থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন সংঘাতের কারণ কী

চরচা ডেস্ক
চরচা ডেস্ক
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন সংঘাতের কারণ কী
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্ত। ছবি: রয়টার্স

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্ত বিরোধের জেরে ফের সংঘাতে ৫ জন নিহত হয়েছে। দেশ দুটির প্রশাসনের সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। নতুন করে এই সংঘাত শুরু হলো কেন? এবার আগে হামলা চালিয়েছে কারা?

গত জুলাই মাসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই দেশের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির ব্যবস্থা করেছিলেন। এবার সংঘাতের পর উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করছে।

সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরা জানায়, আজ সোমবার সীমান্তে বিমান হামলা চালায় থাই প্রশাসন– এমন অভিযোগ কম্বোডিয়ার। যার ফলে চার বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং নয় কম্বোডিয়ান আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে কম্বডিয়া সরকার। অপরদিকে থাইল্যান্ড দাবি করেছে, এক থাই সেনা নিহত হয়েছেন।

ব্যাংককে এক সংবাদ সম্মেলনে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নিকরন্দেজ বালানকুরা বলেন, “থাইল্যান্ডের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা সুরক্ষিত না হওয়া পর্যন্ত কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে তাদের সামরিক পদক্ষেপ চলতে থাকবে।”

মুখপাত্র অভিযোগ করে বলেন, “কম্বোডিয়া দুই দেশের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে ‘পদদলিত’ করেছে।”

নতুন সংঘর্ষটি জুলাই মাসে হওয়া পাঁচ দিনের রকেট হামলার পরে সবচেয়ে বড় লড়াই। জুলাই মাসের সংঘাতে ৪৮ জন নিহত এবং ৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।

নতুন করে অস্থিরতার সঠিক কারণ স্পষ্ট নয়। তবে গত মাস থেকে উত্তেজনা বাড়ছিল। উত্তেজনা বৃদ্ধির মূল কারণ, স্থলমাইনে এক থাই সৈন্য আহত হয়েছিল।

থাইল্যান্ড দাবি করে, কম্বোডিয়া নতুন করে বেশ কিছু স্থলমাইন পুঁতেছিল সীমান্ত এলাকায়। থাইল্যান্ড সরকার ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি পুনরায় শুরু করবে না।

কম্বোডিয়া এই অভিযোগ বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে। কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কম্বোডিয়ান সামরিক বাহিনী আক্রমণের শিকার হলেও তারা পাল্টা আক্রমণ করেনি। থাইল্যান্ডের ‘নানা উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের’ পরেও তারা যুদ্ধবিরতিকে সম্মান দেখিয়েছিল।

বিষয়টি নিয়ে থাই বিমান বাহিনী জানিয়েছে, কম্বোডিয়া ভারী অস্ত্রশস্ত্র সীমান্তে জড়ো করেছিল। কম্বোডিয়া যুদ্ধ ইউনিটগুলোকে নতুন অবস্থানে রেখেছিল। এর মূল্যায়নের ভিত্তিতে তারা স্থানীয় সময় ভোরে সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা শুরু করে।

থাই বিমান বাহিনীর মতে, এই বিমান হামলার উদ্দেশ্য ছিল পরিস্থিতিকে বাড়তে না দেওয়া এবং কম্বোডিয়ার সামরিক সক্ষমতা হ্রাস করা।

সীমান্তে উত্তেজনা শুরুর পরে স্থানীয়দের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে উভয় দেশ।

থাইল্যান্ড সরকার ৩ লাখ ৮০ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়েছে। অপরদিকে, কম্বোডিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওদ্দার মিনচি প্রদেশ থেকে ১ হাজার ১৫৭ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্ত উত্তেজনায় আগেরবার সাময়িক বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে প্রশ্নের বিষয়, নতুন এই সামরিক উত্তেজনায় মধ্যস্থতা করার জন্য আমেরিকা কি চালকের আসনে বসবে?

সম্পর্কিত