চুরির ক্লু ধরে গ্রেপ্তার গৃহকর্মী আয়েশা

চরচা প্রতিবেদক
চরচা প্রতিবেদক
চুরির ক্লু ধরে গ্রেপ্তার গৃহকর্মী আয়েশা
গ্রেপ্তার আয়েশা। ছবি: পুলিশের দেওয়া

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পলাতক গৃহকর্মী মোছাম্মৎ আয়েশা (২০) ও তার স্বামী রাব্বিকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে ঝালকাঠির নলছিটি থানার চর কয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। রাজধানীতে আগের কয়েকটি চুরির ঘটনা ‘অ্যানালাইসিস’ করেই তাকে শনাক্ত করা গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে মোহাম্মদপুরে শাহজাহান রোডের ৩২/২/এ নম্বর বাড়ির অষ্টমতলায় নিজ বাসায় মা লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিজা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার পর মেয়ে নাফিসার স্কুলড্রেস পরে বেরিয়ে যায় খুনি। এ ঘটনায় মঙ্গলবার বাবা আজিজুল ইসলাম মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, সোমবার সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে আয়েশা বাসায় ঢোকে এবং ৯টা ৩৫ মিনিটে নাফিসার স্কুলড্রেস পরে বাসা ছাড়ে। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল, ল্যাপটপ, স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান জিনিস নিয়ে যায়।

এদিকে নিহত মা-মেয়ের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, লায়লার শরীরে ৩০টি ও তার মেয়ের শরীরে ৬টি ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। হত্যাকাণ্ডের চারদিন আগে ওই বাসায় খণ্ডকালীন কাজ নেওয়া আয়েশার ছবি বা কোনো ডকুমেন্ট রাখেননি গৃহকর্তা।

তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানায়, কিছুদিন ধরে পুলিশ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গৃহকর্মীর ছদ্মবেশে চুরি করা নারীদের নিয়ে আলাদা তালিকা করছিল। সেখানে একই ধরনের পোড়া দাগ ও বয়সের বর্ণনাসহ এক তরুণীর কথা পাওয়া যায়। পরে ঢাকার বছিলা ও মোহাম্মদপুরের দুটি বাসায় চুরির ঘটনায় আয়েশার সম্পৃক্ততার ক্লু পাওয়া যায়। এসব ঘটনার কোনো মামলা হয়নি–তবে সেসব চুরির ধরন, আচরণ ও পোড়া দাগের বর্ণনা মিলিয়ে পুলিশ ধারণা করে, মা-মেয়ে হত্যাকাণ্ডের শীর্ষ সন্দেহভাজন আয়েশাই সেই গৃহকর্মী।

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “এখন পর্যন্ত বড় কোনো উদ্দেশ্যের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। চুরির উদ্দেশ্যে ঢুকে কথা কাটাকাটি বা হাতাহাতি থেকেই খুন হতে পারে। তবে আয়েশার স্বামী রাব্বির সম্পৃক্ততা আছে কি না–তা যাচাই করা হচ্ছে।”

পুলিশ জানায়, আয়েশার পারিবারিক পরিচয় জটিল। তার বাবা কুড়িগ্রামের, মা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা এবং বাবা-মায়ের একাধিক বিয়ের কারণে তিনি কোথায় বড় হয়েছেন তা স্পষ্ট নয়।

তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা বলেন, “আয়েশার সঙ্গে তার স্বামী রাব্বিকেও আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আগামীকাল সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।”

সম্পর্কিত