রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে অস্ত্র তৈরিতে ভারতের উৎপাদনকারীদের বিরল বৈঠক

চরচা ডেস্ক
চরচা ডেস্ক
রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে অস্ত্র তৈরিতে ভারতের উৎপাদনকারীদের বিরল বৈঠক
নরেন্দ্র মোদি এবং ভ্লাদেমির পুতিন। ছবি: রয়টার্স

আদানি ডিফেন্স ও ভারত ফোর্জসহ শীর্ষস্থানীয় ভারতীয় অস্ত্র নির্মাতাদের অন্তত অর্ধডজন নির্বাহী সম্ভাব্য যৌথ উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করার জন্য রাশিয়ায় বিরল বৈঠক করেছেন।

বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার রয়টার্স এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২২ সালে মস্কোর ইউক্রেন আক্রমণের পর প্রথমবার ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবসায়ী নেতাদের রাশিয়া সফরের সময় এই বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

তবে রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য যেকোনো সহযোগিতা ভারতের প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলোর যৌথভাবে পশ্চিমা অস্ত্র বিকাশের পরিকল্পনাকে ব্যাহত করার ঝুঁকি তৈরি করবে। এই পরিকল্পনা মূলত বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক দেশ ভারতকে একটি বৈশ্বিক উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রচেষ্টার অংশ।

এর আগে পশ্চিমা কূটনীতিকরা জানিয়েছিলেন, ভারতে সংবেদনশীল সামরিক প্রযুক্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে একটি প্রধান বাধা হল রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির প্রতিরক্ষা সম্পর্ক এবং ভারতীয় সামরিক বাহিনীতে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ রুশ উৎপাদিত অস্ত্র, যার মোট পরিমাণ প্রায় ৩৬ শতাংশ।

অক্টোবর মাসের ২৯ ও ৩০ তারিখে ভারতের প্রতিরক্ষা উৎপাদন সচিব সঞ্জীব কুমারের নেতৃত্বে একটি ভারতীয় প্রতিরক্ষা-শিল্প প্রতিনিধিদল মস্কো সফরের পাশাপাশি এই আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। এর লক্ষ্য ছিল ৪ ও ৫ ডিসেম্বর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরের ভিত্তি তৈরি করা।

আদানি গ্রুপের এক মুখপাত্র তাদের কোনো নির্বাহীর বৈঠকে যোগদানের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য সংস্থাগুলো মন্তব্যের জন্য রয়টার্স অনুরোধ জানালেও জবাব পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুটি সূত্র ও অন্য একজন শিল্প নির্বাহী জানিয়েছেন, বৈঠকে মিকোয়ান মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান ও অন্যান্য রুশ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও অস্ত্রের খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। পাশাপাশি মস্কোতে রপ্তানি করা যেতে পারে এমন সরঞ্জাম উন্নয়নের জন্য ভারতে উৎপাদন ইউনিট স্থাপনে রাশিয়ার প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।

একজন ভারতীয় নির্বাহী জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতীয় কোম্পানিগুলোর নতুন চুক্তি করার ক্ষেত্রে দোটানা কাজ করতে পারে। কারণ এতে গৌণ নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি রয়েছে।

যদিও ভারত কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও লবিংয়ের মাধ্যমে কিছুটা সুরক্ষা দিতে পারে। একজন ভারতীয় প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, কোম্পানিগুলোকে নিজেদেরই রাজনৈতিক ঝুঁকি বিবেচনা করতে হবে।

সম্পর্কিত