চরচা ডেস্ক

শরীরের বিভিন্ন প্রয়োজন চিন্তা করে সারাবিশ্বে অনেক ধরনের ডায়েট প্রচলিত আছে। এরমধ্যে একটি হলো লায়ন ডায়েট। এই ডায়েটে শুধু নির্দিষ্ট কিছু প্রাণীর মাংস-যেমন ভেড়া, বাইসন ও হরিণ খাওয়া হয়।
কিছু মানুষের দাবি, এই ডায়েট তাদের শক্তি বাড়ায়, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় এবং হজমজনিত সমস্যা কমায়। তবে ফল, শাকসবজি ও দুগ্ধজাত খাবার বাদ দেওয়ার মতো কঠোর বিধিনিষেধ শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আমেরিকার ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ মারিয়া গার্সিয়া লুইস লায়ন ডায়েট অনুসরণের ঝুঁকি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
লায়ন ডায়েট কী?
লায়ন ডায়েটে নির্দিষ্ট কয়েক ধরনের প্রাণীর মাংস ছাড়া অন্য সব খাবার বাদ দেওয়া হয়, এটাকে এলিমিনেশন ডায়েটও বলা হয়। মজার ব্যাপার হলো এর প্রচলন কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে হয়নি, বরং জীবনধারা বিষয়ক এক ব্লগারের উদ্যোগে এর প্রচলন হয়েছে।
মারিয়া গার্সিয়া লুইস বলেন, “লায়ন ডায়েট অনুসারীরা মনে করেন, এটি লিকি গাট সিনড্রোম (অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া বা বিষাক্ত পদার্থ প্রবেশের প্রবণতা), কিছু অটোইমিউন রোগ বা খাবারজনিত সংবেদনশীলতার উপসর্গ কমাতে পারে। তাদের মত হলো, যেসব খাবার প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, সেগুলো পুরোপুরি বাদ দেওয়া।”
তবে অতিমাত্রায় সীমাবদ্ধতার কারণে এই ডায়েট দীর্ঘমেয়াদে অনুসরণের জন্য নয় বলে মনে করেন এই পুষ্টিবিদ। সাধারণত কয়েক সপ্তাহ পর ধীরে ধীরে বাদ দেওয়া খাবারগুলো আবার খাদ্যতালিকায় যুক্ত করার কথা বলা হয়, যাতে কোন খাবার সমস্যার কারণ হচ্ছে তা বোঝা যায়।
এই ডায়েটে যা খাওয়া যাবে:

যা একেবারেই বাদ দিতে হবে:
লায়ন ডায়েট কি সত্যিই উপকারী?
গার্সিয়া লুইস বলেন, “লায়ন ডায়েটের পক্ষে কোনো ক্লিনিক্যাল গবেষণার প্রমাণ নেই। এর বেশিরভাগ দাবিই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা গল্পনির্ভর। তাই বিশেষজ্ঞরা এটি সুপারিশ করেন না।”
খাবার বাদ দেওয়ার ধারণা নতুন নয়। তবে এই ডায়েটে প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য বাদ দেওয়া হয় কেবল ক্লান্তি, প্রদাহ বা হজমজনিত সমস্যার উপসর্গ কমানোর আশায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এলিমিনেশন ডায়েট চিকিৎসকের পরামর্শে করা উচিত। যেখানে সাধারণত একবারে একটি খাবার বা উপাদান বাদ দেওয়া হয়। যেমন, পনির খেলে ডায়রিয়া হলে ল্যাকটোজ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হতে পারে।
কেন এই ডায়েট এড়িয়ে চলা উচিত
মারিয়া গার্সিয়া লুইস বলেন, এই ডায়েটে প্রায় সব খাদ্য উপাদান বাদ যাওয়ায় ভিটামিন সি’র মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি হতে পারে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য অপরিহার্য। এর ফলে হতে পারে ব্রেন ফগ, পেশি ক্ষয়, অতিরিক্ত ক্লান্তি, মাথাব্যথা, বমিভাব ও মাথা ঘোরা।
এ ছাড়া, এই ডায়েটে খাদ্যআঁশ নেই বললেই চলে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে এবং অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৈচিত্র্য কমে যেতে পারে।
এই ডায়েটে স্যাচুরেটেড ফ্যাট (ঘরের তাপমাত্রায় শক্ত থাকে) ও কোলেস্টেরল বেশি থাকায় এলডিএল বা ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বাড়তে পারে। যাদের হৃদরোগের ঝুঁকি বা পারিবারিক ইতিহাস আছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি আরও বিপজ্জনক হতে পারে।
গার্সিয়া লুইস বলেন, এত কঠোর খাদ্যাভ্যাস মানতে গিয়ে অনেকেই সামাজিক অনুষ্ঠানে যাওয়া এড়িয়ে চলেন, যা মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এ ছাড়া গর্ভবতী বা দুগ্ধদানকারী নারী এবং শিশুদের জন্য এই ডায়েট একেবারেই উপযুক্ত নয়।
এই পুষ্টিবিদের পরামর্শ, আপনি চাইলে আপনার খাদ্যতালিকা থেকে কোনো খাবার বাদ দিতেই পারেন, তবে লায়ন ডায়েট হয়তো সঠিক পথ নয়। প্রয়োজনে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের সঙ্গে কথা বলে উপসর্গ অনুযায়ী নিরাপদ ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বেছে নেওয়াই ভালো।
গার্সিয়া লুইস বলেন, “কিছু ক্ষেত্রে এই ডায়েট সাময়িক স্বস্তি দিতে পারে, কিন্তু এটি কোনো দীর্ঘস্থায়ী কোনো সমাধান নয়।”

শরীরের বিভিন্ন প্রয়োজন চিন্তা করে সারাবিশ্বে অনেক ধরনের ডায়েট প্রচলিত আছে। এরমধ্যে একটি হলো লায়ন ডায়েট। এই ডায়েটে শুধু নির্দিষ্ট কিছু প্রাণীর মাংস-যেমন ভেড়া, বাইসন ও হরিণ খাওয়া হয়।
কিছু মানুষের দাবি, এই ডায়েট তাদের শক্তি বাড়ায়, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় এবং হজমজনিত সমস্যা কমায়। তবে ফল, শাকসবজি ও দুগ্ধজাত খাবার বাদ দেওয়ার মতো কঠোর বিধিনিষেধ শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আমেরিকার ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ মারিয়া গার্সিয়া লুইস লায়ন ডায়েট অনুসরণের ঝুঁকি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
লায়ন ডায়েট কী?
লায়ন ডায়েটে নির্দিষ্ট কয়েক ধরনের প্রাণীর মাংস ছাড়া অন্য সব খাবার বাদ দেওয়া হয়, এটাকে এলিমিনেশন ডায়েটও বলা হয়। মজার ব্যাপার হলো এর প্রচলন কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে হয়নি, বরং জীবনধারা বিষয়ক এক ব্লগারের উদ্যোগে এর প্রচলন হয়েছে।
মারিয়া গার্সিয়া লুইস বলেন, “লায়ন ডায়েট অনুসারীরা মনে করেন, এটি লিকি গাট সিনড্রোম (অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া বা বিষাক্ত পদার্থ প্রবেশের প্রবণতা), কিছু অটোইমিউন রোগ বা খাবারজনিত সংবেদনশীলতার উপসর্গ কমাতে পারে। তাদের মত হলো, যেসব খাবার প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, সেগুলো পুরোপুরি বাদ দেওয়া।”
তবে অতিমাত্রায় সীমাবদ্ধতার কারণে এই ডায়েট দীর্ঘমেয়াদে অনুসরণের জন্য নয় বলে মনে করেন এই পুষ্টিবিদ। সাধারণত কয়েক সপ্তাহ পর ধীরে ধীরে বাদ দেওয়া খাবারগুলো আবার খাদ্যতালিকায় যুক্ত করার কথা বলা হয়, যাতে কোন খাবার সমস্যার কারণ হচ্ছে তা বোঝা যায়।
এই ডায়েটে যা খাওয়া যাবে:

যা একেবারেই বাদ দিতে হবে:
লায়ন ডায়েট কি সত্যিই উপকারী?
গার্সিয়া লুইস বলেন, “লায়ন ডায়েটের পক্ষে কোনো ক্লিনিক্যাল গবেষণার প্রমাণ নেই। এর বেশিরভাগ দাবিই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা গল্পনির্ভর। তাই বিশেষজ্ঞরা এটি সুপারিশ করেন না।”
খাবার বাদ দেওয়ার ধারণা নতুন নয়। তবে এই ডায়েটে প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য বাদ দেওয়া হয় কেবল ক্লান্তি, প্রদাহ বা হজমজনিত সমস্যার উপসর্গ কমানোর আশায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এলিমিনেশন ডায়েট চিকিৎসকের পরামর্শে করা উচিত। যেখানে সাধারণত একবারে একটি খাবার বা উপাদান বাদ দেওয়া হয়। যেমন, পনির খেলে ডায়রিয়া হলে ল্যাকটোজ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হতে পারে।
কেন এই ডায়েট এড়িয়ে চলা উচিত
মারিয়া গার্সিয়া লুইস বলেন, এই ডায়েটে প্রায় সব খাদ্য উপাদান বাদ যাওয়ায় ভিটামিন সি’র মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি হতে পারে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য অপরিহার্য। এর ফলে হতে পারে ব্রেন ফগ, পেশি ক্ষয়, অতিরিক্ত ক্লান্তি, মাথাব্যথা, বমিভাব ও মাথা ঘোরা।
এ ছাড়া, এই ডায়েটে খাদ্যআঁশ নেই বললেই চলে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে এবং অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৈচিত্র্য কমে যেতে পারে।
এই ডায়েটে স্যাচুরেটেড ফ্যাট (ঘরের তাপমাত্রায় শক্ত থাকে) ও কোলেস্টেরল বেশি থাকায় এলডিএল বা ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বাড়তে পারে। যাদের হৃদরোগের ঝুঁকি বা পারিবারিক ইতিহাস আছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি আরও বিপজ্জনক হতে পারে।
গার্সিয়া লুইস বলেন, এত কঠোর খাদ্যাভ্যাস মানতে গিয়ে অনেকেই সামাজিক অনুষ্ঠানে যাওয়া এড়িয়ে চলেন, যা মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এ ছাড়া গর্ভবতী বা দুগ্ধদানকারী নারী এবং শিশুদের জন্য এই ডায়েট একেবারেই উপযুক্ত নয়।
এই পুষ্টিবিদের পরামর্শ, আপনি চাইলে আপনার খাদ্যতালিকা থেকে কোনো খাবার বাদ দিতেই পারেন, তবে লায়ন ডায়েট হয়তো সঠিক পথ নয়। প্রয়োজনে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের সঙ্গে কথা বলে উপসর্গ অনুযায়ী নিরাপদ ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বেছে নেওয়াই ভালো।
গার্সিয়া লুইস বলেন, “কিছু ক্ষেত্রে এই ডায়েট সাময়িক স্বস্তি দিতে পারে, কিন্তু এটি কোনো দীর্ঘস্থায়ী কোনো সমাধান নয়।”