অন্তর্মুখীরা কি ব্যর্থ হন?

চরচা ডেস্ক
চরচা ডেস্ক
অন্তর্মুখীরা কি ব্যর্থ হন?
প্রতীকী ছবি। ছবি: এআই জেনারেটেড

বাংলা প্রবাদে আছে—‘আগে দর্শনধারী, পরে গুণবিচারী’। অর্থাৎ একজন ব্যক্তিকে বিচার করার সময় আমরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই উনি কি ধরনের আচরণ প্রদর্শন করেন, সেটিকেই বিবেচনায় নিয়ে থাকি। কিন্তু কথা কম বলা মানেই কি কাজও কম করা? বা উল্টো করে বললে, কথা বেশি বলা কর্মী কি সব সময় কাজও বেশি করে থাকে?

এই দুটি প্রশ্নের উত্তরই হলো, ‘না’। বিভিন্ন গবেষণা ও জরিপেই এমন তথ্য জানা গেছে। অর্থাৎ, কথা কম বলা ব্যক্তি ফাঁকি দিয়ে কাজ কম করেন, বিষয়টি তেমন নয় কোনোভাবেই। আবার বহির্মুখী ব্যক্তি নিজের কাজের প্যাশন সবার সামনে প্রকাশ করে ফেলেন বলেই তিনি যে কাজও বেশি বেশি করেন, ব্যাপারটি ওমনও নয়।

মজার বিষয় হলো, অন্তর্মুখী চরিত্রের ব্যক্তিরা কম কাজ করেন বলে যে প্রচলিত বিশ্বাস কর্মক্ষেত্রের ঊর্ধ্বতনদের মধ্যে আছে, সফলতার হিসাবে তা একেবারেই উল্টো। প্রচলিত বিশ্বাস মানলে ভেবে নিতেই হয় যে, চাকরি কিছুটা করতে পারলেও অন্তর্মুখী স্বভাবের ব্যক্তিদের পক্ষে ব্যবসা করা বা কোনো উদ্যোগ নিয়ে সেটিকে এগিয়ে নেওয়া আরও কঠিন হওয়ার কথা। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য হলো, অন্তর্মুখী চরিত্রের ব্যক্তিদের মধ্যে উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হওয়ার হার বেশি। এক্ষেত্রে অন্তর্মুখী চরিত্রের মানুষদের কিছু শক্তিশালী বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো:

১. অন্তর্মুখী চরিত্রের ব্যক্তিরা সৃজনশীল ভাবনায় এগিয়ে থাকেন।

২. নতুন নতুন ধ্যান-ধারণা তৈরিতে এসব ব্যক্তিরা অত্যন্ত আগ্রহী থাকেন।

৩. এরা কথা কম বলে, শোনে বেশি। এবং মনযোগ দিয়ে অন্যের কথা শোনাটা ভালো নেতা হওয়ার পূর্বশর্ত।

৪. অতি উৎসাহে ভাবনা-চিন্তা ছাড়াই কোনো কাজ অন্তর্মুখী চরিত্রের ব্যক্তিরা করেন না। বরং ভেবে-চিন্তে ঠান্ডা মাথায় কাজ করাটাই তাদের স্বভাব। ফলে কাজের ফলাফলও ভালো হয়।

৫. পরিস্থিতি সামলানো এবং সমস্যা সমাধানে অন্তর্মুখী চরিত্রের ব্যক্তিদের জুড়ি মেলা ভার। কারণ তারা তুলনামূলকভাবে বেশি শান্ত প্রকৃতির হন এবং সুচিন্তিত সমাধানে আগ্রহী থাকেন।

ওপরের এই বৈশিষ্ট্যগুলো পড়ে এগুলো আছে এমন বিখ্যাত ব্যক্তির খোঁজ আপনারা করতেই পারেন। সেক্ষেত্রে কিছু নাম জানিয়ে রাখা যাক। যেমন: বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা স্টিভেন স্পিলবার্গ, বিশ্বের অন্যতম ধনী ইলন মাস্ক বা ওয়ারেন বাফেট – এরা সবাই স্বঘোষিত অন্তর্মুখী স্বভাবের মানুষ। আশা করি, এই তিনটি নামেই যা বোঝার বোঝা গেছে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, ভোগ ম্যাগাজিন, সায়েন্স ডাইরেক্ট ডট কম ও হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ

সম্পর্কিত