চরচা ডেস্ক

ইউরোপকে আমরা সাধারণত দেখি সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, স্থির গণতন্ত্র আর উন্নত জীবনের প্রতীক হিসেবে। কিন্তু আজ সেই মহাদেশই এক গভীর সংকটে ডুবে আছে। যে সংকট অনেকের চোখের আড়ালে। কিন্তু তা ভবিষ্যতের জন্য ভয়ংকর। ২০৩৫ সালের আগে এই অঞ্চল কী রূপ নেবে, সে সম্পর্কে সাম্প্রতিক একটি বিশ্লেষণ সতর্ক করে দিচ্ছে।
২০০৮ সালে আমেরিকা ও ইউরোপের অর্থনীতি প্রায় সমান ছিল। আজ মার্কিন অর্থনীতি লাফিয়ে উঠে ৮৭ শতাংশ বেড়ে ২৭ ট্রিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে। আর ইউরোপ? মাত্র ১৩ শতাংশ অগ্রগতি। সংখ্যায় যা মাত্র ১৭ ট্রিলিয়ন ডলার। এ ঘাটতি এখন জাপানের পুরো অর্থনীতির সমান। প্রশ্নটা তাই সহজ, ইউরোপ কি ধীরে ধীরে বিশ্বের বৃহত্তম ‘উন্মুক্ত জাদুঘর’-এ পরিণত হচ্ছে?
এই ক্ষয় একদিনে হয়নি। ধীরে, নীরবে, কিন্তু অবধারিতভাবে ছয়টি গভীর ক্ষত ইউরোপকে দুর্বল করে তুলেছে। এবং এ ক্ষতগুলোর বড় অংশই নিজের সৃষ্টি।
জার্মানির পতন মানেই ইউরোপের পতন
দশকের পর দশক ধরে জার্মানি ছিল ইউরোপের শিল্পভিত্তি। কিন্তু সেই ইঞ্জিন এখন নিঃশব্দে অচল হয়ে যাচ্ছে। সস্তা রুশ গ্যাস, চীনা বাজার আর মার্কিন নিরাপত্তা–এই তিন স্তম্ভের ওপর দাঁড়ানো জার্মান শিল্প এখন তিনদিকেই আঘাতপ্রাপ্ত।
নর্ড স্ট্রিম বিস্ফোরণের পর সস্তা রুশ জ্বালানি বন্ধ। ফলে জ্বালানি খরচ যে মাত্রায় বেড়েছে, তাতে বিএএসএফ-এর মতো জায়ান্টরা তাদের কারখানা চীনে পাঠিয়ে দিচ্ছে। জার্মানির পরিবেশবান্ধব প্রতিশ্রুতি আজ অদ্ভুত এক দ্বন্দ্বে। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে আবার কয়লা পোড়ানোয় ফিরে যেতে হচ্ছে।
এক কথায়, ইউরোপের শিল্পভিত্তি ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে।
বয়স বাড়ছে, জন্ম কমছে: পরিণতি ভয়াবহ
ইউরোপের জনসংখ্যা কাঠামো ভেঙে পড়ছে। ইতালির জন্মহার এখন ১.১৮–মানে ভবিষ্যতে ইতালিকে টিকে থাকতে হলে এই জন্মহার খুবই কম। বলা যায় বিপজ্জনক। ২০৫০ সালে ইউরোপের অনেক দেশে দুই জনেরও কম কর্মশক্তিসম্পন্ন মানুষকে একজন অবসরপ্রাপ্তের ভার বহন করতে হবে।
ফলে পেনশন খাতে চাপ বাড়ছে। কর বেড়ে যাচ্ছে। আর তরুণেরা ভালো সুযোগের সন্ধানে ইউরোপ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এদিকে বৃদ্ধ ভোটারদের আধিপত্য রাজনৈতিকভাবে যে কোনো সংস্কারকে আটকে রাখছে। ইউরোপ যেন নিজের বৃদ্ধত্বে নিজেই আটকে গেছে।
উদ্ভাবনহীন এক মহাদেশ
একটা প্রশ্ন আমরা ক’জন করি–বিশ্বের কোন বড় প্রযুক্তি ইউরোপীয়? উত্তরটা বিব্রতকর। নেই বললেই চলে। একটা কথা ইতিমধ্যে বেশ চালু হয়ে গেছে। বলা হচ্ছে– (প্রযুক্তি খাতে) উদ্ভাবন করে আমেরিকা, নকল করে চীন আর এ নিয়ে আইন করে ইউরোপ।
তাই স্মার্টফোন, সার্চ ইঞ্জিন, সামাজিক মাধ্যম, ক্লাউড–সবই আমেরিকার দখলে। আর স্টার্টআপগুলো? ইউরোপে বড় হতে না পেরে আমেরিকায় গিয়ে তালিকাভুক্ত হয়। ইউরোপ এখন নিয়ম-কানুন তৈরির ভার নিয়ে নিজের উদ্ভাবনের পথ রুদ্ধ করে ফেলেছে। ইউরোপ জুড়ে প্রযুক্তিতে আজ এক বিশাল শূন্যতা বিরাজ করছে।
পুঁজি আছে, কিন্তু ইউরোপে বিনিয়োগ করে না
ইউরোপীয়দের হাতে টাকা আছে, কিন্তু তারা ঝুঁকি নিতে চান না। শেয়ারে বিনিয়োগ অনেক কম। এ কারণে উদ্যোক্তারা পুঁজির অভাবে বড় হতে পারেন না। এই সুযোগে আমেরিকা ইউরোপের সঞ্চয় টেনে নিচ্ছে। ARM, Spotify, BioNTech–সবই আমেরিকায় তালিকাভুক্ত। নরওয়ের সার্বভৌম সম্পদ তহবিলও বড় বিনিয়োগ করে নিউইয়র্কে স্টক এক্সচেঞ্জে।
বাস্তবতা হলো, ইউরোপ নিজের টাকায় অন্যের উদ্ভাবনকে ভরসা দিচ্ছে।
সবুজ স্বপ্নের বিপরীতে তিক্ত বাস্তবতা
ইউরোপ চেয়েছিল সবুজ শক্তিতে নেতৃত্ব দিতে। কিন্তু সিদ্ধান্তে তাড়াহুড়োর কারণে বিপর্যয় ডেকে এনেছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ বন্ধ–সব মিলিয়ে রুশ গ্যাসই ছিল একমাত্র ভরসা। ইউক্রেন যুদ্ধ সেই মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে।
ইউরোপের এই দেশগুলোর জ্বালানি খরচ আমেরিকার তুলনায় ১০ গুণ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। শিল্পকারখানার বিদ্যুৎ খরচ প্রতিযোগিতাকে অসম্ভব করে তুলছে। গ্রিড অস্থির, দাম অনিয়ন্ত্রিত। আর অন্যদিকে চীন দ্রুত গতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার বাড়িয়ে চলেছে। ইউরোপ এখন পরিবেশ রক্ষার নৈতিক নেতৃত্ব তো হারিয়েছেই, অর্থনৈতিক ক্ষমতাও হারাচ্ছে।
মার্কিন ছাতার নিচে থাকা দিনের অবসান
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপ প্রতিরক্ষা ব্যয় কমিয়ে জীবন চালাতে পেরেছে। কারণে তার চারপাশে মার্কিন সুরক্ষা বলয় ছিল। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দেখিয়ে দিয়েছে–সে যুগ শেষ।
এখন প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে হবে। কিন্তু ইতিমধ্যে কর, পেনশন ও জনসংখ্যা সংকটে বাজেট ভেঙে পড়ছে। ইউরোপ এক বিপজ্জনক দোটানায়: কল্যাণব্যবস্থা রক্ষা করবে, নাকি নিরাপত্তা?
ইউরোপ-কোথায় যাচ্ছে, আর বাঁচানো যাবে কি?
সব বিশ্লেষণের উপসংহার পরিষ্কার: ইউরোপের সংকট গভীর, কাঠামোগত এবং বহু ক্ষেত্রে আত্মঘাতী। মহাদেশটি আজ দুই ভবিষ্যতের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে–
এর কোনটা বেছে নেবে ইউরোপ? তার রাজনৈতিক কাঠামো, প্রবীণ ভোটারের সংখ্যা আর ভাঙা ঐক্য দেখে মনে হয়–পথটা সহজ হবে না।
শেষ প্রশ্ন–আরো গভীর সত্যের সামনে দাঁড় করায়
এই আলোচনার শেষে একটি প্রশ্ন অনিবার্যভাবে উঠে আসে। যদি আপনি আজ একজন তরুণ ইউরোপীয় হন তাহলে এখানে থাকবেন, নাকি সুযোগের সন্ধানে অন্য কোথাও উড়ে যাবেন? এই প্রশ্নটাই বলে দেয়–ইউরোপ এখন বিশ্বের সামনে এক বড় সতর্কবার্তা। সমৃদ্ধি স্বয়ংক্রিয় নয়। রাষ্ট্র ও সমাজে বিনিয়োগ, সংস্কার ও দূরদর্শিতা ছাড়া কোনো মহাদেশই চিরদিন শীর্ষে থাকে না।
ইউরোপ তার ভবিষ্যৎ নিয়ে যেভাবে সিদ্ধান্ত নেবে, বিশ্বের বাকি অংশও সেখান থেকেই শিখবে আমাদের সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা– অর্থনৈতিক যাত্রায় স্থির দাঁড়িয়ে থাকা মানেই ধীরে ধীরে পেছনে পড়ে যাওয়া। আর এর পরিণতি মৃত্যু।

ইউরোপকে আমরা সাধারণত দেখি সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, স্থির গণতন্ত্র আর উন্নত জীবনের প্রতীক হিসেবে। কিন্তু আজ সেই মহাদেশই এক গভীর সংকটে ডুবে আছে। যে সংকট অনেকের চোখের আড়ালে। কিন্তু তা ভবিষ্যতের জন্য ভয়ংকর। ২০৩৫ সালের আগে এই অঞ্চল কী রূপ নেবে, সে সম্পর্কে সাম্প্রতিক একটি বিশ্লেষণ সতর্ক করে দিচ্ছে।
২০০৮ সালে আমেরিকা ও ইউরোপের অর্থনীতি প্রায় সমান ছিল। আজ মার্কিন অর্থনীতি লাফিয়ে উঠে ৮৭ শতাংশ বেড়ে ২৭ ট্রিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে। আর ইউরোপ? মাত্র ১৩ শতাংশ অগ্রগতি। সংখ্যায় যা মাত্র ১৭ ট্রিলিয়ন ডলার। এ ঘাটতি এখন জাপানের পুরো অর্থনীতির সমান। প্রশ্নটা তাই সহজ, ইউরোপ কি ধীরে ধীরে বিশ্বের বৃহত্তম ‘উন্মুক্ত জাদুঘর’-এ পরিণত হচ্ছে?
এই ক্ষয় একদিনে হয়নি। ধীরে, নীরবে, কিন্তু অবধারিতভাবে ছয়টি গভীর ক্ষত ইউরোপকে দুর্বল করে তুলেছে। এবং এ ক্ষতগুলোর বড় অংশই নিজের সৃষ্টি।
জার্মানির পতন মানেই ইউরোপের পতন
দশকের পর দশক ধরে জার্মানি ছিল ইউরোপের শিল্পভিত্তি। কিন্তু সেই ইঞ্জিন এখন নিঃশব্দে অচল হয়ে যাচ্ছে। সস্তা রুশ গ্যাস, চীনা বাজার আর মার্কিন নিরাপত্তা–এই তিন স্তম্ভের ওপর দাঁড়ানো জার্মান শিল্প এখন তিনদিকেই আঘাতপ্রাপ্ত।
নর্ড স্ট্রিম বিস্ফোরণের পর সস্তা রুশ জ্বালানি বন্ধ। ফলে জ্বালানি খরচ যে মাত্রায় বেড়েছে, তাতে বিএএসএফ-এর মতো জায়ান্টরা তাদের কারখানা চীনে পাঠিয়ে দিচ্ছে। জার্মানির পরিবেশবান্ধব প্রতিশ্রুতি আজ অদ্ভুত এক দ্বন্দ্বে। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে আবার কয়লা পোড়ানোয় ফিরে যেতে হচ্ছে।
এক কথায়, ইউরোপের শিল্পভিত্তি ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে।
বয়স বাড়ছে, জন্ম কমছে: পরিণতি ভয়াবহ
ইউরোপের জনসংখ্যা কাঠামো ভেঙে পড়ছে। ইতালির জন্মহার এখন ১.১৮–মানে ভবিষ্যতে ইতালিকে টিকে থাকতে হলে এই জন্মহার খুবই কম। বলা যায় বিপজ্জনক। ২০৫০ সালে ইউরোপের অনেক দেশে দুই জনেরও কম কর্মশক্তিসম্পন্ন মানুষকে একজন অবসরপ্রাপ্তের ভার বহন করতে হবে।
ফলে পেনশন খাতে চাপ বাড়ছে। কর বেড়ে যাচ্ছে। আর তরুণেরা ভালো সুযোগের সন্ধানে ইউরোপ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এদিকে বৃদ্ধ ভোটারদের আধিপত্য রাজনৈতিকভাবে যে কোনো সংস্কারকে আটকে রাখছে। ইউরোপ যেন নিজের বৃদ্ধত্বে নিজেই আটকে গেছে।
উদ্ভাবনহীন এক মহাদেশ
একটা প্রশ্ন আমরা ক’জন করি–বিশ্বের কোন বড় প্রযুক্তি ইউরোপীয়? উত্তরটা বিব্রতকর। নেই বললেই চলে। একটা কথা ইতিমধ্যে বেশ চালু হয়ে গেছে। বলা হচ্ছে– (প্রযুক্তি খাতে) উদ্ভাবন করে আমেরিকা, নকল করে চীন আর এ নিয়ে আইন করে ইউরোপ।
তাই স্মার্টফোন, সার্চ ইঞ্জিন, সামাজিক মাধ্যম, ক্লাউড–সবই আমেরিকার দখলে। আর স্টার্টআপগুলো? ইউরোপে বড় হতে না পেরে আমেরিকায় গিয়ে তালিকাভুক্ত হয়। ইউরোপ এখন নিয়ম-কানুন তৈরির ভার নিয়ে নিজের উদ্ভাবনের পথ রুদ্ধ করে ফেলেছে। ইউরোপ জুড়ে প্রযুক্তিতে আজ এক বিশাল শূন্যতা বিরাজ করছে।
পুঁজি আছে, কিন্তু ইউরোপে বিনিয়োগ করে না
ইউরোপীয়দের হাতে টাকা আছে, কিন্তু তারা ঝুঁকি নিতে চান না। শেয়ারে বিনিয়োগ অনেক কম। এ কারণে উদ্যোক্তারা পুঁজির অভাবে বড় হতে পারেন না। এই সুযোগে আমেরিকা ইউরোপের সঞ্চয় টেনে নিচ্ছে। ARM, Spotify, BioNTech–সবই আমেরিকায় তালিকাভুক্ত। নরওয়ের সার্বভৌম সম্পদ তহবিলও বড় বিনিয়োগ করে নিউইয়র্কে স্টক এক্সচেঞ্জে।
বাস্তবতা হলো, ইউরোপ নিজের টাকায় অন্যের উদ্ভাবনকে ভরসা দিচ্ছে।
সবুজ স্বপ্নের বিপরীতে তিক্ত বাস্তবতা
ইউরোপ চেয়েছিল সবুজ শক্তিতে নেতৃত্ব দিতে। কিন্তু সিদ্ধান্তে তাড়াহুড়োর কারণে বিপর্যয় ডেকে এনেছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ বন্ধ–সব মিলিয়ে রুশ গ্যাসই ছিল একমাত্র ভরসা। ইউক্রেন যুদ্ধ সেই মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে।
ইউরোপের এই দেশগুলোর জ্বালানি খরচ আমেরিকার তুলনায় ১০ গুণ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। শিল্পকারখানার বিদ্যুৎ খরচ প্রতিযোগিতাকে অসম্ভব করে তুলছে। গ্রিড অস্থির, দাম অনিয়ন্ত্রিত। আর অন্যদিকে চীন দ্রুত গতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার বাড়িয়ে চলেছে। ইউরোপ এখন পরিবেশ রক্ষার নৈতিক নেতৃত্ব তো হারিয়েছেই, অর্থনৈতিক ক্ষমতাও হারাচ্ছে।
মার্কিন ছাতার নিচে থাকা দিনের অবসান
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপ প্রতিরক্ষা ব্যয় কমিয়ে জীবন চালাতে পেরেছে। কারণে তার চারপাশে মার্কিন সুরক্ষা বলয় ছিল। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দেখিয়ে দিয়েছে–সে যুগ শেষ।
এখন প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে হবে। কিন্তু ইতিমধ্যে কর, পেনশন ও জনসংখ্যা সংকটে বাজেট ভেঙে পড়ছে। ইউরোপ এক বিপজ্জনক দোটানায়: কল্যাণব্যবস্থা রক্ষা করবে, নাকি নিরাপত্তা?
ইউরোপ-কোথায় যাচ্ছে, আর বাঁচানো যাবে কি?
সব বিশ্লেষণের উপসংহার পরিষ্কার: ইউরোপের সংকট গভীর, কাঠামোগত এবং বহু ক্ষেত্রে আত্মঘাতী। মহাদেশটি আজ দুই ভবিষ্যতের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে–
এর কোনটা বেছে নেবে ইউরোপ? তার রাজনৈতিক কাঠামো, প্রবীণ ভোটারের সংখ্যা আর ভাঙা ঐক্য দেখে মনে হয়–পথটা সহজ হবে না।
শেষ প্রশ্ন–আরো গভীর সত্যের সামনে দাঁড় করায়
এই আলোচনার শেষে একটি প্রশ্ন অনিবার্যভাবে উঠে আসে। যদি আপনি আজ একজন তরুণ ইউরোপীয় হন তাহলে এখানে থাকবেন, নাকি সুযোগের সন্ধানে অন্য কোথাও উড়ে যাবেন? এই প্রশ্নটাই বলে দেয়–ইউরোপ এখন বিশ্বের সামনে এক বড় সতর্কবার্তা। সমৃদ্ধি স্বয়ংক্রিয় নয়। রাষ্ট্র ও সমাজে বিনিয়োগ, সংস্কার ও দূরদর্শিতা ছাড়া কোনো মহাদেশই চিরদিন শীর্ষে থাকে না।
ইউরোপ তার ভবিষ্যৎ নিয়ে যেভাবে সিদ্ধান্ত নেবে, বিশ্বের বাকি অংশও সেখান থেকেই শিখবে আমাদের সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা– অর্থনৈতিক যাত্রায় স্থির দাঁড়িয়ে থাকা মানেই ধীরে ধীরে পেছনে পড়ে যাওয়া। আর এর পরিণতি মৃত্যু।