৩ ডিসেম্বর ১৯৭১
ফজলে রাব্বি

১৯৭১ সালের মার্চ মাসে যে যুদ্ধ অন্যায়ভাবে বাঙালির ওপর চাপিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানিরা, সাড়ে আট মাসের মধ্যে সে যুদ্ধে পরাজয় সুস্পষ্ট দেখতে পায় তারা। সম্ভাব্য এই পরাজয়ের গ্লানি এড়াতে এবং মুক্তিযুদ্ধকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে ডিসেম্বরের ৩ তারিখে তারা ভারতে ওপর হামলা চালায়।
পাকিস্তান বিমানবাহিনী বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ১৭ মিনিটে ভারতের অমৃতসর, পাঠানকোট, শ্রীনগর, যোধপুর, আগ্রাসহ সাতটি স্থানে একযোগে হামলা চালায়। এরপর রাত ৮টায় জম্মু ও কাশ্মীরে দক্ষিণ-পশ্চিম ছামব ও পুঞ্চ সেক্টরে ব্যাপক স্থল অভিযান শুরু করে। বাংলাদেশের সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রামকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী স্থল ও আকাশে আক্রমণ শুরু করায় ৩ ডিসেম্বর থেকে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।
পাকিস্তানের আক্রমনের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তার বেতার ভাষণে বলেন, বাংলাদেশের যুদ্ধ ভারতেরও যুদ্ধ। তিনি ভারতবাসীকে দীর্ঘ ত্যাগ ও সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হতে বলেন এবং জানান যে এটি একটি জনগোষ্ঠীর উচ্ছেদ বন্ধ করার এবং স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রাম। তিনি উল্লেখ করেন, “আমরা শান্তি চাই, কিন্তু স্বাধীনতা ছাড়া শান্তি সম্ভব নয়। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এখন ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।”
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ভারতে একতরফা আক্রমণের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনী এবং মিত্র ভারতীয় বাহিনীর সমন্বয়ে গড়া যৌথ বাহিনী এই দিন থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশে অভিযান শুরু করে।
এরই মধ্যে মুজিবনগর, কলকাতা ও দিল্লিতে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে ভারত যেকোনো মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেবে এবং একই সঙ্গে ভারত ও বাংলাদেশ এক মৈত্রী চুক্তিতে আবদ্ধ হবে।
বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে বিতাড়নের জন্য ভারত সরকারের কাছে সাহায্য চায়। ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারক কমিটির চেয়ারম্যান ডি পি ধরসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
ভারতের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানের বিমান আক্রমণের খবরে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে।
পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো রাওয়ালপিন্ডিতে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পুরো ক্ষমতা গ্রহণের শর্তে অসামরিক যৌথ মন্ত্রিসভায় বাঙালি প্রধানমন্ত্রীর অধীনে উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণে তিনি রাজি আছেন।
তথ্যসূত্র:
মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ
একাত্তরের দিনপঞ্জি, সাজ্জাদ শরিফ, রাশেদুর রহমান

১৯৭১ সালের মার্চ মাসে যে যুদ্ধ অন্যায়ভাবে বাঙালির ওপর চাপিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানিরা, সাড়ে আট মাসের মধ্যে সে যুদ্ধে পরাজয় সুস্পষ্ট দেখতে পায় তারা। সম্ভাব্য এই পরাজয়ের গ্লানি এড়াতে এবং মুক্তিযুদ্ধকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে ডিসেম্বরের ৩ তারিখে তারা ভারতে ওপর হামলা চালায়।
পাকিস্তান বিমানবাহিনী বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ১৭ মিনিটে ভারতের অমৃতসর, পাঠানকোট, শ্রীনগর, যোধপুর, আগ্রাসহ সাতটি স্থানে একযোগে হামলা চালায়। এরপর রাত ৮টায় জম্মু ও কাশ্মীরে দক্ষিণ-পশ্চিম ছামব ও পুঞ্চ সেক্টরে ব্যাপক স্থল অভিযান শুরু করে। বাংলাদেশের সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রামকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী স্থল ও আকাশে আক্রমণ শুরু করায় ৩ ডিসেম্বর থেকে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।
পাকিস্তানের আক্রমনের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তার বেতার ভাষণে বলেন, বাংলাদেশের যুদ্ধ ভারতেরও যুদ্ধ। তিনি ভারতবাসীকে দীর্ঘ ত্যাগ ও সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হতে বলেন এবং জানান যে এটি একটি জনগোষ্ঠীর উচ্ছেদ বন্ধ করার এবং স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রাম। তিনি উল্লেখ করেন, “আমরা শান্তি চাই, কিন্তু স্বাধীনতা ছাড়া শান্তি সম্ভব নয়। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এখন ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।”
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ভারতে একতরফা আক্রমণের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনী এবং মিত্র ভারতীয় বাহিনীর সমন্বয়ে গড়া যৌথ বাহিনী এই দিন থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশে অভিযান শুরু করে।
এরই মধ্যে মুজিবনগর, কলকাতা ও দিল্লিতে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে ভারত যেকোনো মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেবে এবং একই সঙ্গে ভারত ও বাংলাদেশ এক মৈত্রী চুক্তিতে আবদ্ধ হবে।
বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে বিতাড়নের জন্য ভারত সরকারের কাছে সাহায্য চায়। ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারক কমিটির চেয়ারম্যান ডি পি ধরসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
ভারতের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানের বিমান আক্রমণের খবরে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে।
পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো রাওয়ালপিন্ডিতে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পুরো ক্ষমতা গ্রহণের শর্তে অসামরিক যৌথ মন্ত্রিসভায় বাঙালি প্রধানমন্ত্রীর অধীনে উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণে তিনি রাজি আছেন।
তথ্যসূত্র:
মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ
একাত্তরের দিনপঞ্জি, সাজ্জাদ শরিফ, রাশেদুর রহমান