তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে তৃণমূলে উচ্ছ্বাস

চরচা প্রতিবেদক
চরচা প্রতিবেদক
তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে তৃণমূলে উচ্ছ্বাস
জনতার সঙ্গে তারেক রহমান। ছবি: ফেসবুক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন ঘিরে জনমনে ফুটে উঠেছিল তুমুল আগ্রহ। আর সেই আগ্রহের পারদের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন এই নেতা। দেশে এসেই প্রথমে যান জনতার সামনে।

“এতদিন পর দলের প্রধান নেতা দেশে ফিরছেন, বাড়িতে কীভাবে বসে থাকা যায়। এলাকার সবাই মিলে বাস ভাড়া করে আগেভাগেই ঢাকা চলে আসছি।”

এভাবেই বলছিলেন জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলা বিএনপির কর্মী আনিসুর রহমান (৪২)।

অন্যদিকে, শেরপুরের আজমল আলী। দলীয় কোনো পদে নেই। কিন্তু পারিবারিকভাবে বিএনপির সমর্থক। তিনি বলেন, “কিছুদিন আগে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার একটি চায়ের দোকানে ঢাকা যাওয়ার কথা হচ্ছিল। সেখানে অনেকে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করে, তার মধ্যে আমিও ছিলাম। পরে সবার সঙ্গে ভাড়া করা বাসে ঢাকায় আসি। ভোরের আগেই ঢাকায় পৌঁছায়। পরে সবাই তারেক রহমানকে দেখতে বের হয়েছিলাম।”

শুধু তারা দুজনেই নন, ১৭ বছর পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা উপলক্ষে সারা দেশ থেকে হাজারো নেতাকর্মী রাজধানী ঢাকায় আসেন।

আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) কুড়িল বিশ্বরোড এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ১০ জনের বেশি নেতাকর্মীর সঙ্গে চরচা প্রতিবেদকের কথা হয়েছে।

নেতাকর্মীরা জানান, দীর্ঘদিন পর বিএনপির সবচেয়ে খুশির দিন আজ। তাদের মূল নেতা দেশে ফিরেছেন তাই ঢাকামুখী সবাই। জেলা-উপজেলার দলীয় ও ব্যক্তিগত অর্থায়নে তারা এসেছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া একনজর নেতাকে দেখার ইচ্ছা পূরণেও অনেকে এসেছেন। অন্যদিকে খাবার, ওয়াশরুম ও আবহাওয়া নিয়ে সমস্যার কথাও জানিয়েছেন তারা।

আনিসুর বলেন, “আমাদের উপজেলা থেকে অনেকগুলো বাস এসেছে। তবে আমরা এক বাসে ৫০ জনের মতো এসেছি। আমরা বুধবার সন্ধ্যার পর রওনা দিয়েছিলাম। ভোরের আগেই ঢাকায় পৌঁছায়। সকালে খুব শীত ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা কমেছে। এ ছাড়া খাওয়া এবং ওয়াশরুমের বেশি সমস্যা ছিল।”

জসিম মিয়া স্থানীয় বিএনপির লোকজনের সঙ্গে ঢাকায় এসেছেন। তিনি সেভাবে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। তবে বিএনপির রাজনীতি ও খালেদা জিয়াকে ভালো লাগে বলে জানান। তাই নিজের আগ্রহেই এলাকার বিএনপি নেতাকর্মীর সঙ্গে তিনি ঢাকায় এসেছেন। তিনি বলেন, “আমার যাওয়া–আসার জন্য কোনো টাকা দিতে হয়নি। যাদের সঙ্গে আসছি তারাই সব ব্যবস্থা করেছে।”

লালমনিরহাট সদরের পাশের একটি গ্রামের বাসিন্দা রহিম হোসেন। পারিবারিকভাবে বিএনপির রাজনীতির সমর্থক তিনি। রহিম বলেন, “আমাদের আসনের এমপি পদপ্রার্থী অনেকগুলো বাস ভাড়া করে দিয়েছেন। তার মধ্যে একটা বাসে আমরা এসেছি।”

লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রদলের সদস্য আল আমিন। তিনি বলেন, “দলীয়ভাবে সবার যাওয়া-আসার খরচ বহন করা হয়েছে। আমরা সবাই বুধবার মধ্যরাতেই ঢাকা পৌছায়। অনেকে বাসে ঘুমিয়ে ছিল। আবার অনেকে রাতেই ৩০০ ফিটের দিকে চলে যায়। সংবর্ধনার এলাকায় যাওয়া ও খাবারের জন্য অনেক স্বেচ্ছাসেবক ছিল। খুব বেশি অসুবিধা হয়নি।”

নাটোর থেকে জেলা ছাত্রদলের কর্মী নয়ন ইসলাম। তিনি জানান, জেলা থেকে ছাত্রদলের ৫টি বাস এসেছে। বাসসহ সব ব্যবস্থা করেছে একজন এমপি প্রার্থী। তিনি বলেন, “আমাদের রাজনীতির জন্য সবেচেয় আনন্দের দিন আজ। কারণ, বিএনপি ও তরুণদের নেতা দেশে ফিরেছে। এমন দিনে বাড়িতে থাকার কোনো মানেই হয় না। শেখ হাসিনার আমলে ভয়ে ভয়ে সেভাবে রাজনীতির কিছু করা যায়নি। এখন আমরা স্বাধীনভাবে রাজপথে হাঁটতে পারছি। আমার ছোট রাজনৈতিক জীবনে এটাই সবচেয়ে আনন্দের।”

সম্পর্কিত