প্রতিদিন আদা চিবোলে কী হয়?

চরচা ডেস্ক
চরচা ডেস্ক
প্রতিদিন আদা চিবোলে কী হয়?
প্রতীকী ছবি/ফ্রিপিক

বাঙালি বাড়ির রান্না-বান্নায় অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি উপকরণ হলো আদা। এই আদাতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহনাশক ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান। প্রতিদিন আদা চিবোলে শরীরে নানা পরিবর্তন আসতে পারে।

টানা ৬০ দিন আদা চিবোলে শরীরে কী ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে সে সম্পর্কে ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে লিখেছেন মহারাষ্ট্রের থানেতে অবস্থিত কিমস হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ডা. আমরিন শেখ।

এই পুষ্টিবিদ বলেন, নিয়মিত আদা চিবোনোর ফলে ধীরে ধীরে গলার জ্বালা কমে, শ্বাসনালি শিথিল হয় এবং রক্তসঞ্চালন উন্নত হয়। ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ ধরে আদা চিবালে কাশি কমে যায়, হজমশক্তি বাড়ে এবং পেট ফাঁপার সমস্যাও হ্রাস পায়। তাছাড়া যারা মৌসুমি শ্বাসকষ্টে ভোগেন, তাদের ক্ষেত্রে আদা শ্বাসনালির ভেতরের আবরণের প্রদাহ কমাতে ও ফুসফুসের স্বস্তি বজায় রাখতে সহায়তা করে।

আদা কি শ্বাসযন্ত্রের জন্য সত্যিই উপকারী

ডা. আমরিন শেখ বলেছেন, হ্যাঁ, আদা শ্বাসযন্ত্রের জন্য উপকারী। তবে এটি নিয়ে খুব বেশি প্রত্যাশা রাখা উচিত নয়। কারণ আদা ওষুধের মতো সরাসরি ফুসফুসে কাজ করবে, এমন নয়। এটি ধীরে ও কোমলভাবে কাজ করে। গলার জমাট ভাব কমাতে, ঠান্ডা আবহাওয়াজনিত ও দূষণের কারণে সৃষ্ট জ্বালা উপশমে সহায়ক। এর উষ্ণ গুণ কফ ঢিলা করে, ফলে সংক্রমণের সময় কফ সহজে বের হতে পারে।

তবে হাঁপানি বা সিওপিডির মতো দীর্ঘমেয়াদি ফুসফুসের রোগে আদা সহায়ক হলেও, এটি কখনোই চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধের বিকল্প নয় বলে সতর্ক করেছেন এই পুষ্টিবিদ।

প্রতিদিন আদা চিবানোর কি কোনো ক্ষতি আছে

ডা. আমরিন শেখ বলেন, সাধারণত প্রতিদিন আদা খেলে তেমন কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে বেশি আদা খেলে মুখে জ্বালা করতে পারে, কিছু মানুষের ক্ষেত্রে অ্যাসিডিটি তৈরি করতে পারে। এ ছাড়া আদা রক্তও সামান্য পাতলা করতে পারে।

এই বিশেষজ্ঞ বলেন, যারা রক্ত পাতলা করার ওষুধ নেন, বা যাদের অ্যাসিড রিফ্ল্যাক্স কিংবা গ্যাস্ট্রিসাইডের মতো সমস্যা রয়েছে, তাদের অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আদা খাওয়া শুরু করা উচিত।

কতটুকু আদা খাওয়া উচিত

আদা খাওয়ার ক্ষেত্রে পরিমাণ অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত বলে মনে করেন ডা. আমরিন শেখ। তার পরামর্শ, প্রতিদিন এক আঙুলের সমান বা ছোট সাইজের দুই-তিন স্লাইস আদাই যথেষ্ট।

ডা.আমরিন শেখ বলেন, আদা একটি সহায়ক খাবার, এটি কোনো রোগের চূড়ান্ত চিকিৎসা নয়। এটি গলায় অস্বস্তি কমায় পাশাপাশি প্রদাহ কমাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে সহায়তা করে। কিন্তু কারো যদি ঘন ঘন শ্বাসকষ্ট হয়, দীর্ঘদিন কাশি বা বুক চেপে ধরে মতো সমস্যা থাকে, তাহলে সঠিক চিকিৎসা প্রয়োজন।

এই পুষ্টিবিদের ভাষ্য, আদার মতো জীবনযাপনে সহায়ক খাবারগুলো গুরুত্বপূর্ণ হলেও সময়মতো রোগ নির্ণয় করাই ফুসফুসের জন্য সবথেকে বেশি প্রয়োজন।

সম্পর্কিত