চরচা প্রতিবেদক

১৭ বছরের নির্বাসন শেষ!
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পা রাখলেন দেশের মাটিতে। তাকে বহনকারী বিমানটি যখন বাংলাদেশের আকাশসীমায় ঢুকল, ঠিক তখনই নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট—“৬ হাজার ৩১৪ দিন পর বাংলাদেশের আকাশে।’ সোশ্যাল মিডিয়াতে তারেক রহমানের নির্বাসনের আরও একটি হিসাবে সবার চোখ আটকে যেতেই পারে—“৫৫ কোটি সেকেন্ড পর বাংলাদেশের মাটিতে তারেক রহমান।” ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে লন্ডনে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়েছিল, সেই নির্বাসন শেষে ফেরার মহিমা এতটাই যে সময়ের হিসেবকে নানা এককে পরিমাপ করাটাও যেন আনন্দ আর স্বস্তিরই বহিঃপ্রকাশ।
এই ১৭ বছর তিনি লন্ডনে বসেই বাবার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপির হাল ধরেছিলেন। নেতাকর্মীদের খোঁজখবর রেখেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে তারেক রহমানের যেকোনো বক্তৃতা–বিবৃতি দেশের সংবাদমাধ্যমে প্রচাররের ওপর নিষেোজ্ঞা আরোপ করেছিল। সে কারণেই, মূল ধারার সংবাদমাধ্যমে ১৫ বছর অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। মা খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় যখন কারাগারে পাঠানো হয়, তখন রীতিমতো নেতৃত্বশূন্য বিএনপি। কিন্তু নির্বাসনে বসেও তারেক বিএনপির এই দুর্দিনে রেখেছেন বলিষ্ঠ ভূমিকা।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তারেক মনে হয়েছিল তারেক রহমান বোধহয় দ্রুতই ফিরবেন। হাসিনার পতনের পর তারেকের বাংলাদেশে ফেরা ছিল দেশের মানুষের চাওয়া। কিন্তু সেটা হয়নি। তারেক দ্রুততার সঙ্গে ফেরেননি। কেন তিনি ফিরছেন না, তা নিয়ে মানুষ নিজেদের মতো করেই হিসেব–নিকেশ সাজিয়েছে। এক ধরনের ধোঁয়াশাও তৈরি হয়েছিল। গত জানুয়ারিতে খালেদা জিয়া যখন চিকিৎসার জন্য লন্ডন গেলেন, তখন পুরো ব্যাপারটি নিয়ে জল্পনা–কল্পনা তুঙ্গে ওঠে। বিএনপি থেকে তখন বারবার বলা হয়েছে, “তারেক রহমান খুব শিগগিরই ফিরবেন।” কিন্তু সেই সময়টা কোনোভাবেই আসছিল না। সর্বশেষ গত মাসে খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তারেক কবে ফিরবেন—এ নিয়ে আগ্রহ ও কৌতূহল তুঙ্গে ওঠে। কিন্তু তার একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ফেরা নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করেছিল। তাঁর স্ট্যাটাসটি নানা প্রশ্ন তৈরি করেছিল। তবে ওসমান হাদি যেদিন গুলিবিদ্ধ হলেন, সেদিন রাতেই তারেক রহমান নিজের মুখেই জানিয়ে দেন ফেরার তারিখ। তাঁর এই ঘোষণা সব জল্পনা–কল্পনার আপাত সমাপ্তি ডেকেছিল।
তারেক রহমান এমন এক বাংলাদেশে নির্বাসন শেষে ফিরলেন, যখন এই রাষ্ট্র এক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ যে ধরনের সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল এখনকার সংকট অনেকটা তেমনই। রাষ্ট্রকাঠামো ভঙ্গুর ও বিপর্যস্ত। দেশে চলছে বড় ধরনের রাজনৈতিক শূন্যতা। সুযোগ–সন্ধানী বিভিন্ন গোষ্ঠী নানা কিছুতে দেশকে অস্থিতিশীল করে রেখেছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্মরণকালের সবচেয়ে বাজে—এই সময় তারেকের ফেরাটা মানুষকে আশান্বিত করেছে। সেই সঙ্গে তারেক রহমানের জন্যও চ্যালেঞ্জটা বহুগুণে বেড়ে গেছে। বিএনপির রাজনীতিতে নব্বইয়ের দশকের শুরুতে প্রবেশ, দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করলেও ১৭ বছর যা করেছেন, সেটি ছিল আক্ষরিক অর্থেই রাজনীতির ‘কোয়ারেন্টিন’। তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সত্যিকার অর্থেই আজ থেকে শুরু হবে মূল পরীক্ষা। সেটি বিএনপির প্রধান হিসেবে যেমন, নির্বাচনের পর তিনি যদি প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণ করেন তখনও।
তার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ যেটি, তা হলো সাম্প্রতিককালে দেশে যে এক ধরনের ডানপন্থী রাজনীতি ও মতবাদের যে বাড়বাড়ন্ত, সেটির বিপরীতে বিএনপির মধ্যপন্থী রাজনীতিকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলা। উদার গণতান্ত্রিক মধ্যপন্থী রাজনীতিকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য যারা কল্যাণকর মনে করেন, এই মুহূর্তে নেতা হিসেবে তারেক রহমানই একমাত্র বিকল্প। দল হিসেবে বিএনপি। তাই রাজনীতির মাঠে তাঁর দায়িত্বের মাত্রাটাও অনেক বেশি। উগ্র ডানপন্থা যদি শক্তিশালী হয়, তাহলে সেটি যে রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতির কারণ, সেটি সম্প্রতি ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে যে অস্থিতিশীলতা, সেটি দিয়ে বোঝা গেছে।
এমন একটা পরিস্থিতিতে তারেকের ফেরার ঘটনাটি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিডিয়াতে গুরুত্ব পেয়েছে ভালো মতোই। রয়টার্সের মতো আন্তর্জাতিক মিডিয়া তো তারেকের ফেরার খবর দিতে গিয়ে তাঁকে বাংলাদেশের ‘সম্ভাব্য পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবেও বলছে। এমনকি আগস্টে হাসিনা সরকারের পতনের পর যে ভারত বাংলাদেশের প্রতি ‘যথেষ্ট বিরূপ’, সেই ভারতের মিডিয়াও তারেকের ফেরাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে।

১৭ বছরের নির্বাসন শেষ!
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পা রাখলেন দেশের মাটিতে। তাকে বহনকারী বিমানটি যখন বাংলাদেশের আকাশসীমায় ঢুকল, ঠিক তখনই নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট—“৬ হাজার ৩১৪ দিন পর বাংলাদেশের আকাশে।’ সোশ্যাল মিডিয়াতে তারেক রহমানের নির্বাসনের আরও একটি হিসাবে সবার চোখ আটকে যেতেই পারে—“৫৫ কোটি সেকেন্ড পর বাংলাদেশের মাটিতে তারেক রহমান।” ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে লন্ডনে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়েছিল, সেই নির্বাসন শেষে ফেরার মহিমা এতটাই যে সময়ের হিসেবকে নানা এককে পরিমাপ করাটাও যেন আনন্দ আর স্বস্তিরই বহিঃপ্রকাশ।
এই ১৭ বছর তিনি লন্ডনে বসেই বাবার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপির হাল ধরেছিলেন। নেতাকর্মীদের খোঁজখবর রেখেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে তারেক রহমানের যেকোনো বক্তৃতা–বিবৃতি দেশের সংবাদমাধ্যমে প্রচাররের ওপর নিষেোজ্ঞা আরোপ করেছিল। সে কারণেই, মূল ধারার সংবাদমাধ্যমে ১৫ বছর অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। মা খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় যখন কারাগারে পাঠানো হয়, তখন রীতিমতো নেতৃত্বশূন্য বিএনপি। কিন্তু নির্বাসনে বসেও তারেক বিএনপির এই দুর্দিনে রেখেছেন বলিষ্ঠ ভূমিকা।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তারেক মনে হয়েছিল তারেক রহমান বোধহয় দ্রুতই ফিরবেন। হাসিনার পতনের পর তারেকের বাংলাদেশে ফেরা ছিল দেশের মানুষের চাওয়া। কিন্তু সেটা হয়নি। তারেক দ্রুততার সঙ্গে ফেরেননি। কেন তিনি ফিরছেন না, তা নিয়ে মানুষ নিজেদের মতো করেই হিসেব–নিকেশ সাজিয়েছে। এক ধরনের ধোঁয়াশাও তৈরি হয়েছিল। গত জানুয়ারিতে খালেদা জিয়া যখন চিকিৎসার জন্য লন্ডন গেলেন, তখন পুরো ব্যাপারটি নিয়ে জল্পনা–কল্পনা তুঙ্গে ওঠে। বিএনপি থেকে তখন বারবার বলা হয়েছে, “তারেক রহমান খুব শিগগিরই ফিরবেন।” কিন্তু সেই সময়টা কোনোভাবেই আসছিল না। সর্বশেষ গত মাসে খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তারেক কবে ফিরবেন—এ নিয়ে আগ্রহ ও কৌতূহল তুঙ্গে ওঠে। কিন্তু তার একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ফেরা নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করেছিল। তাঁর স্ট্যাটাসটি নানা প্রশ্ন তৈরি করেছিল। তবে ওসমান হাদি যেদিন গুলিবিদ্ধ হলেন, সেদিন রাতেই তারেক রহমান নিজের মুখেই জানিয়ে দেন ফেরার তারিখ। তাঁর এই ঘোষণা সব জল্পনা–কল্পনার আপাত সমাপ্তি ডেকেছিল।
তারেক রহমান এমন এক বাংলাদেশে নির্বাসন শেষে ফিরলেন, যখন এই রাষ্ট্র এক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ যে ধরনের সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল এখনকার সংকট অনেকটা তেমনই। রাষ্ট্রকাঠামো ভঙ্গুর ও বিপর্যস্ত। দেশে চলছে বড় ধরনের রাজনৈতিক শূন্যতা। সুযোগ–সন্ধানী বিভিন্ন গোষ্ঠী নানা কিছুতে দেশকে অস্থিতিশীল করে রেখেছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্মরণকালের সবচেয়ে বাজে—এই সময় তারেকের ফেরাটা মানুষকে আশান্বিত করেছে। সেই সঙ্গে তারেক রহমানের জন্যও চ্যালেঞ্জটা বহুগুণে বেড়ে গেছে। বিএনপির রাজনীতিতে নব্বইয়ের দশকের শুরুতে প্রবেশ, দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করলেও ১৭ বছর যা করেছেন, সেটি ছিল আক্ষরিক অর্থেই রাজনীতির ‘কোয়ারেন্টিন’। তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সত্যিকার অর্থেই আজ থেকে শুরু হবে মূল পরীক্ষা। সেটি বিএনপির প্রধান হিসেবে যেমন, নির্বাচনের পর তিনি যদি প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণ করেন তখনও।
তার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ যেটি, তা হলো সাম্প্রতিককালে দেশে যে এক ধরনের ডানপন্থী রাজনীতি ও মতবাদের যে বাড়বাড়ন্ত, সেটির বিপরীতে বিএনপির মধ্যপন্থী রাজনীতিকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলা। উদার গণতান্ত্রিক মধ্যপন্থী রাজনীতিকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য যারা কল্যাণকর মনে করেন, এই মুহূর্তে নেতা হিসেবে তারেক রহমানই একমাত্র বিকল্প। দল হিসেবে বিএনপি। তাই রাজনীতির মাঠে তাঁর দায়িত্বের মাত্রাটাও অনেক বেশি। উগ্র ডানপন্থা যদি শক্তিশালী হয়, তাহলে সেটি যে রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতির কারণ, সেটি সম্প্রতি ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে যে অস্থিতিশীলতা, সেটি দিয়ে বোঝা গেছে।
এমন একটা পরিস্থিতিতে তারেকের ফেরার ঘটনাটি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিডিয়াতে গুরুত্ব পেয়েছে ভালো মতোই। রয়টার্সের মতো আন্তর্জাতিক মিডিয়া তো তারেকের ফেরার খবর দিতে গিয়ে তাঁকে বাংলাদেশের ‘সম্ভাব্য পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবেও বলছে। এমনকি আগস্টে হাসিনা সরকারের পতনের পর যে ভারত বাংলাদেশের প্রতি ‘যথেষ্ট বিরূপ’, সেই ভারতের মিডিয়াও তারেকের ফেরাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে।