মিয়ানমার জাতীয় নির্বাচনের আগে গ্রেপ্তার দুই শতাধিক

চরচা ডেস্ক
চরচা ডেস্ক
মিয়ানমার জাতীয় নির্বাচনের আগে গ্রেপ্তার দুই শতাধিক
মিয়ানমার আর্মি। ছবি: রয়টার্স

মিয়ানমারের সামরিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে নির্বাচন প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণ করার জন্য এই সপ্তাহে ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে একটি নতুন আইনের অধীনে। যার ফলে নির্বাচন পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে সামরিক কর্তৃপক্ষ।

দলগুলো বলছে, ভোটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বদলে এই আইনটি ভিন্নমত দমন করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

মিয়ানমারের আগামী ২৮ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা। ২০১৫ ও ২০২০ সালের নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেছিলেন, আসন্ন নির্বাচনের আইনগত কাঠামো নিয়ে তারা গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, সামরিক জান্তা প্রণীত এই সুরক্ষা আইনটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, নির্বাচন প্রক্রিয়া নস্যাৎ করার চেষ্টার অভিযোগে নতুন আইনের আওতায় অন্তত ২২৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তদের পরিচয় সরকার প্রকাশ করেনি। এ ব্যাপারে জান্তা সরকারের মুখপাত্র জ’ মিন তুনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, নতুন নির্বাচন সুরক্ষা আইনে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তিন বছর কারাদণ্ড থেকে শুরু করে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত শাস্তির বিধান রয়েছে। এএনএফআরইএল সতর্ক করে বলেছে, শান্তিপূর্ণ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার পরিবর্তে এই আইনটি ভিন্নমত দমন, বিক্ষোভ নিরুৎসাহিত করা এবং স্বাধীন পর্যবেক্ষণ বন্ধ করতে ব্যবহৃত হচ্ছে-ফলে যেকোনো ধরনের নির্বাচন পর্যবেক্ষণই অপরাধের ঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে।

অনেক দেশ, জাতিসংঘ এবং মানবাধিকার সংগঠন আসন্ন নির্বাচনকে একটি প্রহসন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। কারণ এই নির্বাচনের উদ্দেশ্য ক্ষমতাসীন জেনারেলদের ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখা। তবে সামরিক জান্তা দাবি করছে, তারা জনসমর্থন পাচ্ছে। নির্বাচনের প্রথম ধাপে ডিসেম্বরের ২৮ তারিখে ইয়াঙ্গুনসহ শতাধিক শহরে ভোট হবে, এরপর জানুয়ারিতে আরও প্রায় একশো শহরে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তৃতীয় ধাপের নির্বাচন কবে হবে এখনো ঘোষণা করা হয়নি।

এই নির্বাচন এমন এক সময় অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন দেশটি তীব্র গৃহযুদ্ধের মধ্যে রয়েছে। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানে নোবেলজয়ী অং সান সু চি ও তার ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার পরই এই সংঘাত শুরু হয়।

জান্তার নির্দেশে সু চির দলকে বিলুপ্ত করা হয়েছে, এছাড়া কয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে, ফলে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবুও জান্তা সরকার তাদের নিজেদের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছে, এই নির্বাচন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য নয়, বরং মিয়ানমারের জনগণের জন্যই আয়োজন করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত