চরচা ডেস্ক

বিগত এক দশকে নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ একটি ঈর্ষণীয় অর্থনৈতিক সাফল্যের গল্প রচনা করতে পেরেছে। ধারাবাহিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি, তৈরি পোশাক খাতের ওপর ভিত্তি করে রপ্তানিমুখী শিল্পায়ন, সামাজিক সূচকগুলোর উন্নয়ন এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা দেশটিকে এশিয়ার দ্রুততম উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর মধ্যে স্থান করে দিয়েছিল। তবে বিড়ম্বনার বিষয় হলো, এই সাফল্যই আজ বাংলাদেশকে বিশ্ব ও আঞ্চলিক শক্তির উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতিযোগিতার এক রণক্ষেত্রে পরিণত করেছে।
ইউরেশিয়া রিভিউ এক নিবন্ধে বাংলাদেশকে ‘পানিপথ যুদ্ধের ময়দান’ বলছে।
ওই নিবন্ধ লিখেছেন পাকিস্তানি অর্থনীতি বিশ্লেষক শাব্বির এইচ কাজমি। গত ২৫ বছর ধরে তিনি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতি বিষয়ে লিখছেন। কাজমি বলছেন, বাংলাদেশের অবস্থা এখন দক্ষিণ এশিয়ার ঐতিহাসিক পানিপথের মতোই, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তিগুলো বারবার যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। বাংলাদেশও ক্রমেই প্রভাব বিস্তারের এক রণক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে।

কাজমির মতে, ভারত, আমেরিকা, চীন এবং রাশিয়া প্রত্যেকেই ঢাকায় নিজেদের কৌশলগত সুবিধা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে। প্রতিটি শক্তিই তাদের নিজস্ব স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছে, কিন্তু কেউই দেশটির দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেয়নি।
বাংলাদেশে আমেরিকার সরকার পরিবর্তনের উদ্যোগটি শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছে। তবে, ওয়াশিংটনের এই তৎপরতা মূলত সংকীর্ণ রাজনৈতিক গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। অতীতেও যখন ওয়াশিংটন বিভিন্ন দেশের সরকার পরিবর্তনে এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেছে, সেখানে অর্থনৈতিক পুনর্গঠন কাঠামোর উপস্থিতি থাকলেও, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কোনো দৃশ্যমান পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা, স্থিতিশীলতা প্যাকেজ বা বাণিজ্য কর্মসূচি দেখা যাচ্ছে না।
ইউরেশিয়া রিভিউয়ে প্রকাশিত এই নিবন্ধে বলা হয়েছে, এরকম কোনো সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক রূপরেখা ছাড়া এই শাসন পরিবর্তন শুধু অনিশ্চয়তাকেই বাড়িয়ে তুলেছে।
বাংলাদেশ এখনও ভারতের কাছে কৌশলগত এবং নিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক মূলত অবকাঠামো কেন্দ্রিক। যেটি আসলে সংযোগ আর সাপ্লাই চেইনের সঙ্গে যুক্ত। রাশিয়ার ভূমিকা মূলত সীমিত—শুধু লেনদেনভিত্তিক। এসব ছাড়া রাজনৈতিক অচলবস্থার সম্মুখীন হওয়া এই দেশটির জন্য বড় দেশগুলো তেমন কোনো পুনরুদ্ধারমূলক টেকসই এবং জনমুখী কৌশল গ্রহণ করেনি।
সম্প্রতি এক ছাত্রনেতার হত্যাকাণ্ড দেশটিকে অচল অবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিবর্তনের মূলে রয়েছে ছাত্র আন্দোলন। আজ তীব্র ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঝে উদ্ভূত এই অস্থিরতা দীর্ঘায়িত অস্থিরতার ঝুঁকি তৈরি করছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমছে, রপ্তানির গতি চাপের মুখে আর অর্থনৈতিক ধারাবাহিকতা ক্রমেই ভঙ্গুর হয়ে পড়ছে। এসব বাংলাদেশের জন্য বড় বিড়ম্বনাই।

যে শক্তিগুলো বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারের জন্য উন্মুখ, তাদের কারওরই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব নেওয়ার তেমন কোনো আগ্রহ নেই বলেই মনে করছেন কাজমি।
তিনি বলছেন, বাংলাদেশের আর একটি পানিপথ হওয়ার প্রয়োজন নেই, যেখানে ফলাফল নির্ধারিত হয় বাইরের শক্তির দ্বারা আর চড়া মূল্য দিতে হয় স্থানীয় জনগণকে। স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক ধারাবাহিকতার ওপর ভিত্তি করে একটি বিশ্বাসযোগ্য পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা ছাড়া এই ক্ষমতার লড়াইয়ের জন্য বাংলাদেশের মানুষকে হয়তো আরও চড়া মুল্য দিতে হবে।

বিগত এক দশকে নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ একটি ঈর্ষণীয় অর্থনৈতিক সাফল্যের গল্প রচনা করতে পেরেছে। ধারাবাহিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি, তৈরি পোশাক খাতের ওপর ভিত্তি করে রপ্তানিমুখী শিল্পায়ন, সামাজিক সূচকগুলোর উন্নয়ন এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা দেশটিকে এশিয়ার দ্রুততম উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর মধ্যে স্থান করে দিয়েছিল। তবে বিড়ম্বনার বিষয় হলো, এই সাফল্যই আজ বাংলাদেশকে বিশ্ব ও আঞ্চলিক শক্তির উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতিযোগিতার এক রণক্ষেত্রে পরিণত করেছে।
ইউরেশিয়া রিভিউ এক নিবন্ধে বাংলাদেশকে ‘পানিপথ যুদ্ধের ময়দান’ বলছে।
ওই নিবন্ধ লিখেছেন পাকিস্তানি অর্থনীতি বিশ্লেষক শাব্বির এইচ কাজমি। গত ২৫ বছর ধরে তিনি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতি বিষয়ে লিখছেন। কাজমি বলছেন, বাংলাদেশের অবস্থা এখন দক্ষিণ এশিয়ার ঐতিহাসিক পানিপথের মতোই, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তিগুলো বারবার যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। বাংলাদেশও ক্রমেই প্রভাব বিস্তারের এক রণক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে।

কাজমির মতে, ভারত, আমেরিকা, চীন এবং রাশিয়া প্রত্যেকেই ঢাকায় নিজেদের কৌশলগত সুবিধা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে। প্রতিটি শক্তিই তাদের নিজস্ব স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছে, কিন্তু কেউই দেশটির দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেয়নি।
বাংলাদেশে আমেরিকার সরকার পরিবর্তনের উদ্যোগটি শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছে। তবে, ওয়াশিংটনের এই তৎপরতা মূলত সংকীর্ণ রাজনৈতিক গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। অতীতেও যখন ওয়াশিংটন বিভিন্ন দেশের সরকার পরিবর্তনে এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেছে, সেখানে অর্থনৈতিক পুনর্গঠন কাঠামোর উপস্থিতি থাকলেও, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কোনো দৃশ্যমান পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা, স্থিতিশীলতা প্যাকেজ বা বাণিজ্য কর্মসূচি দেখা যাচ্ছে না।
ইউরেশিয়া রিভিউয়ে প্রকাশিত এই নিবন্ধে বলা হয়েছে, এরকম কোনো সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক রূপরেখা ছাড়া এই শাসন পরিবর্তন শুধু অনিশ্চয়তাকেই বাড়িয়ে তুলেছে।
বাংলাদেশ এখনও ভারতের কাছে কৌশলগত এবং নিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক মূলত অবকাঠামো কেন্দ্রিক। যেটি আসলে সংযোগ আর সাপ্লাই চেইনের সঙ্গে যুক্ত। রাশিয়ার ভূমিকা মূলত সীমিত—শুধু লেনদেনভিত্তিক। এসব ছাড়া রাজনৈতিক অচলবস্থার সম্মুখীন হওয়া এই দেশটির জন্য বড় দেশগুলো তেমন কোনো পুনরুদ্ধারমূলক টেকসই এবং জনমুখী কৌশল গ্রহণ করেনি।
সম্প্রতি এক ছাত্রনেতার হত্যাকাণ্ড দেশটিকে অচল অবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিবর্তনের মূলে রয়েছে ছাত্র আন্দোলন। আজ তীব্র ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঝে উদ্ভূত এই অস্থিরতা দীর্ঘায়িত অস্থিরতার ঝুঁকি তৈরি করছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমছে, রপ্তানির গতি চাপের মুখে আর অর্থনৈতিক ধারাবাহিকতা ক্রমেই ভঙ্গুর হয়ে পড়ছে। এসব বাংলাদেশের জন্য বড় বিড়ম্বনাই।

যে শক্তিগুলো বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারের জন্য উন্মুখ, তাদের কারওরই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব নেওয়ার তেমন কোনো আগ্রহ নেই বলেই মনে করছেন কাজমি।
তিনি বলছেন, বাংলাদেশের আর একটি পানিপথ হওয়ার প্রয়োজন নেই, যেখানে ফলাফল নির্ধারিত হয় বাইরের শক্তির দ্বারা আর চড়া মূল্য দিতে হয় স্থানীয় জনগণকে। স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক ধারাবাহিকতার ওপর ভিত্তি করে একটি বিশ্বাসযোগ্য পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা ছাড়া এই ক্ষমতার লড়াইয়ের জন্য বাংলাদেশের মানুষকে হয়তো আরও চড়া মুল্য দিতে হবে।

কোনটি তথ্য, কোনটি অপতথ্য, তার কোনো বাছবিচার কেউ করছে না। আসন্ন নির্বাচন ঘিরে ঠিক এ উৎকণ্ঠাই প্রকাশ করা হয়েছিল প্রশাসন থেকে। নির্বাচনের সময়ে এ অপতথ্যের বাড়বাড়ন্ত ঠেকানোর কী প্রস্তুতি নির্বাচনের কমিশনের আছে–সে প্রশ্ন এরই মধ্যে উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।