গ্রিনল্যান্ড আমাদের লাগবেই: ট্রাম্প

চরচা ডেস্ক
চরচা ডেস্ক
গ্রিনল্যান্ড আমাদের লাগবেই: ট্রাম্প
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

গ্রিনল্যান্ড নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি আবারও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তিনি ঘোষণা করেছেন, আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত রোববার ট্রাম্প লুইজিয়ানার গভর্নর জেফ ল্যান্ড্রিকে গ্রিনল্যান্ডের বিশেষ দূত হিসেবে মনোনীত করেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে ডেনমার্ক ও গ্রিনল্যান্ড-উভয় পক্ষ থেকেই তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।

ফ্লোরিডার পাম বিচে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘‘গ্রিনল্যান্ডে আমেরিকার আগ্রহের পেছনে খনিজ সম্পদের চেয়ে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। গ্রিনল্যান্ডের উপকূলজুড়ে রাশিয়া ও চীনের জাহাজ চলাচল করছে এবং কৌশলগত স্বার্থ রক্ষার জন্য আমেরিকার গ্রিনল্যান্ড অবশ্যই দরকার।”

গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্কের অধীন একটি স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল।

ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডরিকসেন এবং গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেন্স-ফ্রেডেরিক নেলসেন এক যৌথ বিবৃতিতে ট্রাম্পের মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করেন। তারা স্পষ্ট করে বলেন, গ্রিনল্যান্ড গ্রিনল্যান্ডবাসীরই থাকবে এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার অজুহাতে কোনো দেশ অন্য দেশের ভূখণ্ড দখল করতে পারে না।

এদিকে জেফ ল্যান্ড্রি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গ্রিনল্যান্ডকে আমেরিকার অংশ করার লক্ষ্যে এই দায়িত্ব তিনি সানন্দে গ্রহণ করেছেন। এটা তার জন্য সম্মানের বিষয়। তিনি আরও বলেন, এতে লুইজিয়ানার গভর্নর হিসেবে তার দায়িত্ব পালনে কোনো প্রভাব পড়বে না।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসন ডেনমার্কের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে আমেরিকার পূর্ব উপকূলে নির্মাণাধীন পাঁচটি বৃহৎ প্রকল্পের লিজ স্থগিত করে দেয়, যার মধ্যে ডেনমার্কের রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত জ্বালানি কোম্পানি অরস্টেডের দুটি প্রকল্পও রয়েছে।

ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লক রাসমুসেন গ্রিনল্যান্ড দখলের উদ্দেশ্যে এই অঞ্চলে বিশেষ দূত নিয়োগকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেন। এ ব্যাপারে তিনি মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করবেন বলে জানান।

ডেনমার্ক সাম্প্রতিক সময়ে আর্কটিক প্রতিরক্ষায় বিনিয়োগ বাড়িয়েছে এবং গ্রিনল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে। তবুও প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডরিকসেন এই পরিস্থিতিকে গভীরভাবে উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেন।

কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাইকেল রাসমুসেন রয়টার্সকে বলেন, আমেরিকার আচরণে মনে হচ্ছে ডেনমার্কের বন্ধুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টার তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর।

সম্পর্কিত