যে ৪টি শখ আপনার মস্তিষ্কের বয়স বাড়তে দেবে না

চরচা ডেস্ক
চরচা ডেস্ক
যে ৪টি শখ আপনার মস্তিষ্কের বয়স বাড়তে দেবে না
যেকোনো ধরনের বই পড়ার সময় মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ একসঙ্গে কাজ করে। ছবি: ফ্রিপিক

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের পাশাপাশি মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। সেটা খুবই স্বাভাবিক। তবে সুখবর হলো, কিছু শখ বা অভ্যাস নিয়মিত থাকলে মস্তিষ্ককে অনেকটাই তরুণ ও সক্রিয় রাখা সম্ভব। গবেষণায় দেখা গেছে, মানসিকভাবে উদ্দীপক কাজ মস্তিষ্কের নিউরনের মধ্যে নতুন সংযোগ তৈরি করে, স্মৃতিশক্তি ও চিন্তাশক্তি বাড়ায়। চলুন এমন ৪টি শখ সম্পর্কে জেনে নিই, যেগুলো মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে এর বয়স দীর্ঘ সময় ধরে বাড়তে দেয় না-

বই পড়া ও নিয়মিত লেখা

বই পড়া শুধু জ্ঞান বাড়ায় না, মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখার অন্যতম কার্যকর উপায় এটি। গল্প, উপন্যাস বা নন-ফিকশন কিংবা যেকোনো ধরনের বই পড়ার সময়ই মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ একসঙ্গে কাজ করে। এতে ভাষা দক্ষতা, কল্পনাশক্তি ও মনোযোগ বাড়ে। পাশাপাশি নিয়মিত ডায়েরি লেখা বা ছোট গল্প লেখার অভ্যাস স্মৃতিশক্তি ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা উন্নত করে। বিশেষজ্ঞেরা বলেন, যারা নিয়মিত পড়া ও লেখার সঙ্গে যুক্ত, তাদের মধ্যে বয়সজনিত স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি তুলনামূলক কম।

নতুন বাদ্যযন্ত্র শিখলে মস্তিষ্কে নিউরোপ্লাস্টিসিটি বাড়ে। ছবি: ফ্রিপিক
নতুন বাদ্যযন্ত্র শিখলে মস্তিষ্কে নিউরোপ্লাস্টিসিটি বাড়ে। ছবি: ফ্রিপিক

নতুন কিছু শেখা (ভাষা, বাদ্যযন্ত্র বা দক্ষতা)

নতুন ভাষা শেখা কিংবা কোনো বাদ্যযন্ত্র বাজানো মস্তিষ্কের জন্য রীতিমতো ‘জিম’ হিসেবে কাজ করে। নতুন তথ্য গ্রহণ ও অনুশীলনের মাধ্যমে মস্তিষ্ককে নিয়মিত চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয়। এতে নিউরোপ্লাস্টিসিটি বাড়ে অর্থাৎ মস্তিষ্ক নতুনভাবে নিজেকে গড়ে তোলে। বয়স যাই হোক না কেন, নতুন কিছু শেখার অভ্যাস মস্তিষ্ককে তরুণ রাখে এবং মনোযোগ ও স্মরণশক্তি উন্নত করে।

ধাঁধা, দাবা বা অন্যান্য ব্রেন গেম

ক্রসওয়ার্ড, সুডোকু, দাবা কিংবা বিভিন্ন ব্রেন গেম মস্তিষ্কের চিন্তাশক্তিকে ধারালো করে। এসব খেলায় কৌশল, পরিকল্পনা ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা প্রয়োজন হয়। নিয়মিত এমন গেম খেললে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ও মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত মানসিক চ্যালেঞ্জমূলক খেলায় অংশ নেন, তাদের মধ্যে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের ক্ষয়ের গতি ধীর হয়।

সুডোকুর মতো ব্রেন গেম খেললে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ও মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। ছবি: ফ্রিপিক
সুডোকুর মতো ব্রেন গেম খেললে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ও মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। ছবি: ফ্রিপিক

গান শোনা ও গান করা

গান শোনা শুধু মনই ভালো করে না, মস্তিষ্কের জন্যও দারুণ উপকারী। সুর ও তাল মস্তিষ্কের আবেগ, স্মৃতি ও মনোযোগের সঙ্গে যুক্ত অংশগুলোকে সক্রিয় করে। গান গাইলে শ্বাস-প্রশ্বাস, স্মৃতি ও ভাষা, সবকিছুর সমন্বয় ঘটে। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, গান গাওয়া বা সঙ্গীতচর্চা মানসিক চাপ কমায় এবং স্মৃতিশক্তি দীর্ঘদিন ধরে বজায় রাখতে সাহায্য করে।

মস্তিষ্ককে তরুণ রাখতে কোনো জটিল চিকিৎসা নয়, বরং দৈনন্দিন জীবনে কিছু ইতিবাচক শখই যথেষ্ট। বই পড়া, নতুন কিছু শেখা, বুদ্ধি খাটানোর খেলাধুলা, সঙ্গীতচর্চা, এই ৪টি শখ নিয়মিত চর্চা করলে মস্তিষ্ক দীর্ঘদিন থাকবে সতেজ ও কর্মক্ষম। বয়স কেবল একটি সংখ্যা, যদি মস্তিষ্ক থাকে সক্রিয় ও প্রাণবন্ত।

তথ্যসূত্র: মিডিয়াম, অনওয়ার্ড, ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর ওয়েবসাইট থেকে

সম্পর্কিত