চরচা ডেস্ক

ফুটবল, ক্রিকেট, বেসবল কিংবা বাস্কেটবল এ ধরনের খেলার ম্যাচ চলাকালীন একটি জিনিস প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়- অনেক খেলোয়াড় নিয়মিত চুইং গাম চিবোচ্ছে। যদিও একে একটি সাধারণ অভ্যাস বলে মনে হতে পারে, কিন্তু আদতে এই এক টুকরো চুইং গাম খেলোয়াড়দের ‘সাইলেন্ট সাপোর্টার’-এর কাজ করে। আর এর পেছনে রয়েছে বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক কারণ।
স্ট্রেস কমায় ও ফোকাস বাড়ায়
গবেষণায় দেখা গেছে, চুইং গাম চিবোলে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ কিছুটা বাড়ে, যা মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে। ম্যাচের চাপ, দর্শকের গর্জন, স্কোরের উত্তেজনা, সব মিলিয়ে অ্যাথলেটরা প্রচণ্ড স্ট্রেসের মধ্যে থাকে। গাম চিবোনোর ছন্দময় নড়াচড়া নার্ভাসনেস কমায় এবং মানসিক শান্তি দেয়। ফিটনেস কোচ গুরুজিৎ সিন্ধু দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, “চুইং গাম চিবোনোর সময় মস্তিষ্ক ধরে নেয় তারা এখন নিরাপদে আছে। কারণ এতে কর্টিসল অনেক কমে আসে”। তাই চুইং গাম চিবোনো খেলোয়াড়দের জন্য এক ধরনের ‘মাইক্রো-মেডিটেশন’, অল্প সময়েই মনকে শান্ত রাখার সহজ উপায়।
মুখ শুকিয়ে যাওয়া কমায়
দৌড়ানো, চিৎকার করা, শ্বাস-প্রশ্বাসের তীব্রতা, এসবের কারণে অনেক খেলোয়াড়ের মুখ শুকিয়ে যায়। এতে কথা বলতে, কোচের নির্দেশ শুনতে বা স্বাভাবিক শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে।
চুইং গাম লালার উৎপাদন বাড়ায়, যা মুখকে আর্দ্র রাখে এবং খেলোয়াড়কে স্বস্তি দেয়। বিশেষ করে ফুটবল বা ক্রিকেটারদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়, কারণ তারা দীর্ঘ সময় মাঠে থাকে।
অস্বস্তিকর অভ্যাস কমাতে সাহায্য করে
ম্যাচের চাপের সময় অনেক খেলোয়াড়দের মধ্যে নখ কামড়ানো, ঠোঁট কামড়ানো বা অজান্তে জার্সি টানা এই ধরনের অভ্যাস দেখা দেয়। চুইং গাম এসব আচরণ কমিয়ে মনকে কাজে ব্যস্ত রাখে। এটি অনেকটা ‘হ্যান্ড অ্যান্ড মাউথ অকুপেশন’ অর্থাৎ হাত ও মুখের ব্যস্ততা তৈরি করে মানসিক চাপ কমানো।
রিফ্লেক্স (প্রতিক্রিয়া) ও রিদম (ছন্দ) বজায় রাখে
কিছু বেসবল ও ফুটবল খেলোয়াড় বলেন, গাম চিবোলে তাদের শরীরের ছন্দ বজায় থাকে। এটি নড়াচড়া ও প্রতিক্রিয়া দ্রুত করতে সাহায্য করে। যেমন: বেসবলে ব্যাটসম্যানের দ্রুত রিফ্লেক্স খুব জরুরি। অনেক বিখ্যাত খেলোয়াড় মনে করেন গাম চিবোনো সেই তাল-মাত্রায় সাহায্য করে।
মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার সমস্যায় সহায়ক
খেলতে গিয়ে অনেক অ্যাথলেট মুখ দিয়ে দ্রুত শ্বাস নেয়, যা মুখ শুকানোর পাশাপাশি অস্বস্তি তৈরি করে। গাম চিবোনো তাদের নাক দিয়ে শ্বাস নিতে উৎসাহিত করে, যা বেশি স্বাস্থ্যকর ও দক্ষ।
এছাড়া গাম মুখের ভিতর রেখে শ্বাস নেওয়ার সময় জিহ্বার অবস্থান স্থির রাখে।
প্রচলিত রুটিন ও মানসিক সিগন্যাল
অনেক খেলোয়াড়ের জন্য চুইং গাম এক ধরনের ‘ম্যাচ মোড সিগন্যাল’। গাম চিবোনো মানে এখন মন সম্পূর্ণ খেলায়।
এটি রুটিনের অংশ হয়ে যায়। যেমন কেউ হাততালি দেয়, কেউ হেডফোনে গান শোনে, কেউ আবার গাম চাবায়। রুটিনগুলো মানসিকভাবে খেলোয়াড়কে প্রস্তুত করে।
কিছু খেলায় ঐতিহ্যের অংশ
বিশেষ করে বেসবলে এটি বহু দশকের সংস্কৃতি। একসময় খেলোয়াড়রা তামাক ব্যবহার করত, যা পরবর্তীতে নিষিদ্ধ হয়। সেই জায়গা দখল করে নেয় চুইং গাম। আজও গাম চিবোনো বেসবল মাঠের পরিচিত দৃশ্য।
চুইং গাম চিবোনো যদিও ছোট একটি অভ্যাস, তবে অ্যাথলেটদের জন্য এটি মানসিক শান্তি, মনোযোগ, মুখের আর্দ্রতা ও রুটিন শক্তিশালী করার মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সেই কারণেই মাঠে প্রায়ই দেখা যায়, খেলোয়াড়রা শান্তভাবে গাম চিবোতে চিবোতে ছুটে চলেছে, খেলছে, স্কোর করছে!
তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এমএসএন

ফুটবল, ক্রিকেট, বেসবল কিংবা বাস্কেটবল এ ধরনের খেলার ম্যাচ চলাকালীন একটি জিনিস প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়- অনেক খেলোয়াড় নিয়মিত চুইং গাম চিবোচ্ছে। যদিও একে একটি সাধারণ অভ্যাস বলে মনে হতে পারে, কিন্তু আদতে এই এক টুকরো চুইং গাম খেলোয়াড়দের ‘সাইলেন্ট সাপোর্টার’-এর কাজ করে। আর এর পেছনে রয়েছে বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক কারণ।
স্ট্রেস কমায় ও ফোকাস বাড়ায়
গবেষণায় দেখা গেছে, চুইং গাম চিবোলে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ কিছুটা বাড়ে, যা মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে। ম্যাচের চাপ, দর্শকের গর্জন, স্কোরের উত্তেজনা, সব মিলিয়ে অ্যাথলেটরা প্রচণ্ড স্ট্রেসের মধ্যে থাকে। গাম চিবোনোর ছন্দময় নড়াচড়া নার্ভাসনেস কমায় এবং মানসিক শান্তি দেয়। ফিটনেস কোচ গুরুজিৎ সিন্ধু দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, “চুইং গাম চিবোনোর সময় মস্তিষ্ক ধরে নেয় তারা এখন নিরাপদে আছে। কারণ এতে কর্টিসল অনেক কমে আসে”। তাই চুইং গাম চিবোনো খেলোয়াড়দের জন্য এক ধরনের ‘মাইক্রো-মেডিটেশন’, অল্প সময়েই মনকে শান্ত রাখার সহজ উপায়।
মুখ শুকিয়ে যাওয়া কমায়
দৌড়ানো, চিৎকার করা, শ্বাস-প্রশ্বাসের তীব্রতা, এসবের কারণে অনেক খেলোয়াড়ের মুখ শুকিয়ে যায়। এতে কথা বলতে, কোচের নির্দেশ শুনতে বা স্বাভাবিক শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে।
চুইং গাম লালার উৎপাদন বাড়ায়, যা মুখকে আর্দ্র রাখে এবং খেলোয়াড়কে স্বস্তি দেয়। বিশেষ করে ফুটবল বা ক্রিকেটারদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়, কারণ তারা দীর্ঘ সময় মাঠে থাকে।
অস্বস্তিকর অভ্যাস কমাতে সাহায্য করে
ম্যাচের চাপের সময় অনেক খেলোয়াড়দের মধ্যে নখ কামড়ানো, ঠোঁট কামড়ানো বা অজান্তে জার্সি টানা এই ধরনের অভ্যাস দেখা দেয়। চুইং গাম এসব আচরণ কমিয়ে মনকে কাজে ব্যস্ত রাখে। এটি অনেকটা ‘হ্যান্ড অ্যান্ড মাউথ অকুপেশন’ অর্থাৎ হাত ও মুখের ব্যস্ততা তৈরি করে মানসিক চাপ কমানো।
রিফ্লেক্স (প্রতিক্রিয়া) ও রিদম (ছন্দ) বজায় রাখে
কিছু বেসবল ও ফুটবল খেলোয়াড় বলেন, গাম চিবোলে তাদের শরীরের ছন্দ বজায় থাকে। এটি নড়াচড়া ও প্রতিক্রিয়া দ্রুত করতে সাহায্য করে। যেমন: বেসবলে ব্যাটসম্যানের দ্রুত রিফ্লেক্স খুব জরুরি। অনেক বিখ্যাত খেলোয়াড় মনে করেন গাম চিবোনো সেই তাল-মাত্রায় সাহায্য করে।
মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার সমস্যায় সহায়ক
খেলতে গিয়ে অনেক অ্যাথলেট মুখ দিয়ে দ্রুত শ্বাস নেয়, যা মুখ শুকানোর পাশাপাশি অস্বস্তি তৈরি করে। গাম চিবোনো তাদের নাক দিয়ে শ্বাস নিতে উৎসাহিত করে, যা বেশি স্বাস্থ্যকর ও দক্ষ।
এছাড়া গাম মুখের ভিতর রেখে শ্বাস নেওয়ার সময় জিহ্বার অবস্থান স্থির রাখে।
প্রচলিত রুটিন ও মানসিক সিগন্যাল
অনেক খেলোয়াড়ের জন্য চুইং গাম এক ধরনের ‘ম্যাচ মোড সিগন্যাল’। গাম চিবোনো মানে এখন মন সম্পূর্ণ খেলায়।
এটি রুটিনের অংশ হয়ে যায়। যেমন কেউ হাততালি দেয়, কেউ হেডফোনে গান শোনে, কেউ আবার গাম চাবায়। রুটিনগুলো মানসিকভাবে খেলোয়াড়কে প্রস্তুত করে।
কিছু খেলায় ঐতিহ্যের অংশ
বিশেষ করে বেসবলে এটি বহু দশকের সংস্কৃতি। একসময় খেলোয়াড়রা তামাক ব্যবহার করত, যা পরবর্তীতে নিষিদ্ধ হয়। সেই জায়গা দখল করে নেয় চুইং গাম। আজও গাম চিবোনো বেসবল মাঠের পরিচিত দৃশ্য।
চুইং গাম চিবোনো যদিও ছোট একটি অভ্যাস, তবে অ্যাথলেটদের জন্য এটি মানসিক শান্তি, মনোযোগ, মুখের আর্দ্রতা ও রুটিন শক্তিশালী করার মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সেই কারণেই মাঠে প্রায়ই দেখা যায়, খেলোয়াড়রা শান্তভাবে গাম চিবোতে চিবোতে ছুটে চলেছে, খেলছে, স্কোর করছে!
তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এমএসএন