বৈশ্বিক সংঘাতে স্থিতিশীলতা মারাত্মক হুমকিতে: প্রধান উপদেষ্টা

চরচা ডেস্ক
চরচা ডেস্ক
বৈশ্বিক সংঘাতে স্থিতিশীলতা মারাত্মক হুমকিতে: প্রধান উপদেষ্টা
‘সোশ্যাল বিজনেস, ইয়ুথ অ্যান্ড টেকনোলজি’ শীর্ষক বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর

দীর্ঘস্থায়ী বৈশ্বিক সংঘাত শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নকে মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘সোশ্যাল বিজনেস, ইয়ুথ অ্যান্ড টেকনোলজি’ শীর্ষক এক সাইডলাইন বৈঠকের মূল প্রবন্ধে তিনি এ কথা বলেন।

বাসস জানিয়েছে, বৈঠকে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আজকের পৃথিবী এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। জলবায়ু পরিবর্তনের দাবানল পৃথিবীকে জ্বালিয়ে দিচ্ছে, বৈষম্য বাড়ছে, সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে। ন্যায়বিচার ও শান্তির জন্য সংগ্রাম আমাদের মানবিকতারই পরীক্ষা করছে।’

তিনি বলেন, ‘এই সংকটগুলো আলাদা নয়, পরস্পরের সঙ্গে জড়িত সূতার মতো একে অপরকে টেনে পুরো ব্যবস্থাকেই নাড়িয়ে দিচ্ছে। এটিকে মেরামত করার শক্তি অতীতে ছিল না, তা লুকিয়ে আছে আমাদের কল্পিত ভবিষ্যতে—এবং আজ এখানে আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব তাতেই।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যুদ্ধ ও বাস্তুচ্যুতি-সীমান্ত অতিক্রম করে অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করছে, খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলছে এবং অসংখ্য মানুষের জীবন ছিন্নভিন্ন করছে। এ পরিস্থিতিতে পুরনো ব্যবস্থায় সমাধান যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন নতুন কূটনীতি, গভীরতর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও টেকসই উন্নয়নে সমষ্টিগত প্রতিশ্রুতি।’

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশসহ বহু দেশ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়েও স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এর সঙ্গে রয়েছে ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া, জলবায়ু বিপর্যয়ের ঘনঘন আঘাত সামলানো এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা মোকাবিলা করা।’

তিনি বলেন, ‘এমন প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের বাজেট সংকোচন বা উন্নয়ন সহায়তা হ্রাস করা হবে বিপরীতমুখী পদক্ষেপ। বরং আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানো, কারিগরি সহায়তা প্রদান এবং ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য ন্যায়সঙ্গত উত্তরণের নিশ্চয়তা দেওয়া জরুরি।’

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বর্তমান সভ্যতা সীমাহীন ভোগ, শোষণ ও সঞ্চয়ের ধ্বংসাত্মক পথে হাঁটছে, যা মানবজাতির টিকে থাকার ভিত্তি-পৃথিবীকেই ঝুঁকির মুখে ফেলছে। এজন্য প্রয়োজন নতুন সভ্যতা, যা লোভ নয়, বরং মানবিক ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ সমাধানের অঙ্গীকারে পরিচালিত হবে।’

তিনি বলেন, ‘তরুণদের নেতৃত্ব দিতে হবে আজই, কাল নয়। বড় স্বপ্ন দেখ, তবে তা বাস্তবায়নে সচেতন পদক্ষেপ নাও।’

সম্পর্কিত