ফজলে রাব্বি

রাজধানীতে গ্যাস সংকট তীব্র আকার ধারণ করলেও নেই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ। শীত মৌসুমে রাজধানীবাসীর ভোগান্তি বেড়েছে আগের চেয়ে বেশি। সরবরাহ প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি বলছে, গ্যাসের ঘাটতি থাকায় আপাতত তাদের কিছুই করার নেই। অর্থাৎ, রাজধানীবাসীকে এই সংকটের মধ্যেই চলতে হবে। আর বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) আবারও শোনাল উদ্যোগের কথা।
গ্রাহকদের অভিযোগ
বহু বছর ধরে পুরান ঢাকা, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়াসহ শহরের বড় সংখ্যার মানুষ দিনের অধিকাংশ সময় গ্যাস সংকটের মধ্যে দিয়ে দিন যাপন করেন। কিন্তু এখন চুলা যেন একেবারেই জ্বলছে না বলে অভিযোগ তাদের। নিয়মিত গ্যাসের দাবিতে দুদিন আগে সোমবার রাস্তায় নামে শনির আখড়া এলাকার মানুষ। গ্যাসের দাবিতে তিন ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের শেখদী এলাকার মানুষ সংবাদ সম্মেলন করে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এদিকে গ্যাস নিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রাজধানীর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত ধানমন্ডির বাসিন্দাদের। এছাড়া মোহাম্মদপুর, সোবহানবাগ, রায়েরবাজার, ভুতের গলি, ইস্কাটন, রামপুরা, হাতিরঝিল, কাজীপাড়া, দক্ষিণখানসহ অনেক এলাকার গ্রাহক। তাদের অভিযোগ, এ বছর শীত শুরুর অনেক আগে থেকেই দিনের বেশিরভাগ সময় গ্যাস না থাকায় রান্নাসহ দৈনন্দিন কাজে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা সায়মা হোসেন চরচাকে বলেন, “গত বছর শীতেও গ্যাস পেয়েছি। কিন্তু এবার শীত শুরুর আগেই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চাপ থাকে না বললেই চলে।”
তিতাসের অনেক গ্রাহকই এ বছর গ্যাস সংকটের অভিযোগ করছেন শীত আসার আগে থেকে। শুধু বাসা-বাড়িতে নয় সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতেও গ্যাসের সংকট চলছে অনেক দিন ধরে।
আসাদগেটে সোনার বাংলা সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে গ্যাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা গাড়ির মালিক শরীফ শিবলী চরচাকে বলেন, “আগে যেখানে ৬০০ টাকার গ্যাস ভরা যেত, গ্যাসের চাপ না থাকায় ৩০০ টাকার বেশি গ্যাস রিফিল করা যাচ্ছে না।”
বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ফারহান নূর বলেন, “চুক্তি অনুযায়ী ১৫ পিএসআই গ্যাস সরবরাহ করার কথা। কিন্তু অনেক বছর ধরেই তা দেওয়া হচ্ছে না। আগে ৫ থেকে ৭ পিএসআই গ্যাসের চাপ পেতাম। এখন দিনে অনেক ফিলিং স্টশনে ২ থেকে ৩ পিএসআইয়ের ওপর উঠছেই না। যাত্রাবাড়ি ও মিরপুরে অনেক স্টেশন দিনের বেলা গ্যাস পাচ্ছেই না।”
এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগের পরও সমাধান না হওয়ায় হতাশাও প্রকাশ করেন এই ব্যবসায়ী।

শিল্পের কী অবস্থা
গ্যাসের অভাবে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানও বন্ধের উপক্রম। শিল্প উদ্যোক্তারা জানান, গ্যাস সংকটের কারণে শিল্পে নতুন সংযোগ বন্ধ আছে। এতে বিনিয়োগও থেমে আছে। বাড়ছে না নতুন কর্মসংস্থান। কারখানায় গ্যাসের চাপ ১৫ পিএসআই থাকার কথা। কিন্তু এখন পাওয়া যাচ্ছে ৩ থেকে ৫ পিএসআই। সিএনজি, এলপিজি ও ডিজেল দিয়ে উৎপাদন ধরে রাখতে গিয়ে মালিকদের অনেকে হিমশিম খাচ্ছেন।
নিট পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম চরচাকে বলেন, “আগের চেয়ে অবস্থার সামান্য উন্নতি হলেও গ্যাস সংকটে শিল্প মালিকদের দুর্ভোগের সমাধান হয়নি। এখনো প্রায় সময়ই শিল্পাঞ্চলে গ্যাসের চাপ থাকে না। ১৫ পিএসআই চাপ পাওয়ার কথা থাকলেও আমরা তিন থেকে চার পিএসআই চাপ পাই। এখন ৩৩ শতাংশ গ্যাস পাচ্ছি। যে পরিমাণ উৎপাদন হওয়ার কথা ছিল তা হচ্ছে না। এতে প্রতিনিয়ত আমরা ক্ষতির মুখে পড়ছি।”
এই ব্যবসায়ী নেতা আরও বলেন, “একটি কারখানার সক্ষমতার ৮০ শতাংশ উৎপাদন যদি করতে না পারি তাহলে শিল্প মালিকদের ক্ষতি হয়। এ কারণে এরই মধ্যে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে পড়েছে। আরও অনেকগুলো বন্ধ হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে আছে।”
কী বলছে কর্তৃপক্ষ
গ্যাস সংকটের বিষয়ে তিতাস গ্যাসের পরিচালক (অপারেশন্স) সাইদুল হাসান চরচাকে বলেন, চাহিদার চেয়ে সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট কম গ্যাস পচ্ছেন তারা। প্রতিদিন তিতাসের চাহিদা ১ হাজার ৯৫০ মিলিয়ন ঘনফুটের বিপরীতে তারা গ্যাস পাচ্ছেন ১৫শ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো।
সরকারের নির্দশনা অনুযায়ী বিদ্যুৎ, শিল্প ও সারে অগ্রাধিকারভিত্তিতে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। জানিয়ে তিতাসের এই পরিচালক বলেন, “এ অবস্থায় বাসা-বাড়ি কিংবা সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস সরবরাহে ঘাটতির বিষয়ে কিছু করার নাই। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ পেলে তিতাস সব গ্রাহকের কাছে গ্যাস দিতে পারবে।”
গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ২০২৫ সালে রেকর্ড পরিমাণ এলএনজি আমদানি করে বাংলাদেশ। জানুয়ারি থেকে আগস্টের মধ্যে স্পট মার্কেট থেকে ৩৫টি এলএনজি কার্গো আমদানি করা হয়। যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২১টি। শুধু আগস্টেই তিন হাজার ৪২৭ এমএমসিএফ এলএনজি ক্রয় করা হয়েছে। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৭ শতাংশ বেশি।
গ্যাস ঘাটতিতে যখন মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে তখন বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) আবারও পরিকল্পনার কথা শুনিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইনস) প্রকৌশলী মো. রফিকুল চরচাকে বলেন, “২০২৬ সালে ১১৫ কার্গো এলএনজি আনার পরিকল্পনা আছে। প্রতি বছর ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট করে প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন কমছে। ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস হচ্ছে ২৪ কার্গো এলএনজির সমান। চাহিদা অনুযায়ী আমাদের প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ দিনদিন কমছে। আর এ কারণে প্রতি বছর এলএনজি আমদানির পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থনীতির ওপরও চাপ পড়ছে।”
তবে পরিস্থিতির উন্নয়নে গ্যাস অনুসন্ধানে নানামূখী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
চাহিদার বিপরীতে ঘাটতি কত
পেট্রোবাংলার হিসাবে বর্তমানে গড়ে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৩৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর বিপরীতে সরবরাহ হচ্ছে ২৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে দেশীয় খনিগুলো দৈনিক ১৮৫০ মিলিয়ন ঘনফুট এবং আমদানি করা এলএনজি থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে ১০৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। এতে প্রতিদিন অন্তত ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে শিল্প-কল-কারখানা এবং দৈনন্দিন নাগরিক জীবনে।

রাজধানীতে গ্যাস সংকট তীব্র আকার ধারণ করলেও নেই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ। শীত মৌসুমে রাজধানীবাসীর ভোগান্তি বেড়েছে আগের চেয়ে বেশি। সরবরাহ প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি বলছে, গ্যাসের ঘাটতি থাকায় আপাতত তাদের কিছুই করার নেই। অর্থাৎ, রাজধানীবাসীকে এই সংকটের মধ্যেই চলতে হবে। আর বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) আবারও শোনাল উদ্যোগের কথা।
গ্রাহকদের অভিযোগ
বহু বছর ধরে পুরান ঢাকা, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়াসহ শহরের বড় সংখ্যার মানুষ দিনের অধিকাংশ সময় গ্যাস সংকটের মধ্যে দিয়ে দিন যাপন করেন। কিন্তু এখন চুলা যেন একেবারেই জ্বলছে না বলে অভিযোগ তাদের। নিয়মিত গ্যাসের দাবিতে দুদিন আগে সোমবার রাস্তায় নামে শনির আখড়া এলাকার মানুষ। গ্যাসের দাবিতে তিন ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের শেখদী এলাকার মানুষ সংবাদ সম্মেলন করে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এদিকে গ্যাস নিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রাজধানীর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত ধানমন্ডির বাসিন্দাদের। এছাড়া মোহাম্মদপুর, সোবহানবাগ, রায়েরবাজার, ভুতের গলি, ইস্কাটন, রামপুরা, হাতিরঝিল, কাজীপাড়া, দক্ষিণখানসহ অনেক এলাকার গ্রাহক। তাদের অভিযোগ, এ বছর শীত শুরুর অনেক আগে থেকেই দিনের বেশিরভাগ সময় গ্যাস না থাকায় রান্নাসহ দৈনন্দিন কাজে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা সায়মা হোসেন চরচাকে বলেন, “গত বছর শীতেও গ্যাস পেয়েছি। কিন্তু এবার শীত শুরুর আগেই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চাপ থাকে না বললেই চলে।”
তিতাসের অনেক গ্রাহকই এ বছর গ্যাস সংকটের অভিযোগ করছেন শীত আসার আগে থেকে। শুধু বাসা-বাড়িতে নয় সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতেও গ্যাসের সংকট চলছে অনেক দিন ধরে।
আসাদগেটে সোনার বাংলা সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে গ্যাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা গাড়ির মালিক শরীফ শিবলী চরচাকে বলেন, “আগে যেখানে ৬০০ টাকার গ্যাস ভরা যেত, গ্যাসের চাপ না থাকায় ৩০০ টাকার বেশি গ্যাস রিফিল করা যাচ্ছে না।”
বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ফারহান নূর বলেন, “চুক্তি অনুযায়ী ১৫ পিএসআই গ্যাস সরবরাহ করার কথা। কিন্তু অনেক বছর ধরেই তা দেওয়া হচ্ছে না। আগে ৫ থেকে ৭ পিএসআই গ্যাসের চাপ পেতাম। এখন দিনে অনেক ফিলিং স্টশনে ২ থেকে ৩ পিএসআইয়ের ওপর উঠছেই না। যাত্রাবাড়ি ও মিরপুরে অনেক স্টেশন দিনের বেলা গ্যাস পাচ্ছেই না।”
এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগের পরও সমাধান না হওয়ায় হতাশাও প্রকাশ করেন এই ব্যবসায়ী।

শিল্পের কী অবস্থা
গ্যাসের অভাবে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানও বন্ধের উপক্রম। শিল্প উদ্যোক্তারা জানান, গ্যাস সংকটের কারণে শিল্পে নতুন সংযোগ বন্ধ আছে। এতে বিনিয়োগও থেমে আছে। বাড়ছে না নতুন কর্মসংস্থান। কারখানায় গ্যাসের চাপ ১৫ পিএসআই থাকার কথা। কিন্তু এখন পাওয়া যাচ্ছে ৩ থেকে ৫ পিএসআই। সিএনজি, এলপিজি ও ডিজেল দিয়ে উৎপাদন ধরে রাখতে গিয়ে মালিকদের অনেকে হিমশিম খাচ্ছেন।
নিট পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম চরচাকে বলেন, “আগের চেয়ে অবস্থার সামান্য উন্নতি হলেও গ্যাস সংকটে শিল্প মালিকদের দুর্ভোগের সমাধান হয়নি। এখনো প্রায় সময়ই শিল্পাঞ্চলে গ্যাসের চাপ থাকে না। ১৫ পিএসআই চাপ পাওয়ার কথা থাকলেও আমরা তিন থেকে চার পিএসআই চাপ পাই। এখন ৩৩ শতাংশ গ্যাস পাচ্ছি। যে পরিমাণ উৎপাদন হওয়ার কথা ছিল তা হচ্ছে না। এতে প্রতিনিয়ত আমরা ক্ষতির মুখে পড়ছি।”
এই ব্যবসায়ী নেতা আরও বলেন, “একটি কারখানার সক্ষমতার ৮০ শতাংশ উৎপাদন যদি করতে না পারি তাহলে শিল্প মালিকদের ক্ষতি হয়। এ কারণে এরই মধ্যে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে পড়েছে। আরও অনেকগুলো বন্ধ হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে আছে।”
কী বলছে কর্তৃপক্ষ
গ্যাস সংকটের বিষয়ে তিতাস গ্যাসের পরিচালক (অপারেশন্স) সাইদুল হাসান চরচাকে বলেন, চাহিদার চেয়ে সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট কম গ্যাস পচ্ছেন তারা। প্রতিদিন তিতাসের চাহিদা ১ হাজার ৯৫০ মিলিয়ন ঘনফুটের বিপরীতে তারা গ্যাস পাচ্ছেন ১৫শ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো।
সরকারের নির্দশনা অনুযায়ী বিদ্যুৎ, শিল্প ও সারে অগ্রাধিকারভিত্তিতে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। জানিয়ে তিতাসের এই পরিচালক বলেন, “এ অবস্থায় বাসা-বাড়ি কিংবা সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস সরবরাহে ঘাটতির বিষয়ে কিছু করার নাই। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ পেলে তিতাস সব গ্রাহকের কাছে গ্যাস দিতে পারবে।”
গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ২০২৫ সালে রেকর্ড পরিমাণ এলএনজি আমদানি করে বাংলাদেশ। জানুয়ারি থেকে আগস্টের মধ্যে স্পট মার্কেট থেকে ৩৫টি এলএনজি কার্গো আমদানি করা হয়। যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২১টি। শুধু আগস্টেই তিন হাজার ৪২৭ এমএমসিএফ এলএনজি ক্রয় করা হয়েছে। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৭ শতাংশ বেশি।
গ্যাস ঘাটতিতে যখন মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে তখন বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) আবারও পরিকল্পনার কথা শুনিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইনস) প্রকৌশলী মো. রফিকুল চরচাকে বলেন, “২০২৬ সালে ১১৫ কার্গো এলএনজি আনার পরিকল্পনা আছে। প্রতি বছর ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট করে প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন কমছে। ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস হচ্ছে ২৪ কার্গো এলএনজির সমান। চাহিদা অনুযায়ী আমাদের প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ দিনদিন কমছে। আর এ কারণে প্রতি বছর এলএনজি আমদানির পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থনীতির ওপরও চাপ পড়ছে।”
তবে পরিস্থিতির উন্নয়নে গ্যাস অনুসন্ধানে নানামূখী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
চাহিদার বিপরীতে ঘাটতি কত
পেট্রোবাংলার হিসাবে বর্তমানে গড়ে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৩৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর বিপরীতে সরবরাহ হচ্ছে ২৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে দেশীয় খনিগুলো দৈনিক ১৮৫০ মিলিয়ন ঘনফুট এবং আমদানি করা এলএনজি থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে ১০৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। এতে প্রতিদিন অন্তত ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে শিল্প-কল-কারখানা এবং দৈনন্দিন নাগরিক জীবনে।