চরচা ডেস্ক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান এবং তাকে প্রত্যর্পণের দাবি নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। তবে সম্প্রতি এই সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দিকে হাঁটছে প্রতিবেশী দেশ দুটি। এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা তেমন ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেও মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবর বলছে, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর এটি ছিল দুই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ-পর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠক।
এই বৈঠককে অন্তর্বর্তী সরকারকে ভারতের ‘পূর্ণ সমর্থনের’ ইঙ্গিত এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা। বিশেষ করে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় ঘোষণার পর। হংকংভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হচ্ছে।
প্রতিবেদন বলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন এটিকে ‘দিল্লির ইতিবাচক সংকেত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি সতর্ক করে এটাও বলেছেন যে, ‘‘আস্থা পুনরুদ্ধার সহজে এবং অবিলম্বে ঘটবে না। কারণ, ভারত মূলত আঞ্চলিক ফোরামে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের মাধ্যমে তার কৌশলগত স্বার্থ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দিকে মনোযোগ দেবে।’’
এদিকে সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া তার আরোগ্যের জন্য ভারতের সমর্থনের প্রস্তাব দিয়ে একটি বার্তাও পাঠিয়েছেন মোদি।
বিশ্লেষকেরা এটিকে ‘সদিচ্ছার নিদর্শন’ হিসেবে দেখছেন। খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে মোদির এই বার্তাটি রাজনীতির একটি ‘নতুন চাল’ বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে ইয়াসমিনের মতে, এই বার্তাটির অর্থ এই নয় যে, দিল্লির নীতিতে স্থায়ী পরিবর্তন এসেছে বা শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ থেকে ভারত সমর্থন প্রত্যাহার করেছে। এটি ভিন্নও হতে পারে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় পূর্ণ সহায়তার কথা বলেছে চীন। পাঠানো হয়েছে চিকিৎসক দলও। এ জন্য ভারত হয়তো চীনের সমতুল্য হতেই এমন সমর্থনের হাত বাড়িয়েছে বিএনপির দিকে।
সিডনির ইউনাইটেড স্টেটস স্টাডিজ সেন্টারের ফেলো রুশালি সাহা বলছেন, ‘‘ভারতের বাংলাদেশ নীতি দীর্ঘকাল ধরে আওয়ামী লীগকে কেন্দ্র করে থাকলেও তারা জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গেও যোগাযোগ বজায় রেখেছে।’’
রুশালি সাহা মনে করেন আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে তা দিল্লির জন্য সবচেয়ে ভালো হবে। এ ছাড়া মোদির এই পদক্ষেপ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনর্গঠনের দ্বার উন্মুক্ত করতে পারে। ২০১৫ সালে নরেন্দ্র মোদি ও খালেদা জিয়ার মধ্যকার একটি বৈঠকের কথাও উল্লেখ করেন রুশালি সাহা।
বিএনপি শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য চাপ দিলেও দলটির সিনিয়র নেতারা ভারতকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছেন যে, তারা বাংলাদেশকে ভারত-বিরোধী শক্তিগুলোর ঘাঁটি হতে দেবেন না। বিশেষ করে আরেক রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে এখন ‘সবচেয়ে খারাপ সম্পর্ক’ বিএনপির। ভারতও এটাই চাইছে হয়তো।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসুক–এটা দিল্লি কখনোই চাইবে না। এ কারণে বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে তাদের।
এমন হলে শেখ হাসিনার কী হবে?
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সম্প্রতি প্রকাশ্যে বলেছেন, শেখ হাসিনা ভারতে থাকবেন কি না, সেই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ তার নিজস্ব। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জয়শঙ্করের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্ভবত হাসিনার প্রত্যর্পণের সংবেদনশীল বিষয়টিকে বাংলাদেশের নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার প্রচেষ্টা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাইছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ভোট। এমন সময়ে শেখ হাসিনা ইস্যু হয়ে উঠতে পারে ভোটের মাঠের ‘তুরুপের তাস’। তাকে ভারত থেকে দেশে এনে শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন কেউ কেউ। আবার কোনো দল এ বিষয়টি নিয়ে কিছুই হয়তো বলতে চাইবে না।
মোদ্দাকথা, এটি রাজনৈতিক একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। সেক্ষেত্রে ভারতের অবস্থানও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভারত হয়তো চাইবে বিএনপি ক্ষমতায় আসুক। সেক্ষেত্রে বিএনপির সঙ্গে তাদের কী আলাপ হচ্ছে, সেটিই এখন মুখ্য ব্যাপার। আর সেখানে শেখ হাসিনা ইস্যু আসবেই।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের বিশ্লেষক মারিয়া সিওউ মনে করছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়কালে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ছাড়া আর কিছুই গ্রহণ করার সম্ভাবনা কম। তবে নয়াদিল্লি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে ও যাবে। তার মতে, পরিস্থিতি থেকে সবচেয়ে বেশি সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করবে ভারত।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান এবং তাকে প্রত্যর্পণের দাবি নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। তবে সম্প্রতি এই সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দিকে হাঁটছে প্রতিবেশী দেশ দুটি। এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা তেমন ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেও মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবর বলছে, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর এটি ছিল দুই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ-পর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠক।
এই বৈঠককে অন্তর্বর্তী সরকারকে ভারতের ‘পূর্ণ সমর্থনের’ ইঙ্গিত এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা। বিশেষ করে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় ঘোষণার পর। হংকংভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হচ্ছে।
প্রতিবেদন বলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন এটিকে ‘দিল্লির ইতিবাচক সংকেত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি সতর্ক করে এটাও বলেছেন যে, ‘‘আস্থা পুনরুদ্ধার সহজে এবং অবিলম্বে ঘটবে না। কারণ, ভারত মূলত আঞ্চলিক ফোরামে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের মাধ্যমে তার কৌশলগত স্বার্থ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দিকে মনোযোগ দেবে।’’
এদিকে সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া তার আরোগ্যের জন্য ভারতের সমর্থনের প্রস্তাব দিয়ে একটি বার্তাও পাঠিয়েছেন মোদি।
বিশ্লেষকেরা এটিকে ‘সদিচ্ছার নিদর্শন’ হিসেবে দেখছেন। খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে মোদির এই বার্তাটি রাজনীতির একটি ‘নতুন চাল’ বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে ইয়াসমিনের মতে, এই বার্তাটির অর্থ এই নয় যে, দিল্লির নীতিতে স্থায়ী পরিবর্তন এসেছে বা শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ থেকে ভারত সমর্থন প্রত্যাহার করেছে। এটি ভিন্নও হতে পারে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় পূর্ণ সহায়তার কথা বলেছে চীন। পাঠানো হয়েছে চিকিৎসক দলও। এ জন্য ভারত হয়তো চীনের সমতুল্য হতেই এমন সমর্থনের হাত বাড়িয়েছে বিএনপির দিকে।
সিডনির ইউনাইটেড স্টেটস স্টাডিজ সেন্টারের ফেলো রুশালি সাহা বলছেন, ‘‘ভারতের বাংলাদেশ নীতি দীর্ঘকাল ধরে আওয়ামী লীগকে কেন্দ্র করে থাকলেও তারা জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গেও যোগাযোগ বজায় রেখেছে।’’
রুশালি সাহা মনে করেন আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে তা দিল্লির জন্য সবচেয়ে ভালো হবে। এ ছাড়া মোদির এই পদক্ষেপ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনর্গঠনের দ্বার উন্মুক্ত করতে পারে। ২০১৫ সালে নরেন্দ্র মোদি ও খালেদা জিয়ার মধ্যকার একটি বৈঠকের কথাও উল্লেখ করেন রুশালি সাহা।
বিএনপি শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য চাপ দিলেও দলটির সিনিয়র নেতারা ভারতকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছেন যে, তারা বাংলাদেশকে ভারত-বিরোধী শক্তিগুলোর ঘাঁটি হতে দেবেন না। বিশেষ করে আরেক রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে এখন ‘সবচেয়ে খারাপ সম্পর্ক’ বিএনপির। ভারতও এটাই চাইছে হয়তো।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসুক–এটা দিল্লি কখনোই চাইবে না। এ কারণে বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে তাদের।
এমন হলে শেখ হাসিনার কী হবে?
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সম্প্রতি প্রকাশ্যে বলেছেন, শেখ হাসিনা ভারতে থাকবেন কি না, সেই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ তার নিজস্ব। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জয়শঙ্করের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্ভবত হাসিনার প্রত্যর্পণের সংবেদনশীল বিষয়টিকে বাংলাদেশের নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার প্রচেষ্টা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাইছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ভোট। এমন সময়ে শেখ হাসিনা ইস্যু হয়ে উঠতে পারে ভোটের মাঠের ‘তুরুপের তাস’। তাকে ভারত থেকে দেশে এনে শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন কেউ কেউ। আবার কোনো দল এ বিষয়টি নিয়ে কিছুই হয়তো বলতে চাইবে না।
মোদ্দাকথা, এটি রাজনৈতিক একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। সেক্ষেত্রে ভারতের অবস্থানও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভারত হয়তো চাইবে বিএনপি ক্ষমতায় আসুক। সেক্ষেত্রে বিএনপির সঙ্গে তাদের কী আলাপ হচ্ছে, সেটিই এখন মুখ্য ব্যাপার। আর সেখানে শেখ হাসিনা ইস্যু আসবেই।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের বিশ্লেষক মারিয়া সিওউ মনে করছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়কালে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ছাড়া আর কিছুই গ্রহণ করার সম্ভাবনা কম। তবে নয়াদিল্লি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে ও যাবে। তার মতে, পরিস্থিতি থেকে সবচেয়ে বেশি সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করবে ভারত।