নয়, মস্তিষ্কের উপকারেও সিঁড়ি ভাঙা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম এবং মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধির সাথে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার যোগসূত্র আছে। এছাড়া ঘুম ভালো হওয়া এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও এটি সহায়ক বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
জাপানের ইয়ামাগুচি ইউনিভার্সিটি গ্র্যাজুয়েট স্কুল অফ মেডিসিনের গবেষকদের দ্বারা প্রকাশিত একটি গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে, যারা লিফটে ওঠার চেয়ে দুই তলা সিঁড়ি বেয়ে ওঠেন, কোনো সমস্যা সমাধানের সময় তারা বেশি মনোযোগী থাকেন। একই দলের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, লিফট ব্যবহারকারীদের তুলনায় যারা সিঁড়ি ব্যবহার করে নিচে নামেন তাদের সৃজনশীল চিন্তাশক্তি ৬১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

তাই এমন কোনো সমস্যা যা হয়ত দীর্ঘদিন ধরে সমাধান করার চেষ্টা করছেন কিন্তু পারছেন না, তাহলে একটু সিঁড়িতে ওঠানামা করে দেখতে পারেন কোনো কাজে আসে কি না।
তবে এক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। যাদের হাঁটু ব্যথা বা পায়ের সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে সিঁড়ি ভাঙার বদলে বিকল্প কোনো ব্যায়াম বেছে নেওয়া ভালো। এছাড়া খুব দ্রুত সিঁড়িতে ওঠানামা করলে অনেক সময় পালস রেট বেড়ে যায়, যা ঝুঁকির কারণ হতে পারে। এই বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরুরি।
তথ্যসূত্র: বিবিসি