চরচা ডেস্ক

সম্প্রতি থাইল্যান্ডের রাজা হিসেবে প্রথমবারের মতো চীন সফর করেছেন মহা ভাজিরালংকর্ন। সফরের আগের দিনই চীনকে একটি বিশেষ উপহার পাঠানো হয়েছে।
তিন বছরের আইনি লড়াই শেষে চীনা অপরাধ জগতের গডফাদার শি ঝিঝিয়াংকে বেইজিংয়ের কাছে প্রত্যর্পণ করেছে ব্যাংকক।
থাইল্যান্ড দীর্ঘদিন ধরেই আমেরিকা ও চীনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করলেও সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে দ্য ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
গত কয়েক মাসে ব্যাংককের এক আর্ট গ্যালারি থেকে তিব্বতি, উইঘুর ও হংকংয়ের শিল্পকর্ম সরিয়ে ফেলা হয়। এর আগে ৪০ জন উইঘুর আশ্রয়প্রার্থীকে চীনে ফেরত পাঠায় থাইল্যান্ড। এ সিদ্ধান্ত চীনের প্রতি থাইল্যান্ডের ঝোঁকের প্রবণতা আরও স্পষ্ট করেছে।
ওই ৪০ উইঘুরকে আমেরিকা, কানাডা ও কয়েকটি দেশ আশ্রয় দিতে চেয়েছিল। সে সময় দীর্ঘদিনের মিত্র থাইল্যান্ডের এই সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছিল আমেরিকা। অবশ্য থাইল্যান্ডের ভাষ্য ছিল, উইঘুরদের অন্যদেশে পাঠালে তাদের দেশ নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ত।
দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, এই পদক্ষেপগুলো শক্তিশালী প্রতিবেশির চাপের ফলও হতে পারে। তবে ব্যবসায়িক স্বার্থও এখানে বড় ভূমিকা রাখছে। চীনা কোম্পানিগুলো থাইল্যান্ডে শিল্পপার্ক থেকে শুরু করে হাই-স্পিড রেললাইন পর্যন্ত নানা অবকাঠামো প্রকল্পে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করছে।
নরেসুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের পল চেম্বার্সের সাম্প্রতিক এক গবেষণা অনুযায়ী, ২০২৩ সালে পর্যটন ও বিনিয়োগ বাড়াতে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করে তৎকালীন ক্ষমতাসীন ফিউ থাই দল। ২০২৫ সালের প্রথম দশ মাসে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১২২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা গত বছরের মোট ১১৬ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে বেশি।
থাইল্যান্ডের আন্তর্জাতিক পর্যটকদের অন্যতম প্রধান উৎস হলো চীন। থাইল্যান্ডের জিডিপির ১২ শতাংশ এবং কর্মসংস্থানের পাঁচভাগের এক ভাগই নির্ভর করে পর্যটনের ওপর।
গত বছর থাইল্যান্ডের ৩৫৫ লাখ বিদেশি পর্যটকের মধ্যে ৬৭ লাখই ছিলেন চীনা। কিন্তু থাইল্যান্ড থেকে চীনা সেলিব্রিটি ওয়াং জিংকে মিয়ানমারের একটি স্ক্যাম চক্রে পাচার করার কারণে দেশটির পর্যটকের সংখ্যা দ্রুত কমে যায়। চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে চীনা পর্যটকের সংখ্যা ৩৪ লাখে নেমে আসে।
থাইল্যান্ডে এসে বিপদে পড়তে হতে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে অনেক চীনা নাগরিক। এরপর এই প্রতারক চক্র প্রতিহত করতে চীনের সঙ্গে একযোগে কাজ শুরু করার কথা জানায় থাই সরকার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার দিকটিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
২০১৪ সালের অভ্যুত্থানের পর থাইল্যান্ডকে সামরিক অর্থায়ন কমিয়ে দেয় আমেরিকা এবং যৌথ মহড়াও কমায়।
সেই সুযোগ কাজে লাগায় চীন। গণতন্ত্র বা মানবাধিকার নিয়ে কোনো মন্তব্য ছাড়াই পশ্চিমাদের তুলনায় কম দামে থাইল্যান্ডকে সাবমেরিন, ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানসহ নানা সরঞ্জাম দেয় তারা।
অস্ট্রেলিয়ার থিংক ট্যাঙ্ক লোই ইন্সটিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০২২ পর্যন্ত চীনের কাছ থেকে ৩৯৪ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনেছে থাইল্যান্ড। এই সময়ে আমেরিকা থেকে ২০৭ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনেছে। এরপর চীনের কাছ থেকে অ্যান্টি শিপ মিসাইল, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং সাঁজোয়া যানও কিনছে থাইল্যান্ড।
এদিকে আমেরিকার সামরিক সহায়তা আরও কমে গেছে চলতি বছরে মাত্র ৮ মিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে।
তবে থাইল্যান্ড এখনো আমেরিকাকে পুরোপুরি পরিত্যাগ করেনি। ১৮৩৩ সালের ‘অ্যামিটি অ্যান্ড কমার্স’ চুক্তির মাধ্যমে শুরু হওয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখনো টিকে আছে।
প্রতি বছর দুই দেশ ‘কোবরা গোল্ড’ নামে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বহুজাতিক সামরিক মহড়া আয়োজন করে, যেখানে প্রায় ৩০টি দেশ অংশ নেয় এবং হাজার হাজার মার্কিন সেনা উপস্থিত থাকে। আমেরিকা এখনো থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার, যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি এতে প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অবশ্য চীনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা নিয়ে উদ্বেগও বাড়ছে থাইল্যান্ডে। সস্তা চীনা পণ্যের চাপে স্থানীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে কারখানা বন্ধ ও চাকরি হারানোর ঘটনা বাড়ছে।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী ১ জানুয়ারি থেকে কমমূল্যের পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন থাই অর্থমন্ত্রী এক্নিতি নিতিথানপ্রাপাস।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনের কাছাকাছি যাওয়া থাইল্যান্ডের জন্য লাভজনক হলেও এতে দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি রয়েছে।

সম্প্রতি থাইল্যান্ডের রাজা হিসেবে প্রথমবারের মতো চীন সফর করেছেন মহা ভাজিরালংকর্ন। সফরের আগের দিনই চীনকে একটি বিশেষ উপহার পাঠানো হয়েছে।
তিন বছরের আইনি লড়াই শেষে চীনা অপরাধ জগতের গডফাদার শি ঝিঝিয়াংকে বেইজিংয়ের কাছে প্রত্যর্পণ করেছে ব্যাংকক।
থাইল্যান্ড দীর্ঘদিন ধরেই আমেরিকা ও চীনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করলেও সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে দ্য ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
গত কয়েক মাসে ব্যাংককের এক আর্ট গ্যালারি থেকে তিব্বতি, উইঘুর ও হংকংয়ের শিল্পকর্ম সরিয়ে ফেলা হয়। এর আগে ৪০ জন উইঘুর আশ্রয়প্রার্থীকে চীনে ফেরত পাঠায় থাইল্যান্ড। এ সিদ্ধান্ত চীনের প্রতি থাইল্যান্ডের ঝোঁকের প্রবণতা আরও স্পষ্ট করেছে।
ওই ৪০ উইঘুরকে আমেরিকা, কানাডা ও কয়েকটি দেশ আশ্রয় দিতে চেয়েছিল। সে সময় দীর্ঘদিনের মিত্র থাইল্যান্ডের এই সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছিল আমেরিকা। অবশ্য থাইল্যান্ডের ভাষ্য ছিল, উইঘুরদের অন্যদেশে পাঠালে তাদের দেশ নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ত।
দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, এই পদক্ষেপগুলো শক্তিশালী প্রতিবেশির চাপের ফলও হতে পারে। তবে ব্যবসায়িক স্বার্থও এখানে বড় ভূমিকা রাখছে। চীনা কোম্পানিগুলো থাইল্যান্ডে শিল্পপার্ক থেকে শুরু করে হাই-স্পিড রেললাইন পর্যন্ত নানা অবকাঠামো প্রকল্পে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করছে।
নরেসুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের পল চেম্বার্সের সাম্প্রতিক এক গবেষণা অনুযায়ী, ২০২৩ সালে পর্যটন ও বিনিয়োগ বাড়াতে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করে তৎকালীন ক্ষমতাসীন ফিউ থাই দল। ২০২৫ সালের প্রথম দশ মাসে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১২২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা গত বছরের মোট ১১৬ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে বেশি।
থাইল্যান্ডের আন্তর্জাতিক পর্যটকদের অন্যতম প্রধান উৎস হলো চীন। থাইল্যান্ডের জিডিপির ১২ শতাংশ এবং কর্মসংস্থানের পাঁচভাগের এক ভাগই নির্ভর করে পর্যটনের ওপর।
গত বছর থাইল্যান্ডের ৩৫৫ লাখ বিদেশি পর্যটকের মধ্যে ৬৭ লাখই ছিলেন চীনা। কিন্তু থাইল্যান্ড থেকে চীনা সেলিব্রিটি ওয়াং জিংকে মিয়ানমারের একটি স্ক্যাম চক্রে পাচার করার কারণে দেশটির পর্যটকের সংখ্যা দ্রুত কমে যায়। চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে চীনা পর্যটকের সংখ্যা ৩৪ লাখে নেমে আসে।
থাইল্যান্ডে এসে বিপদে পড়তে হতে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে অনেক চীনা নাগরিক। এরপর এই প্রতারক চক্র প্রতিহত করতে চীনের সঙ্গে একযোগে কাজ শুরু করার কথা জানায় থাই সরকার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার দিকটিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
২০১৪ সালের অভ্যুত্থানের পর থাইল্যান্ডকে সামরিক অর্থায়ন কমিয়ে দেয় আমেরিকা এবং যৌথ মহড়াও কমায়।
সেই সুযোগ কাজে লাগায় চীন। গণতন্ত্র বা মানবাধিকার নিয়ে কোনো মন্তব্য ছাড়াই পশ্চিমাদের তুলনায় কম দামে থাইল্যান্ডকে সাবমেরিন, ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানসহ নানা সরঞ্জাম দেয় তারা।
অস্ট্রেলিয়ার থিংক ট্যাঙ্ক লোই ইন্সটিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০২২ পর্যন্ত চীনের কাছ থেকে ৩৯৪ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনেছে থাইল্যান্ড। এই সময়ে আমেরিকা থেকে ২০৭ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনেছে। এরপর চীনের কাছ থেকে অ্যান্টি শিপ মিসাইল, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং সাঁজোয়া যানও কিনছে থাইল্যান্ড।
এদিকে আমেরিকার সামরিক সহায়তা আরও কমে গেছে চলতি বছরে মাত্র ৮ মিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে।
তবে থাইল্যান্ড এখনো আমেরিকাকে পুরোপুরি পরিত্যাগ করেনি। ১৮৩৩ সালের ‘অ্যামিটি অ্যান্ড কমার্স’ চুক্তির মাধ্যমে শুরু হওয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখনো টিকে আছে।
প্রতি বছর দুই দেশ ‘কোবরা গোল্ড’ নামে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বহুজাতিক সামরিক মহড়া আয়োজন করে, যেখানে প্রায় ৩০টি দেশ অংশ নেয় এবং হাজার হাজার মার্কিন সেনা উপস্থিত থাকে। আমেরিকা এখনো থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার, যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি এতে প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অবশ্য চীনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা নিয়ে উদ্বেগও বাড়ছে থাইল্যান্ডে। সস্তা চীনা পণ্যের চাপে স্থানীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে কারখানা বন্ধ ও চাকরি হারানোর ঘটনা বাড়ছে।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী ১ জানুয়ারি থেকে কমমূল্যের পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন থাই অর্থমন্ত্রী এক্নিতি নিতিথানপ্রাপাস।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনের কাছাকাছি যাওয়া থাইল্যান্ডের জন্য লাভজনক হলেও এতে দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি রয়েছে।

ফ্রান্স ও ইউক্রেনের রাফাল চুক্তি কেবল অস্ত্র বিক্রির ঘটনা নয়; এটি ইউরোপ, এশিয়া ও বৈশ্বিক কৌশলগত পরিমণ্ডলে শক্তির পুনর্গঠনের প্রতীক। তাৎক্ষণিক সামরিক সুবিধা সীমিত হলেও, দীর্ঘমেয়াদে এই চুক্তি ইউরোপীয় নেতৃত্ব, আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্য এবং ভারতের প্রতিরক্ষা উচ্চাকাঙ্ক্ষার ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।