কীভাবে বুঝবেন আপনার শরীরে পুষ্টির অভাব হচ্ছে

চরচা ডেস্ক
চরচা ডেস্ক
কীভাবে বুঝবেন আপনার শরীরে পুষ্টির অভাব হচ্ছে
শরীর কিছু সূক্ষ্ম সংকেত দেয়, যেগুলো লক্ষ্য করলেই বোঝা যায় আপনার শরীরে পুষ্টির অভাব হচ্ছে। ছবি: ফ্রিপিক

আজকের ব্যস্ত জীবনে অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, প্রক্রিয়াজাত খাবার আর স্ট্রেস, সব মিলিয়ে অনেকের শরীরেই ধীরে ধীরে পুষ্টির ঘাটতি তৈরি হয়। সমস্যা হলো এই ঘাটতি প্রথমদিকে খুব স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে না। তবে শরীর কিছু সূক্ষ্ণ সংকেত দেয়, যেগুলো লক্ষ্য করলেই বোঝা যায় আপনার শরীর প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ বা প্রোটিন ঠিকমতো পাচ্ছে না-

ঘন ঘন ক্লান্তি ও শক্তি কমে যাওয়া

সবসময় দুর্বল লাগা বা অল্প কাজেই হাঁপিয়ে যাওয়া পুষ্টিহীনতার অন্যতম সাধারণ লক্ষণ। বিশেষ করে আয়রন, ভিটামিন বি-১২ বা ফোলেটের অভাবে শরীরে অক্সিজেন পরিবহন কমে যায়, ফলে সারাদিনই ক্লান্তি ভর করে।

চুল, ত্বক ও নখে পরিবর্তন

পুষ্টির অভাবে চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়া, চুল পড়া বেড়ে যাওয়া, ত্বক শুষ্ক বা নিস্তেজ হওয়া, এসব খুব পরিচিত লক্ষণ। বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাবে এসব দেখা দেয়। নখ ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া বা সহজে ভেঙে যাওয়া প্রোটিন, বায়োটিন বা জিঙ্কের ঘাটতির ইঙ্গিত দিতে পারে।

অতিরিক্ত চুল পড়াও পুষ্টির অভাবে হয়ে থাকে। ছবি: ফ্রিপিক
অতিরিক্ত চুল পড়াও পুষ্টির অভাবে হয়ে থাকে। ছবি: ফ্রিপিক

অল্পতেই মন খারাপ বা বিরক্তি

শরীরে কিছু ভিটামিন বিশেষ করে বি-কমপ্লেক্স ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড কম থাকলে মুড ওঠানামা বা মুড সুইং, মনোযোগ কমে যাওয়া বা সহজে রেগে যাওয়ার মতো মানসিক পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। শরীর ও মস্তিষ্কের রাসায়নিক ভারসাম্য ঠিক রাখতে পুষ্টি বড় ভূমিকা রাখে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া

সর্দি-কাশি ঘন ঘন হওয়া, ক্ষত শুকাতে সময় লাগা বা খুব সহজে সংক্রমণ হওয়া ইমিউন সিস্টেমের দুর্বলতার লক্ষণ। ভিটামিন সি, ডি, জিঙ্ক ও প্রোটিনের অভাবে এমনটা দেখা যেতে পারে।

ওজন হঠাৎ কমে যাওয়া বা বাড়া

দেহ প্রয়োজনীয় পুষ্টি না পেলে মেটাবলিজমের ভারসাম্য নষ্ট হয়। ফলে কেউ অজান্তেই ওজন হারায়, আবার কারো শরীরে পানি ধরে গিয়ে ওজন বাড়তে পারে।

হাড় ও মাংসপেশিতে ব্যথা

ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, ম্যাগনেশিয়ামের অভাবে হাড় ও মাংসপেশিতে ব্যথা, ক্র্যাম্প বা দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় এটি দীর্ঘমেয়াদি ঘাটতির ফল।

পুষ্টিহীনতার এসব লক্ষণ যদি নিয়মিত দেখা দেয়, তবে খাদ্যাভ্যাসে নজর দেওয়া জরুরি। প্রতিদিন ফল, শাকসবজি, আমিষ, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও যথেষ্ট পানি রাখলে ধীরে ধীরে শরীর তার ভারসাম্য ফিরে পায়। প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রুটিন চেকআপ বা রক্ত পরীক্ষা করাও ভালো। শরীর সংকেত দেয় শুধু সেগুলো শুনে নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

তথ্যসূত্র: এলজিআই হসপিটালের ওয়েবসাইট থেকে

সম্পর্কিত