পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৮ বছর, পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবি

চরচা ডেস্ক
চরচা ডেস্ক
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৮ বছর, পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবি
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৮তম বর্ষপূর্তিতে চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা ছবি: চরচা

দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে। চুক্তির ২৮তম বর্ষপূর্তিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান বক্তারা।

গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন’-এর উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে পাহাড়ের সমস্যা শান্তিপূর্ণ ও রাজনৈতিকভাবে সমাধান করা জরুরি। পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ-১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন।

সংবাদ সম্মেলনটি পরিচালনা করেন সংগঠনের সদস্য দীপায়ন খীসা এবং সভাপতিত্ব করেন যুগ্ম সমন্বয়কারী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক খাইরুল ইসলাম চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের সদস্য প্রণব কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতারা।

কার্যক্রমে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বহু ভাষাভাষী ও আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল হলেও স্বাধীনতার পর সংবিধানে তাদের পরিচয় অস্বীকার করা হয়। এই ঐতিহাসিক ভুলই দীর্ঘ সংঘাতের জন্ম দেয়। ২৮ বছর আগে স্বাক্ষরিত চুক্তি সেই ভুল সংশোধনের আশা জাগালেও দীর্ঘ সময় ধরে চুক্তির মূল ধারা বাস্তবায়িত হয়নি।

ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন ও টাস্কফোর্সের কার্যক্রম বারবার স্থগিত হওয়া, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের শিক্ষক নিয়োগে সাম্প্রদায়িক বাধা- সবই বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার ব্যর্থতার উদাহরণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, ২৪ জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর বৈষম্যহীন দেশ গড়ার অঙ্গীকার করা হলেও আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্ব কোথাও প্রতিফলিত হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, চুক্তির আগে ও পরে পার্বত্য চট্টগ্রামে কার্যত সামরিক শাসনের বাস্তবতা বিদ্যমান রয়েছে। তার মতে, চুক্তি বাস্তবায়নে সেনাবাহিনীর গঠনমূলক ভূমিকা এবং সরকারের দৃশ্যমান পদক্ষেপ এখন জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে তিন দফা দাবি তুলে ধরা হয়-

১. চুক্তি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট পক্ষ ও রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে দ্রুত জাতীয় সংলাপ আয়োজন;

২. একটি কার্যকর রোডম্যাপ ঘোষণা এবং বাস্তবায়নে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ;

৩. আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে পার্বত্য চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত করা।

সম্পর্কিত