“আমরা সবাই হাদি হব, গুলির মুখে কথা কই”

“আমরা সবাই হাদি হব, গুলির মুখে কথা কই”
হাদি হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ। ছবি: চরচা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বাদ জুমা চাকসুর ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে শুরু হয়ে সোহরাওয়ার্দী মোড় হয়ে জিরো পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়।

মিছিলে হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উসকানি ও অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানানো হয় এবং হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়।

মিছিলে শিক্ষার্থীদের “নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার”, “এই মুহূর্তে দরকার সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার”, “বিচার বিচার বিচার চাই, হাদি হত্যার বিচার চাই”, “ইনকিলাব ইনকিলাব”, “দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা, ঢাকা”, “আমার ভাই মরল কেন, ইন্টেরিম জবাব দে”, “আমরা সবাই হাদি হব, গুলির মুখে কথা কই”, “ভারতীয় আগ্রাসন ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও”, “একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জেলে ভর”, ‘‘গুজরাট না চট্টলা, চট্টলা” ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

চাকসুর যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক ইসহাক ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় বিজয় ২৪ হল ছাত্রসংসদের ভিপি সানু আক্তার নদী বলেন, “হাদি ভাইকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে শুধু একজন মানুষকেই নয়, জুলাইকেও হত্যা করা হয়েছে। জুলাইকে আবার প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। যতদিন পর্যন্ত হাদি ভাইয়ের হত্যাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত না হবে, ততদিন আমরা বলতে পারব না যে, জুলাই সফল হয়েছে। আর কোনো হাদি যেন শহিদ না হয়, এটাই আমাদের দাবি।”

মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক মোনায়েম শরীফ বলেন, “আমরা সবাই জুলাই শহিদ হতে পারতাম। আমরা নিজের চোখে জুলাইয়ের মৃত্যু দেখেছি। যদি ১০০ জন জুলাই যোদ্ধা শহিদ হন, তাহলে আমরা ১০১ জন যোদ্ধা হয়ে আবার দাঁড়িয়ে যাব। আমরা সে জাতি, যে জাতিকে জুলাই একজনকে গুলি করলে একজন সামনে যায়, বাকিরা গুলির মুখে দাঁড়িয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ফ্যাসিস্টকে বলতে চাই সাবধান হয়ে যান।”

চাকসুর ভিপি ইব্রাহীম রনি বলেন, “আমরা খুবই বেদনাদায়ক সময় পার করছি। এক সপ্তাহ ধরে আমরা হাদি ভাইয়ের জন্য আশায় ছিলাম। এই ঘটনায় অনেকেই মনে করেছে তাদের নিজের ভাই শহিদ হয়েছে। হাদি ভাইয়ের মতো একটি কণ্ঠস্বর আমাদের খুব প্রয়োজন ছিল। তিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে মানুষের হৃদয়ের কথা বলতেন, খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষে কথা বলতেন। তিনি মানুষের মনের কথা বুঝতেন বলেই তাকে শহিদ করা হয়েছে। শুধু হাদি নয়, আধিপত্যবাদ এখন অনেকের বিরুদ্ধে কিলিং মিশনে নেমেছে। তারা আবার আধিপত্য কায়েম করতে চায়, দেশের সম্পদ লুটপাটের স্বপ্ন দেখে। হাদি ভাইয়ের শাহাদাতের পরও কেউ কেউ উসকানি ছড়াচ্ছে আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। জুলাইয়ের অপরাধীদের শাস্তি না হওয়ার কারণেই আজ জুলাইয়ের বীরদের মার খেতে হচ্ছে।”

বিক্ষোভ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন চাকসুর জিএস সাঈদ বিন হাবিব, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক হরেজুল ইসলাম, সহ-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক জিহাদ হোসেইন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আফনান হাসান, সহ-যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক ওবাইদুল সালমানসহ বিভিন্ন হল সংসদের নেতৃবৃন্দ।

সম্পর্কিত