বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরমাণু কেন্দ্র চালু করতে ভোট হবে জাপানে

চরচা ডেস্ক
চরচা ডেস্ক
বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরমাণু কেন্দ্র চালু করতে ভোট হবে জাপানে
জাপানের কাশিওয়াজাকিতে অবস্থিত পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫, ৬ এবং ৭ নম্বর চুল্লি । ছবি: রয়টার্স

বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কাশিওয়াজাকি কারিওয়া আংশিকভাবে পুনরায় চালু করা হবে কি না, সে বিষয়ে ভোট করতে যাচ্ছে জাপানে নিগাতার আইনসভা। আগামী ২২ ডিসেম্বর এই ভোট হবে।

আজ মঙ্গলবার থেকে বছরের শেষ অধিবেশন শুরু হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

১ হাজার ৩৫৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৬ নম্বর ইউনিট জানুয়ারিতে চালুর পরিকল্পনা নিয়েই এই ভোট শুরু হবে। এটি টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি (টেপকো) পরিচালিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।

২০১১ সালে ফুকুশিমায় ভূমিকম্প ও সুনামিতে চুল্লি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সারা দেশে ৫৪টি পারমাণবিক রিয়্যাক্টর বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন থেকে জাপান জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। বর্তমানে দেশের বিদ্যুতের প্রায় ৬০–৭০ শতাংশ আমদানিনির্ভর জ্বালানি থেকে আসে।

প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি জ্বালানি নিরাপত্তা বাড়াতে এবং আমদানির খরচ কমাতে আরও পারমাণবিক কেন্দ্র চালুর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

টেপকোর প্রেসিডেন্ট তোমিয়াকি কোবায়াকাওয়া বলেন, ‘’জাপানের সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদের কারণে টেকসই জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারমাণবিক শক্তি গুরুত্বপূর্ণ।‘’ নিরাপত্তা জোরদারে প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত মহড়া ও আধুনিকীকরণ করছে বলেও তিনি জানান। সফররত ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের তিনি এসব উন্নয়ন দেখান।

তবে স্থানীয়দের শঙ্কা একেবারে কাটেনি। কাশিওয়াজাকি সিটি অ্যাসেম্বলির সদস্য ইউকিহিকো হোশিনো বলেন, ‘’মানুষের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের জায়গা হলো, দুর্ঘটনা হলে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে কি না। এখনো ফুকুশিমার আশপাশে এমন অনেক পরিবার আছে, যারা ঘরে ফিরতে পারেনি।‘’

বর্তমানে দেশের ৩৩টি রিয়্যাক্টরের মধ্যে ১৪টি চালু আছে। টেপকো জানায়, সবুজ সংকেত মিললে ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে ১ হাজার ৩৫৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার ইউনিট ৬ চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এতে টোকিও অঞ্চল এককভাবে ২ শতাংশ অতিরিক্ত বিদ্যুৎ পাবে, যা জাপানের বাড়তে থাকা বিদ্যুৎচাহিদা মেটাতে ভূমিকা রাখবে। এর পাশাপাশি ইউনিট ৭ পুনরায় চালুর পরিকল্পনাও আছে , আর বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেওয়ার সম্ভাবনা আছে।

দেশজুড়ে ডেটা সেন্টার ও এআই–নির্ভর শিল্প বাড়ায় বিদ্যুৎচাহিদা দ্রুত বাড়ছে। তাই বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক কেন্দ্র আংশিকভাবে চালুর সিদ্ধান্তকে জাপানের জ্বালানি ভবিষ্যতের বড় মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সম্পর্কিত