১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১
ফজলে রাব্বি

মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর পরিকল্পনায় আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনী দেশের শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের ঢাকার রায়েরবাজার, মিরপুর, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন বধ্যভূমিতে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেয় আলবদর বাহিনীর আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীন। স্বাধীনতার পর গভর্নর হাউজ (বর্তমান বঙ্গভবন) থেকে রাও ফরমান আলীর একটি ডেস্ক ডায়েরি জব্দ করা হয়, যেখানে নিহত ও নিখোঁজ অনেক বুদ্ধিজীবীর নাম-ঠিকানা লেখা ছিল। ‘বুদ্ধিজীবী নিধন তদন্ত কমিশন’-এর প্রতিবেদন থেকেও তার পরিকল্পনার কথা জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আলবদরকে সুনির্দিষ্টভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বুদ্ধিজীবীদের তালিকা তৈরির মূল কাজটি করেন চৌধুরী মঈনুদ্দীন এবং হত্যা কার্যকরের মূল দায়িত্বে ছিলেন আশরাফুজ্জামান খান। আশরাফুজ্জামান খানের নাখালপাড়ার বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া একটি ডায়েরিতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নাম-ঠিকানা পাওয়া যায়।
২৫ মার্চ রাত থেকেই বুদ্ধিজীবী নিধনযজ্ঞের সূচনা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এ হত্যাযজ্ঞ ভয়াবহ রূপ নেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী এবং সাহিত্যিক শহীদুল্লা কায়সার প্রমুখকে তাদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়।
বুদ্ধিজীবীদের বিভিন্ন নির্যাতনকেন্দ্রে নিয়ে দৈহিক নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়। এ ধরনের নির্যাতনকেন্দ্র মিরপুর, মোহাম্মদপুর, মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারসহ কয়েকটি এলাকায়। বেশিরভাগ বুদ্ধিজীবীকে ১৪ ডিসেম্বর হত্যা করা হয়।
বধ্যভূমিতে নিয়ে গিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হাত-পা বেধে চোখ উপড়ে ফেলা হয়, বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে নির্যাতন করা হয় এবং গুলি করে বা ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
হত্যার পর মৃতদেহগুলো শনাক্তকরণের অযোগ্য করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়। রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে অসংখ্য ক্ষত-বিক্ষত ও বিকৃত লাশ পাওয়া যায়, যাদের অনেককে শনাক্ত করাও যায়নি। মিরপুরে কবি মেহেরুন্নেসার মাথা কেটে তারই লম্বা চুল দিয়ে ফ্যানের সিলিংয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।
ঢাকার মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরের অদূরে জল্লাদখানা নামক বধ্যভূমিতে বাঙালিদের জবাই করে একটি কুয়োতে ফেলে দেওয়া হত।
বুদ্ধিজীবী হত্যার নৃশংসতার কথা জানা যায় বিজয়ের পর। পাকিস্তানের শোচনীয় অবস্থা ৭১ এর ১৪ ডিসেম্বর ছিলো দৃশ্যমান। ঢাকার প্রতিরক্ষা বেষ্টনী যৌথবাহিনীর চাপে ভাঙতে শুরু করলে পাকিস্তানি অনুগত গভর্নর ডা. আবদুল মোত্তালিব মালিকসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা একযোগে পদত্যাগ করেন।
এর আগে সকালে গভর্নর হাউসে (বর্তমানে বঙ্গভবন) মালিক মন্ত্রিসভা ও প্রাদেশিক সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠক শুরু হয়। খবর পেয়ে তিনটি ভারতীয় জঙ্গি বিমান সেখানে হামলা চালায়। মালিক দৌড়ে এয়ার রেইড শেল্টারে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে সেখানেই পদত্যাগপত্র লেখেন। এরপর তার পদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে রেডক্রস-ঘোষিত নিরপেক্ষ এলাকা হোটেল ইন্টার কনটিনেন্টালে আশ্রয় নেন।
নুরুল আমিনের নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন সরকারের সাতজন নেতা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, তারা সাহায্য করতে সামান্য বিলম্ব করলেও পাকিস্তানের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ এ কে নিয়াজির আগে পাঠানো বার্তার জবাবে দুপুরের পরে আসা এক বার্তায় ইয়াহিয়া খান যুদ্ধবিরতির অনুমোদন দেন। নিয়াজি সন্ধ্যায় ঢাকায় নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের কনসাল জেনারেল হার্বার্ট ড্যানিয়েল স্পিভাকের কাছে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়ে চিঠি লেখেন।
মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স নিরাপত্তা পরিষদের জন্য এদিন নতুন প্রস্তাব তোলে। পরিষদের সভাপতি বলেন, বিকেলের আগে অধিবেশন শুরু হবে না। তারপরও ঢাকার পতন আসন্ন বুঝতে পেরে পরিষদের সদস্যরা অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চালাতে থাকেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহরের ৬-৭টি জাহাজ মালাক্কা প্রণালি পেরিয়ে সিঙ্গাপুর অতিক্রম করে যায়।
ভারতের সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় ভারত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহরের উপস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনাকালে সদস্যরা এ নিয়ে সরকারকে ভীত না হওয়ার পরামর্শ দেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট জর্জ পম্পিদু আজোরায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের সঙ্গে বৈঠককালে বলেন, ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের নেয়া নীতি ঠিক নয়।
মস্কোতে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সি কোসিগিদের সঙ্গে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারণী কমিটির চেয়ারম্যান ডি পি ধর দীর্ঘ আলোচনা করেন।
এদিকে, এদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ মুক্ত করার যুদ্ধে লড়াই করে শহীদ হন বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। ১৩ ডিসেম্বর রাতে তিনি সহযোদ্ধাদের নিয়ে মহানন্দা নদী পেরিয়ে অবস্থান নেন রেহাইচরে।
মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরদের অবস্থানের অদূরেই ছিল পাকিস্তানিদের শক্ত প্রতিরক্ষা। তিনি সহযোদ্ধাদের নিয়ে সেখানে আক্রমণ চালান। কোনো ফল না হওয়ায় তিনি মরিয়া হয়ে ক্রল করে একটি বাংকারের দিকে এগিয়ে যান। বাংকারে ছিল পাকিস্তানিদের এলএমজি পোস্ট। গ্রেনেড ছুড়ে বাংকারটি ধ্বংস করতে তিনি সেটির কাছে গিয়ে পৌঁছান। কিন্তু আরেক বাংকারে থাকা পাকিস্তানি সেনারা তাঁকে দেখে গুলি ছোড়ে। গুলিটি কপালে লাগলে তিনি ঘটনাস্থলেই শহীদ হন।
মুক্তিযোদ্ধারা পরে মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের মরদেহ উদ্ধার করে সোনামসজিদ প্রাঙ্গণে সমাহিত করেন।
তথ্যসূত্র—

মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর পরিকল্পনায় আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনী দেশের শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের ঢাকার রায়েরবাজার, মিরপুর, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন বধ্যভূমিতে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেয় আলবদর বাহিনীর আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীন। স্বাধীনতার পর গভর্নর হাউজ (বর্তমান বঙ্গভবন) থেকে রাও ফরমান আলীর একটি ডেস্ক ডায়েরি জব্দ করা হয়, যেখানে নিহত ও নিখোঁজ অনেক বুদ্ধিজীবীর নাম-ঠিকানা লেখা ছিল। ‘বুদ্ধিজীবী নিধন তদন্ত কমিশন’-এর প্রতিবেদন থেকেও তার পরিকল্পনার কথা জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আলবদরকে সুনির্দিষ্টভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বুদ্ধিজীবীদের তালিকা তৈরির মূল কাজটি করেন চৌধুরী মঈনুদ্দীন এবং হত্যা কার্যকরের মূল দায়িত্বে ছিলেন আশরাফুজ্জামান খান। আশরাফুজ্জামান খানের নাখালপাড়ার বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া একটি ডায়েরিতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নাম-ঠিকানা পাওয়া যায়।
২৫ মার্চ রাত থেকেই বুদ্ধিজীবী নিধনযজ্ঞের সূচনা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এ হত্যাযজ্ঞ ভয়াবহ রূপ নেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী এবং সাহিত্যিক শহীদুল্লা কায়সার প্রমুখকে তাদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়।
বুদ্ধিজীবীদের বিভিন্ন নির্যাতনকেন্দ্রে নিয়ে দৈহিক নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়। এ ধরনের নির্যাতনকেন্দ্র মিরপুর, মোহাম্মদপুর, মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারসহ কয়েকটি এলাকায়। বেশিরভাগ বুদ্ধিজীবীকে ১৪ ডিসেম্বর হত্যা করা হয়।
বধ্যভূমিতে নিয়ে গিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হাত-পা বেধে চোখ উপড়ে ফেলা হয়, বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে নির্যাতন করা হয় এবং গুলি করে বা ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
হত্যার পর মৃতদেহগুলো শনাক্তকরণের অযোগ্য করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়। রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে অসংখ্য ক্ষত-বিক্ষত ও বিকৃত লাশ পাওয়া যায়, যাদের অনেককে শনাক্ত করাও যায়নি। মিরপুরে কবি মেহেরুন্নেসার মাথা কেটে তারই লম্বা চুল দিয়ে ফ্যানের সিলিংয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।
ঢাকার মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরের অদূরে জল্লাদখানা নামক বধ্যভূমিতে বাঙালিদের জবাই করে একটি কুয়োতে ফেলে দেওয়া হত।
বুদ্ধিজীবী হত্যার নৃশংসতার কথা জানা যায় বিজয়ের পর। পাকিস্তানের শোচনীয় অবস্থা ৭১ এর ১৪ ডিসেম্বর ছিলো দৃশ্যমান। ঢাকার প্রতিরক্ষা বেষ্টনী যৌথবাহিনীর চাপে ভাঙতে শুরু করলে পাকিস্তানি অনুগত গভর্নর ডা. আবদুল মোত্তালিব মালিকসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা একযোগে পদত্যাগ করেন।
এর আগে সকালে গভর্নর হাউসে (বর্তমানে বঙ্গভবন) মালিক মন্ত্রিসভা ও প্রাদেশিক সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠক শুরু হয়। খবর পেয়ে তিনটি ভারতীয় জঙ্গি বিমান সেখানে হামলা চালায়। মালিক দৌড়ে এয়ার রেইড শেল্টারে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে সেখানেই পদত্যাগপত্র লেখেন। এরপর তার পদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে রেডক্রস-ঘোষিত নিরপেক্ষ এলাকা হোটেল ইন্টার কনটিনেন্টালে আশ্রয় নেন।
নুরুল আমিনের নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন সরকারের সাতজন নেতা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, তারা সাহায্য করতে সামান্য বিলম্ব করলেও পাকিস্তানের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ এ কে নিয়াজির আগে পাঠানো বার্তার জবাবে দুপুরের পরে আসা এক বার্তায় ইয়াহিয়া খান যুদ্ধবিরতির অনুমোদন দেন। নিয়াজি সন্ধ্যায় ঢাকায় নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের কনসাল জেনারেল হার্বার্ট ড্যানিয়েল স্পিভাকের কাছে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়ে চিঠি লেখেন।
মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স নিরাপত্তা পরিষদের জন্য এদিন নতুন প্রস্তাব তোলে। পরিষদের সভাপতি বলেন, বিকেলের আগে অধিবেশন শুরু হবে না। তারপরও ঢাকার পতন আসন্ন বুঝতে পেরে পরিষদের সদস্যরা অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চালাতে থাকেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহরের ৬-৭টি জাহাজ মালাক্কা প্রণালি পেরিয়ে সিঙ্গাপুর অতিক্রম করে যায়।
ভারতের সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় ভারত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহরের উপস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনাকালে সদস্যরা এ নিয়ে সরকারকে ভীত না হওয়ার পরামর্শ দেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট জর্জ পম্পিদু আজোরায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের সঙ্গে বৈঠককালে বলেন, ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের নেয়া নীতি ঠিক নয়।
মস্কোতে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সি কোসিগিদের সঙ্গে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারণী কমিটির চেয়ারম্যান ডি পি ধর দীর্ঘ আলোচনা করেন।
এদিকে, এদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ মুক্ত করার যুদ্ধে লড়াই করে শহীদ হন বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। ১৩ ডিসেম্বর রাতে তিনি সহযোদ্ধাদের নিয়ে মহানন্দা নদী পেরিয়ে অবস্থান নেন রেহাইচরে।
মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরদের অবস্থানের অদূরেই ছিল পাকিস্তানিদের শক্ত প্রতিরক্ষা। তিনি সহযোদ্ধাদের নিয়ে সেখানে আক্রমণ চালান। কোনো ফল না হওয়ায় তিনি মরিয়া হয়ে ক্রল করে একটি বাংকারের দিকে এগিয়ে যান। বাংকারে ছিল পাকিস্তানিদের এলএমজি পোস্ট। গ্রেনেড ছুড়ে বাংকারটি ধ্বংস করতে তিনি সেটির কাছে গিয়ে পৌঁছান। কিন্তু আরেক বাংকারে থাকা পাকিস্তানি সেনারা তাঁকে দেখে গুলি ছোড়ে। গুলিটি কপালে লাগলে তিনি ঘটনাস্থলেই শহীদ হন।
মুক্তিযোদ্ধারা পরে মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের মরদেহ উদ্ধার করে সোনামসজিদ প্রাঙ্গণে সমাহিত করেন।
তথ্যসূত্র—