প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলায় ১৭ জন গ্রেপ্তার, শনাক্ত ৩১

চরচা প্রতিবেদক
চরচা প্রতিবেদক
প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলায় ১৭ জন গ্রেপ্তার, শনাক্ত ৩১
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: চরচা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাংলা দৈনিক প্রথম আলো ও ফার্মগেটে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারে হামলা ও আগুন দেওয়া হয়। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, প্রথম আলো কর্তৃপক্ষের করা মামলায় এরই মধ্যে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

এস এন নজরুল বলেন, গত শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টা থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত শাহবাগ মোড় থেকে কারওয়ান বাজার এলাকায় বিক্ষোভের সুযোগ নিয়ে কতিপয় দুষ্কৃতিকারী প্রথম আলো এবং পরে ডেইলি স্টার পত্রিকার কার্যালয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ চেষ্টা চালালেও বিপুল জনসমাগম ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারণে তাৎক্ষণিক কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও আটকে দেয়।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার পর প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ মামলা করেছে। ডেইলি স্টারের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ শেষে মামলার প্রক্রিয়া চলমান। দুই প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে থানা-পুলিশ, ডিবি, সিটিটিসি ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা সিসিটিভি ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে।

নজরুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত থানা-পুলিশ ১৩ জন, সিটিটিসি ৩ জন এবং ডিবি একজনসহ মোট ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সহিংসতায় জড়িত আরও ৩১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে একজন মোহাম্মদ নাইম (২৬)। তিনি লুটপাটের মাধ্যমে দেড় লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার কাছ থেকে লুট করা নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং লুটের টাকায় কেনা একটি টেলিভিশন ও একটি ফ্রিজ উদ্ধার করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানি ও সহিংসতা ছড়ানোর অভিযোগেও সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা হবে।

ডিএমপির এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আরও বলেন, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা খোঁজার চেয়ে দুষ্কৃতিকারীদের আইনের আওতায় এনে প্রচলিত বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করাই মূল লক্ষ্য। অপরাধী যে দলেরই হোক বা যে মতাদর্শেরই হোক, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

তবে ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর মতো প্রতিষ্ঠানে হামলার মোটিভ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

এ ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম বলেন, আগাম তথ্য পাওয়া গেলে আরও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একইসঙ্গে গুজব, অপপ্রচার ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানি বন্ধে গণমাধ্যমসহ সকলের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি।

সম্পর্কিত