১৯৪৭ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত জামায়াতের কারণে কারো ক্ষতি হলে ক্ষমা চাই: জামায়াত আমির

চরচা ডেস্ক
চরচা ডেস্ক
১৯৪৭ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত জামায়াতের কারণে কারো ক্ষতি হলে ক্ষমা চাই: জামায়াত আমির
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: বাসস

১৯৪৭ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত যারা জামায়াতের দ্বারা কষ্ট পেয়েছেন তাদের কাছে বিনা শর্তে ক্ষমা চেয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। স্থানীয় সময় বুধবার আমেরিকার নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ক্ষমা চান তিনি।

জামায়াত আমির বলেন, ‘জাতির কিছু কিছু লোক বলত, ধরে নিলাম আপনারা কোনো স্পেসিফিক কোনো ক্রাইম করেন নাই, তারপরও আপনাদের এই পলিটিক্যাল সিদ্ধান্তটা জাতি মেনে নেয় নাই। আপনারা তো একটা এপোলজি (ক্ষমা প্রার্থনা) দিলেও পারেন। এই এপোলজি কমপক্ষে তিনবার দিয়েছি। অধ্যাপক গোলাম আজম, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং আমিও দিয়েছি। কিছুদিন আগে এটিএম আজহার যখন জেল থেকে মুক্তি পেলেন তখনও বলেছি। শুধু একাত্তর না, ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু করে জামায়াতে ইসলামীর দ্বারা কেউ যদি কোনো কষ্ট পান, কারও কোনো ক্ষতি হয়ে থাকে, আমি সব ব্যক্তি এবং সংগঠনের পক্ষে নিঃশর্তে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই, আপনারা আমাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।’

শফিকুর রহমান বলেন, ‘আজকের দিন পর্যন্ত; আজকের দিন পর্যন্ত আমরা ভুল করি নাই একথা বলব কীভাবে। আমরা মানুষ, আমাদের সংগঠন একটা মানুষের সংগঠন, আমাদের ১০০টার মধ্যে ৯৯টা সিদ্ধান্ত সঠিক, একটা তো বেঠিক হতে পারে। সেই বেঠিক একটা সিদ্ধান্তের জন্য জাতির ক্ষতি হতে পারে। সেইক্ষেত্রে আমার কোনো সিদ্ধান্তের জন্য যদি জাতির ক্ষতি হয় তাহলে আমার মাফ চাইতে অসুবিধা কোথায়।’

জামায়াত আমির বলেন, ‘এখন মাফ চাওয়ার পর বলে, এই ল্যাঙ্গুয়েজে (ভাষা) চাইলে হবে না, ওই ল্যাঙ্গুয়েজে চাইতে হবে। আরেহ বাবা... এ আরেক যন্ত্রণা। বিনাশর্তে মাফ চাইলাম, কোনো শর্তও দিলাম না। তারপরে আর বাকি থাকলো কোনটা, এইটা তো বুঝি না। আজকে আবার একদম প্রকাশ্যে বলে দিলাম— ৪৭ থেকে শুরু করে ২০২৫ সালের ২২ অক্টোবর পর্যন্ত আমাদের দ্বারা যে যেখানে যত কষ্ট পেয়েছেন, যারা কষ্ট পেয়েছেন তাদের কাছে মাফ চাই। এটা গোটা জাতি হলেও চাই, ব্যক্তি হলেও চাই। কোনো অসুবিধা নেই। একথা আমি কোনো দিন বলি নাই, আমার কোনো সহকর্মী বলেন নাই, আমার কোনো সিনিয়র বলেন নাই যে, আমরা সকল ভুলের ঊর্ধ্বে।’

শফিকুর রহমান বলেন, ‘কোনো দল যদি মনে করে তারা সকল ভুলের ঊর্ধ্বে, অবশ্যই জাতি এটা মানবে না। আমাদেরটা মানবে কেন। আমাদের যত ভুল হয়েছে জানা-অজানা, এগুলো যারা শুধরে দিয়েছেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আর কিছু বলার আছে বলেন? দিস ইস ভেরি ক্লিয়ার অ্যান্ড লাউড।’

জামায়াত আমির বলেন, ‘এরপর বলবে শফিকুর রহমান নিউইয়র্কে গিয়ে ক্ষমা চাইছেন, দেশের বুকে ক্ষমা চায়নি। আমি দেশেও ক্ষমা চেয়েছি, আমার মুরুব্বিরাও চেয়েছে, এখানেও চাইলাম, যখনই সুযোগ পাইব তখনই চাইব।’

শফিকুর রহমান বলেন, ‘অনেকেই আবার বলে, আমাদের একটা দল আছে, যারা বেশি বেশি ক্ষমা চায়। ক্ষমা চাওয়াও অপরাধ তাহলে। শুধু একাত্তরেই ভুল করেছি, আর করি নাই? যারা আমাদের ক্ষমা চাইতে বলে, তারা ফেরেশতার দল? আমরা অন্যদের সম্পর্কে প্রশ্নগুলো এই কারণে তুলি না যে, অতীতের প্রশ্ন যত তোলা হবে, জাতি তত বিভক্ত হবে।’

সম্পর্কিত