চরচা ডেস্ক

ভারতের সৌরশক্তির দ্রুত প্রসারকে সাধারণত একটি বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হয়। তবে এই সাফল্যের সঙ্গে তৈরি হচ্ছে নতুন চ্যালেঞ্জ সৌর প্যানেল বর্জ্য এবং তার পরিবেশগত ঝুঁকি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক দশকে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম সৌরশক্তি উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হয়েছে। দেশটির জলবায়ু কৌশলের মূল কেন্দ্রে এখন নবায়নযোগ্য শক্তি। বিশাল সোলার পার্ক থেকে শুরু করে শহর ও গ্রামের ছাদে ছড়িয়ে পড়েছে সৌর প্যানেল। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ভরতুকি প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২৪ লাখ পরিবার সৌর বিদ্যুৎ গ্রহণ করেছে।
সৌরশক্তির প্রবৃদ্ধি কয়লার ওপর ভারতের নির্ভরতা কমিয়েছে। মোট এনার্জির মধ্যে সৌরশক্তির অবদান বর্তমানে ২০ শতাংশের বেশি। যদিও তাপবিদ্যুৎ ও অন্যান্য উৎস এখনও মোট ক্ষমতার অর্ধেকের বেশি যোগান দেয়, সৌরশক্তি দেশের পরিচ্ছন্ন শক্তির রূপান্তরকে দৃঢ় করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সৌর প্যানেলের বেশিরভাগ অংশই পুনর্ব্যবহারযোগ্য। তবে এতে সীসা, ক্যাডমিয়াম ও অন্যান্য বিষাক্ত ধাতু থাকে। এটি ভুলভাবে ফেললে বা অসুরক্ষিতভাবে ভাঙলে মাটি ও পানি দূষিত হতে পারে। সাধারণত একটি প্যানেল ২৫ বছর টিকে, এরপর তা অকেজো হয়ে যায়। কিন্তু ভারতের বর্তমান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও রিসাইক্লিং খাত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে।

সরকার ২০২২ সালে সৌর প্যানেলকে ‘ই-বর্জ্য’ নিয়মের আওতায় এনেছে। এর ফলে প্যানেলের আয়ু ফুরিয়ে গেলে সংরক্ষণ ও রিসাইক্লিং-এর দায়িত্ব উৎপাদনকারীর ওপর পড়ে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নিয়ম কার্যকর হওয়া এখনও অসম্পূর্ণ, বিশেষ করে ছোট আকারের বা ছাদে বসানো প্যানেলের ক্ষেত্রে।
একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ভারতের সৌর বর্জ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ১ লাখ টন। ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ৬ লাখ টনে পৌঁছাতে পারে। নয়াদিল্লিভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক কাউন্সিল অন এনার্জি, এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়াটার (সিইইডব্লিউ)-এর গবেষণা বলছে, ২০৪৭ সালের মধ্যে সৌর বর্জ্য ১ কোটি ১০ লাখ টনের বেশি হতে পারে। এর জন্য প্রায় ৩০০টি রিসাইক্লিং সেন্টার এবং ৪৭৮ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন।
সৌর প্যানেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক কোম্পানি এনার্জি কোম্পানি ‘টারগ্রে’-এর কর্মী রোহিত পাহওয়া বলেন, “বড় সোলার পার্কগুলো ২০১০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে তৈরি হয়েছে। সুতরাং আসল বর্জ্যের ঢেউ আসবে আরও ১০–১৫ বছরের মধ্যে।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সঠিক রিসাইক্লিং ব্যবস্থা গড়ে উঠলে এটি কেবল বর্জ্য নয়, বরং নতুন উপকরণের উৎসও হতে পারে। দক্ষ রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে প্যানেল তৈরির ৩৮ শতাংশ উপকরণ পুনঃউদ্ধার করা সম্ভব, যা খনি থেকে কাঁচামাল উত্তোলনের প্রয়োজন কমাবে এবং প্রায় ৩৭ মিলিয়ন টন কার্বন নিঃসরণ রোধ করবে।
ভারতে কাঁচামাল যেমন কাঁচ ও অ্যালুমিনিয়ামের বাজার আগে থেকেই রয়েছে। সিলিকন, রূপা ও তামা পুনঃব্যবহার করে নতুন প্যানেল বা অন্যান্য শিল্পে ব্যবহার করা সম্ভব। তবে বর্তমানে অধিকাংশ সৌর বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করা হয় সাধারণভাবে, যেখানে মূল্যবান ধাতুগুলো নষ্ট হয়ে যায়।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞ সাই ভাস্কর রেড্ডি নাক্কা বলেন, “সৌরশক্তি দুই দশকের জন্য পরিচ্ছন্ন শক্তি উপহার দেয়। কিন্তু রিসাইক্লিংয়ের সঠিক ব্যবস্থা না থাকলে আজকের পরিচ্ছন্ন শক্তি আগামীকালের বড় বর্জ্য সংকটে পরিণত হতে পারে।”
রোহিত পাহওয়া আরও যোগ করেন, “বর্জ্য যত বাড়বে, সেগুলো প্রক্রিয়াজাত করতে জানে এমন কোম্পানির চাহিদাও তত বাড়বে। দ্রুত একটি নিয়ন্ত্রিত ও স্বনির্ভর রিসাইক্লিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি।”
ভারতে সৌরশক্তির প্রসার ইতিবাচক হলেও, সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ছাড়া এটি দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশের জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

ভারতের সৌরশক্তির দ্রুত প্রসারকে সাধারণত একটি বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হয়। তবে এই সাফল্যের সঙ্গে তৈরি হচ্ছে নতুন চ্যালেঞ্জ সৌর প্যানেল বর্জ্য এবং তার পরিবেশগত ঝুঁকি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক দশকে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম সৌরশক্তি উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হয়েছে। দেশটির জলবায়ু কৌশলের মূল কেন্দ্রে এখন নবায়নযোগ্য শক্তি। বিশাল সোলার পার্ক থেকে শুরু করে শহর ও গ্রামের ছাদে ছড়িয়ে পড়েছে সৌর প্যানেল। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ভরতুকি প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২৪ লাখ পরিবার সৌর বিদ্যুৎ গ্রহণ করেছে।
সৌরশক্তির প্রবৃদ্ধি কয়লার ওপর ভারতের নির্ভরতা কমিয়েছে। মোট এনার্জির মধ্যে সৌরশক্তির অবদান বর্তমানে ২০ শতাংশের বেশি। যদিও তাপবিদ্যুৎ ও অন্যান্য উৎস এখনও মোট ক্ষমতার অর্ধেকের বেশি যোগান দেয়, সৌরশক্তি দেশের পরিচ্ছন্ন শক্তির রূপান্তরকে দৃঢ় করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সৌর প্যানেলের বেশিরভাগ অংশই পুনর্ব্যবহারযোগ্য। তবে এতে সীসা, ক্যাডমিয়াম ও অন্যান্য বিষাক্ত ধাতু থাকে। এটি ভুলভাবে ফেললে বা অসুরক্ষিতভাবে ভাঙলে মাটি ও পানি দূষিত হতে পারে। সাধারণত একটি প্যানেল ২৫ বছর টিকে, এরপর তা অকেজো হয়ে যায়। কিন্তু ভারতের বর্তমান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও রিসাইক্লিং খাত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে।

সরকার ২০২২ সালে সৌর প্যানেলকে ‘ই-বর্জ্য’ নিয়মের আওতায় এনেছে। এর ফলে প্যানেলের আয়ু ফুরিয়ে গেলে সংরক্ষণ ও রিসাইক্লিং-এর দায়িত্ব উৎপাদনকারীর ওপর পড়ে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নিয়ম কার্যকর হওয়া এখনও অসম্পূর্ণ, বিশেষ করে ছোট আকারের বা ছাদে বসানো প্যানেলের ক্ষেত্রে।
একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ভারতের সৌর বর্জ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ১ লাখ টন। ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ৬ লাখ টনে পৌঁছাতে পারে। নয়াদিল্লিভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক কাউন্সিল অন এনার্জি, এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়াটার (সিইইডব্লিউ)-এর গবেষণা বলছে, ২০৪৭ সালের মধ্যে সৌর বর্জ্য ১ কোটি ১০ লাখ টনের বেশি হতে পারে। এর জন্য প্রায় ৩০০টি রিসাইক্লিং সেন্টার এবং ৪৭৮ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন।
সৌর প্যানেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক কোম্পানি এনার্জি কোম্পানি ‘টারগ্রে’-এর কর্মী রোহিত পাহওয়া বলেন, “বড় সোলার পার্কগুলো ২০১০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে তৈরি হয়েছে। সুতরাং আসল বর্জ্যের ঢেউ আসবে আরও ১০–১৫ বছরের মধ্যে।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সঠিক রিসাইক্লিং ব্যবস্থা গড়ে উঠলে এটি কেবল বর্জ্য নয়, বরং নতুন উপকরণের উৎসও হতে পারে। দক্ষ রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে প্যানেল তৈরির ৩৮ শতাংশ উপকরণ পুনঃউদ্ধার করা সম্ভব, যা খনি থেকে কাঁচামাল উত্তোলনের প্রয়োজন কমাবে এবং প্রায় ৩৭ মিলিয়ন টন কার্বন নিঃসরণ রোধ করবে।
ভারতে কাঁচামাল যেমন কাঁচ ও অ্যালুমিনিয়ামের বাজার আগে থেকেই রয়েছে। সিলিকন, রূপা ও তামা পুনঃব্যবহার করে নতুন প্যানেল বা অন্যান্য শিল্পে ব্যবহার করা সম্ভব। তবে বর্তমানে অধিকাংশ সৌর বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করা হয় সাধারণভাবে, যেখানে মূল্যবান ধাতুগুলো নষ্ট হয়ে যায়।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞ সাই ভাস্কর রেড্ডি নাক্কা বলেন, “সৌরশক্তি দুই দশকের জন্য পরিচ্ছন্ন শক্তি উপহার দেয়। কিন্তু রিসাইক্লিংয়ের সঠিক ব্যবস্থা না থাকলে আজকের পরিচ্ছন্ন শক্তি আগামীকালের বড় বর্জ্য সংকটে পরিণত হতে পারে।”
রোহিত পাহওয়া আরও যোগ করেন, “বর্জ্য যত বাড়বে, সেগুলো প্রক্রিয়াজাত করতে জানে এমন কোম্পানির চাহিদাও তত বাড়বে। দ্রুত একটি নিয়ন্ত্রিত ও স্বনির্ভর রিসাইক্লিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি।”
ভারতে সৌরশক্তির প্রসার ইতিবাচক হলেও, সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ছাড়া এটি দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশের জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।