চরচা ডেস্ক

রান্নাঘরের সব উপকরণগুলোর মধ্যে ‘ভোজ্য তেল’ নিয়ে বিতর্ক সবচেয়ে বেশি। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের মনে সবসময় একটিই প্রশ্ন ঘুরে-সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর তেল কোনটি? বিজ্ঞান এবং পুষ্টিবিজ্ঞানের সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, কোনো একটি তেলকে এককভাবে ‘সেরা’ বলা কঠিন, তবে গুণাগুণের বিচারে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে।
কেন অলিভ অয়েল সেরা?
হার্ভার্ড টি.এইচ. চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর দীর্ঘ ২৮ বছরের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন আধ চামচের বেশি অলিভ অয়েল গ্রহণ করেন, তাদের হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় ১৫ শতাংশ কম। অলিভ অয়েলের মূল শক্তি এর মনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (MUFA), বিশেষ করে ওলিক অ্যাসিড এবং এতে থাকা উচ্চমাত্রার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট (পলিফেনল)।

অলিভ অয়েল শরীরে প্রদাহ কমায় এবং ‘ভালো কোলেস্টেরল’ (HDL) বাড়িয়ে ‘খারাপ কোলেস্টেরল’ (LDL) কমাতে সাহায্য করে। তবে মনে রাখবেন, রান্নার জন্য 'এক্সট্রা ভার্জিন' সবচেয়ে কার্যকর, কারণ এটি পরিশোধিত করা হয় না বলে এর পুষ্টিগুণ অটুট থাকে।
অন্যান্য তেলের অবস্থান
অলিভ অয়েল ছাড়াও আরও কয়েকটি তেল নিয়ে বিজ্ঞানীরা ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেন–
অ্যাভোকাডো অয়েল
এর স্মোক পয়েন্ট অনেক বেশি। প্রায় ৫২০° ফারেনহাইট। তাই উচ্চতাপে ভাজাভুজির জন্য এটি অলিভ অয়েলের চেয়েও নিরাপদ। এটিও ওলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ।
সরিষার তেল
দক্ষিণ এশিয়ায় জনপ্রিয় এই তেলে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডের আদর্শ অনুপাত রয়েছে। হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য এটি বেশ উপকারী বলে অনেক গবেষণায় উঠে এসেছে।
নারিকেল তেল
এটি নিয়ে বিতর্ক আছে। এতে প্রচুর স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকলেও তা মূলত মিডিয়াম চেইন ট্রাইগ্লিসারাইড, যা দ্রুত শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। তবে হৃদরোগীদের ক্ষেত্রে এটি পরিমিত ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।
স্মোক পয়েন্ট এবং স্বাস্থ্যের যোগসূত্র
তেল নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা 'স্মোক পয়েন্ট'-কে গুরুত্ব দেন। তেল যখন নির্দিষ্ট তাপে ধোঁয়া ছাড়তে শুরু করে, তখন এর রাসায়নিক গঠন ভেঙে যায় এবং ক্ষতিকারক 'ফ্রি র্যাডিক্যালস' তৈরি হয়।

ভাজা বা উচ্চতাপে রান্নার জন্য উচ্চ স্মোক পয়েন্টের তেল (যেমন: অ্যাভোকাডো বা সরিষার তেল) ভালো। অন্যদিকে, সালাদ ড্রেসিং বা হালকা রান্নার জন্য অলিভ অয়েল অতুলনীয়।
কোনো তেলই অনিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যবহার করা স্বাস্থ্যকর নয়। তবে সামগ্রিক পুষ্টিগুণ, হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা এবং দীর্ঘায়ু লাভের ক্ষেত্রে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি প্রমাণিত। রান্নার ধরণ ভেদে অলিভ অয়েল এবং মাঝেমধ্যে সরিষার তেল বা অ্যাভোকাডো অয়েলের সমন্বয় হতে পারে আপনার জন্য আদর্শ। রিফাইন করা ভেজিটেবল অয়েল বা ট্রান্স-ফ্যাট যুক্ত ডালডা এড়িয়ে চলাই ভালো।
তথ্যসূত্র: আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইট, হেলথলাইন

রান্নাঘরের সব উপকরণগুলোর মধ্যে ‘ভোজ্য তেল’ নিয়ে বিতর্ক সবচেয়ে বেশি। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের মনে সবসময় একটিই প্রশ্ন ঘুরে-সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর তেল কোনটি? বিজ্ঞান এবং পুষ্টিবিজ্ঞানের সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, কোনো একটি তেলকে এককভাবে ‘সেরা’ বলা কঠিন, তবে গুণাগুণের বিচারে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে।
কেন অলিভ অয়েল সেরা?
হার্ভার্ড টি.এইচ. চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর দীর্ঘ ২৮ বছরের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন আধ চামচের বেশি অলিভ অয়েল গ্রহণ করেন, তাদের হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় ১৫ শতাংশ কম। অলিভ অয়েলের মূল শক্তি এর মনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (MUFA), বিশেষ করে ওলিক অ্যাসিড এবং এতে থাকা উচ্চমাত্রার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট (পলিফেনল)।

অলিভ অয়েল শরীরে প্রদাহ কমায় এবং ‘ভালো কোলেস্টেরল’ (HDL) বাড়িয়ে ‘খারাপ কোলেস্টেরল’ (LDL) কমাতে সাহায্য করে। তবে মনে রাখবেন, রান্নার জন্য 'এক্সট্রা ভার্জিন' সবচেয়ে কার্যকর, কারণ এটি পরিশোধিত করা হয় না বলে এর পুষ্টিগুণ অটুট থাকে।
অন্যান্য তেলের অবস্থান
অলিভ অয়েল ছাড়াও আরও কয়েকটি তেল নিয়ে বিজ্ঞানীরা ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেন–
অ্যাভোকাডো অয়েল
এর স্মোক পয়েন্ট অনেক বেশি। প্রায় ৫২০° ফারেনহাইট। তাই উচ্চতাপে ভাজাভুজির জন্য এটি অলিভ অয়েলের চেয়েও নিরাপদ। এটিও ওলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ।
সরিষার তেল
দক্ষিণ এশিয়ায় জনপ্রিয় এই তেলে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডের আদর্শ অনুপাত রয়েছে। হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য এটি বেশ উপকারী বলে অনেক গবেষণায় উঠে এসেছে।
নারিকেল তেল
এটি নিয়ে বিতর্ক আছে। এতে প্রচুর স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকলেও তা মূলত মিডিয়াম চেইন ট্রাইগ্লিসারাইড, যা দ্রুত শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। তবে হৃদরোগীদের ক্ষেত্রে এটি পরিমিত ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।
স্মোক পয়েন্ট এবং স্বাস্থ্যের যোগসূত্র
তেল নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা 'স্মোক পয়েন্ট'-কে গুরুত্ব দেন। তেল যখন নির্দিষ্ট তাপে ধোঁয়া ছাড়তে শুরু করে, তখন এর রাসায়নিক গঠন ভেঙে যায় এবং ক্ষতিকারক 'ফ্রি র্যাডিক্যালস' তৈরি হয়।

ভাজা বা উচ্চতাপে রান্নার জন্য উচ্চ স্মোক পয়েন্টের তেল (যেমন: অ্যাভোকাডো বা সরিষার তেল) ভালো। অন্যদিকে, সালাদ ড্রেসিং বা হালকা রান্নার জন্য অলিভ অয়েল অতুলনীয়।
কোনো তেলই অনিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যবহার করা স্বাস্থ্যকর নয়। তবে সামগ্রিক পুষ্টিগুণ, হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা এবং দীর্ঘায়ু লাভের ক্ষেত্রে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি প্রমাণিত। রান্নার ধরণ ভেদে অলিভ অয়েল এবং মাঝেমধ্যে সরিষার তেল বা অ্যাভোকাডো অয়েলের সমন্বয় হতে পারে আপনার জন্য আদর্শ। রিফাইন করা ভেজিটেবল অয়েল বা ট্রান্স-ফ্যাট যুক্ত ডালডা এড়িয়ে চলাই ভালো।
তথ্যসূত্র: আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইট, হেলথলাইন