নাইর ইকবাল

বিপিএল মানেই যেন বিতর্ক। মাঠের খেলার বাইরে মাঠের বাইরের বিষয় নিয়েই বেশি খবর। বাংলাদেশের এই টি–টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ যেন খবরের চেয়ে বেখবরের জন্যই বেশি বিখ্যাত। প্রতিটি সংস্করণ যেন নতুন নতুন বিতর্কের জন্মদাতা। বিপিএলকে তাই ‘বিতর্ক লিগ’ বললে বাড়িয়ে বলা হয় না।
২০১২ সালে প্রথম। প্রথম সংস্করণেই ছিল নানা ধরনের বিতর্ক। ম্যাচ ফিক্সিং, বাইলজ নিয়ে সমস্যা ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে মাঠের খেলাটা খুব খারাপ হয়নি। মনে হচ্ছিল, ভালো–মন্দ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে যাবে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটা। পরের সংস্করণটাও খারাপ হয়নি। কিন্তু এরপর থেকে বিপিএল মানেই যেন সার্কাস শো। আজগুবি ও অভিনব সব কাণ্ডের পসরা নিয়ে এলো এই লিগ। নানা গুঞ্জন, নানা ঘটনা, নানা জল্পনা–কল্পনা। ফ্র্যাঞ্চাইজির আসা–যাওয়া, নিম্নমানের সম্প্রচার, বিদেশি ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক–ইস্যু! বিপিএলের পারিশ্রমিক ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত ব্যাপার–স্যাপার এখন বাইরের ক্রিকেট দুনিয়ারও চর্চার বিষয়।
২০২৫–২৬ বিপিএল শুরু হচ্ছে শুক্রবার থেকে। আগের বিপিএলগুলোর ভুল আমলে নিয়ে এবার বিতর্কবিহীন, সুন্দর একটা সংস্করণের প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু হায়! বিতর্ক ও অঘটন এবারও পিছু ছাড়েনি বিপিএলের।
এবার মাঠে গড়ানোর একদিন আগে এক ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক হুট করে বলে বসলেন, তিনি দল চালাতে পারবেন না, তার নাকি টাকা নেই। বলা নেই, কওয়া নেই দল তৈরি হয়ে গেছে, বিদেশিরা এসে গেছে, শুধু খেলা মাঠে গড়ানোর অপেক্ষা—এর মধ্যে মালিক বললেন, তিনি দল চালাতে পারবেন না। মগের মুলুক। হ্যাঁ, এ ধরনের মগের মুলুক বোধহয় বিপিএলই। এটাই শুধু নয়। আরেক ফ্র্যাঞ্চাইজির ওপর রাগ করে কোচিং স্টাফের মাঠ ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনা দেখে মনে হলো এটা যেন দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কোনো আসর নয়, পাড়ার আসর । পাড়ার টুর্নামেন্টের সময় এলাকার বন্ধু–বান্ধবেরা যেমন ঝগড়ায় জড়ায়, এখানেও ঠিক তা–ই।
গত বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে কত কেলেঙ্কারি। সরকারের হস্তক্ষেপও করতে হয়েছে। বিদেশি ক্রিকেটারদের কাছে দেশের মান–ইজ্জত নাই হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। বলা হলো, আর এমন হবে না! নতুন আসর শুরুর আগে ফ্র্যাঞ্চাইজি নির্বাচনে কত ধরনের কায়দা–কানুন করা হলো কিন্তু কীসের কি! এবার তা–ও ভালো টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই এক ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক স্বীকার করেছেন, তার দল চালানোর টাকা নেই, ক্রিকেটারদের বেতন দেওয়ার টাকা নেই। প্রশ্ন উঠতেই পারে, যে লোকের টাকা–পয়সা নেই, তিনি কীভাবে বিপিএলে বিনিয়োগ করেন, এটা অনেকের মাথাতেই আসার কথা নয়। আরেক ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে আবার লজিস্টিকস নিয়ে বেঁধে গেল কোচিং স্টাফের। অনুশীলন থেকে রাগ করে ‘সিএনজি’ নিয়ে বেরিয়ে গেলেন তারা। যদিও পরে আবার রাগ পড়েছে, একজন বলেছেন ‘হিট অব দ্য’ মোমেন্টে মাথা গরম করার কথা। কিন্তু সিনক্রিয়েট তো যা হওয়ার হয়ে গেল! এসবে টুর্নামেন্টের মান–সম্মান বাড়ে কি!
এক ফ্র্যাঞ্চাইজিতে টাকা–পয়সার সমস্যা, আরেক ফ্র্যাঞ্চাইজিতে ‘হিট অব দ্য মোমেন্টে’ রাগারাগি, সিনক্রিয়েট। বাকি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো কী করবে! সেটিই এখন দেখার বিষয়। অনেক সংশয়, শঙ্কা নিয়ে আজ সিলেটে মাঠে গড়াচ্ছে বিপিএলের আরেকটি নতুন আসর।
যে ধারণার ওপর ভিত্তি করে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের প্রবর্তন, সারা দুনিয়াতেই; সেই ধারণার ধারে–কাছে নেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোই তো টেকসই নয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম বা রাজশাহীর ফ্র্যাঞ্চাইজির নাম একেক আসরে একেকটি। কোনো স্থায়ী মালিক নেই। বাংলাদেশের ব্যবসা–বাণিজ্যের জগতে যারা বড় নাম, তারা যে বিপিএলে বিনিয়োগ করেনি, তা নয়, কিন্তু কোনো কিছুই টেকসই হয়নি। বড় নামগুলো কখনো বিনিয়োগ করেছে, কখনো বেরিয়ে গেছে। সেই জায়গা নিয়েছে ভূঁইফোড় লোকজন। এভাবেই দিনের পর দিন মাঠে গড়িয়েছে বিপিএল। ফ্র্যাঞ্চাইজি কেনা যদি দেশের ক্রিকেটে এক ধরনের বিনিয়োগ হিসেবে ধরে নেওয়া যায়, তাহলে সেই বিনিয়োগে আসলে কী লাভ হয়েছে ক্রিকেটের?
বিপিএলের আরও একটি বড় সমস্যা ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক নিয়ে সমস্যা। ব্যাপারটা তো রীতিমতো রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে বিপিএলে রীতি হয়ে আছে। সেই পারিশ্রমিক নিয়ে অব্যবস্থাপনা কাটেনি কখনোই। এবার তো শুরুর আগেই টাকা–পয়সা নিয়ে সমস্যায় পড়ে গেল এক ফ্র্যাঞ্চাইজি। সামনে কী আছে, কে জানে! গত মৌসুমে রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজি তো পারিশ্রমিক নিয়ে ফাজলামোর সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছিল। চট্টগ্রামের ফ্র্যাঞ্চাইজিও টাকা–পয়সা নিয়ে সমস্যা করেছিল। শহীদ আফ্রিদির মতো তারকাও পারিশ্রমিক নিয়ে অপদস্থ হয়েছেন। সমালোচনা করেছেন বিপিএলের ব্যবস্থাপনার। শুধু কী পারিশ্রমিক! ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর বিরুদ্ধে টুর্নামেন্ট চলার সময় হোটেলে থেকে তার বিল পরিশোধ না করার মতো ‘ছোটলোকি’ কাণ্ডেরও অভিযোগ আছে।

এবার ফ্র্যাঞ্চাইজি কিনে, দল গঠন করে, সেই দল চালাতে অপারগতা প্রকাশের মতো ঘটনা ঘটল। চট্টগ্রামের ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক নাকি বিসিবিকে জানিয়েছে, তাদের হাতে টাকা নেই, তারা ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক পরিশোধ করতে পারবে না, দল চালানোর মতো টাকাও নাকি তাদের নেই। বিসিবির একে হতবাকই হয়ে যাওয়ার কথা তবে বিসিবির বোধহয় প্রতিটি বিপিএলে নানা অনিয়ম ও অদ্ভূতুরে সব ঘটনা দেখতে দেখতে অভ্যাস হয়ে গেছে। বেশ দ্রুততার সঙ্গেই বিসিবি সেই ফ্র্যাঞ্চাইজির দায়িত্ব নিয়েছে। বাধ্য হয়েই হাবিবুল বাশারকে টিম ডিরেক্টর আর মিজানুর রহমান বাবুলকে হেড কোচ বানিয়ে পরিস্থিতি সামলেছে। উদ্বিগ্ন ক্রিকেটারদের আশ্বস্ত করেছে, চুক্তির কাগজ থাকলে তাদের পারিশ্রমিকও বিসিবি দিয়ে দেবে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন। যদি এমনই চলতে থাকে, তাহলে ফ্র্যাঞ্চাইজি বিক্রির কী দরকার। বিসিবি নিজেই ছয়–সাতটা দল নামিয়ে নিজেদের মতো করেই বিপিএল মাঠে গড়াতে পারে। তাহলে তো অন্তত বিপিএল কৌতূকনকশায় পরিণত হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যায়।
২০২৫–২৬ বিপিএল আজ শুরু হবে। কিন্তু শুরুর আগেই দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে যে বিতর্ক সেটির রেশ না আবার পুরো টুর্নামেন্টেই থাকে। যদিও এ নিয়ে মন্তব্য করার সময় এখনো আসেনি। বিসিবি বিপিএলের নতুন সংস্করণ নিয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেটির বাস্তবায়ন হোক, মাঠের খেলাটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও আকর্ষণীয় হোক, শুরুর দিন আপাতত চাওয়া এটিই।

বিপিএল মানেই যেন বিতর্ক। মাঠের খেলার বাইরে মাঠের বাইরের বিষয় নিয়েই বেশি খবর। বাংলাদেশের এই টি–টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ যেন খবরের চেয়ে বেখবরের জন্যই বেশি বিখ্যাত। প্রতিটি সংস্করণ যেন নতুন নতুন বিতর্কের জন্মদাতা। বিপিএলকে তাই ‘বিতর্ক লিগ’ বললে বাড়িয়ে বলা হয় না।
২০১২ সালে প্রথম। প্রথম সংস্করণেই ছিল নানা ধরনের বিতর্ক। ম্যাচ ফিক্সিং, বাইলজ নিয়ে সমস্যা ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে মাঠের খেলাটা খুব খারাপ হয়নি। মনে হচ্ছিল, ভালো–মন্দ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে যাবে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটা। পরের সংস্করণটাও খারাপ হয়নি। কিন্তু এরপর থেকে বিপিএল মানেই যেন সার্কাস শো। আজগুবি ও অভিনব সব কাণ্ডের পসরা নিয়ে এলো এই লিগ। নানা গুঞ্জন, নানা ঘটনা, নানা জল্পনা–কল্পনা। ফ্র্যাঞ্চাইজির আসা–যাওয়া, নিম্নমানের সম্প্রচার, বিদেশি ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক–ইস্যু! বিপিএলের পারিশ্রমিক ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত ব্যাপার–স্যাপার এখন বাইরের ক্রিকেট দুনিয়ারও চর্চার বিষয়।
২০২৫–২৬ বিপিএল শুরু হচ্ছে শুক্রবার থেকে। আগের বিপিএলগুলোর ভুল আমলে নিয়ে এবার বিতর্কবিহীন, সুন্দর একটা সংস্করণের প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু হায়! বিতর্ক ও অঘটন এবারও পিছু ছাড়েনি বিপিএলের।
এবার মাঠে গড়ানোর একদিন আগে এক ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক হুট করে বলে বসলেন, তিনি দল চালাতে পারবেন না, তার নাকি টাকা নেই। বলা নেই, কওয়া নেই দল তৈরি হয়ে গেছে, বিদেশিরা এসে গেছে, শুধু খেলা মাঠে গড়ানোর অপেক্ষা—এর মধ্যে মালিক বললেন, তিনি দল চালাতে পারবেন না। মগের মুলুক। হ্যাঁ, এ ধরনের মগের মুলুক বোধহয় বিপিএলই। এটাই শুধু নয়। আরেক ফ্র্যাঞ্চাইজির ওপর রাগ করে কোচিং স্টাফের মাঠ ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনা দেখে মনে হলো এটা যেন দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কোনো আসর নয়, পাড়ার আসর । পাড়ার টুর্নামেন্টের সময় এলাকার বন্ধু–বান্ধবেরা যেমন ঝগড়ায় জড়ায়, এখানেও ঠিক তা–ই।
গত বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে কত কেলেঙ্কারি। সরকারের হস্তক্ষেপও করতে হয়েছে। বিদেশি ক্রিকেটারদের কাছে দেশের মান–ইজ্জত নাই হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। বলা হলো, আর এমন হবে না! নতুন আসর শুরুর আগে ফ্র্যাঞ্চাইজি নির্বাচনে কত ধরনের কায়দা–কানুন করা হলো কিন্তু কীসের কি! এবার তা–ও ভালো টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই এক ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক স্বীকার করেছেন, তার দল চালানোর টাকা নেই, ক্রিকেটারদের বেতন দেওয়ার টাকা নেই। প্রশ্ন উঠতেই পারে, যে লোকের টাকা–পয়সা নেই, তিনি কীভাবে বিপিএলে বিনিয়োগ করেন, এটা অনেকের মাথাতেই আসার কথা নয়। আরেক ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে আবার লজিস্টিকস নিয়ে বেঁধে গেল কোচিং স্টাফের। অনুশীলন থেকে রাগ করে ‘সিএনজি’ নিয়ে বেরিয়ে গেলেন তারা। যদিও পরে আবার রাগ পড়েছে, একজন বলেছেন ‘হিট অব দ্য’ মোমেন্টে মাথা গরম করার কথা। কিন্তু সিনক্রিয়েট তো যা হওয়ার হয়ে গেল! এসবে টুর্নামেন্টের মান–সম্মান বাড়ে কি!
এক ফ্র্যাঞ্চাইজিতে টাকা–পয়সার সমস্যা, আরেক ফ্র্যাঞ্চাইজিতে ‘হিট অব দ্য মোমেন্টে’ রাগারাগি, সিনক্রিয়েট। বাকি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো কী করবে! সেটিই এখন দেখার বিষয়। অনেক সংশয়, শঙ্কা নিয়ে আজ সিলেটে মাঠে গড়াচ্ছে বিপিএলের আরেকটি নতুন আসর।
যে ধারণার ওপর ভিত্তি করে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের প্রবর্তন, সারা দুনিয়াতেই; সেই ধারণার ধারে–কাছে নেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোই তো টেকসই নয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম বা রাজশাহীর ফ্র্যাঞ্চাইজির নাম একেক আসরে একেকটি। কোনো স্থায়ী মালিক নেই। বাংলাদেশের ব্যবসা–বাণিজ্যের জগতে যারা বড় নাম, তারা যে বিপিএলে বিনিয়োগ করেনি, তা নয়, কিন্তু কোনো কিছুই টেকসই হয়নি। বড় নামগুলো কখনো বিনিয়োগ করেছে, কখনো বেরিয়ে গেছে। সেই জায়গা নিয়েছে ভূঁইফোড় লোকজন। এভাবেই দিনের পর দিন মাঠে গড়িয়েছে বিপিএল। ফ্র্যাঞ্চাইজি কেনা যদি দেশের ক্রিকেটে এক ধরনের বিনিয়োগ হিসেবে ধরে নেওয়া যায়, তাহলে সেই বিনিয়োগে আসলে কী লাভ হয়েছে ক্রিকেটের?
বিপিএলের আরও একটি বড় সমস্যা ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক নিয়ে সমস্যা। ব্যাপারটা তো রীতিমতো রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে বিপিএলে রীতি হয়ে আছে। সেই পারিশ্রমিক নিয়ে অব্যবস্থাপনা কাটেনি কখনোই। এবার তো শুরুর আগেই টাকা–পয়সা নিয়ে সমস্যায় পড়ে গেল এক ফ্র্যাঞ্চাইজি। সামনে কী আছে, কে জানে! গত মৌসুমে রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজি তো পারিশ্রমিক নিয়ে ফাজলামোর সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছিল। চট্টগ্রামের ফ্র্যাঞ্চাইজিও টাকা–পয়সা নিয়ে সমস্যা করেছিল। শহীদ আফ্রিদির মতো তারকাও পারিশ্রমিক নিয়ে অপদস্থ হয়েছেন। সমালোচনা করেছেন বিপিএলের ব্যবস্থাপনার। শুধু কী পারিশ্রমিক! ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর বিরুদ্ধে টুর্নামেন্ট চলার সময় হোটেলে থেকে তার বিল পরিশোধ না করার মতো ‘ছোটলোকি’ কাণ্ডেরও অভিযোগ আছে।

এবার ফ্র্যাঞ্চাইজি কিনে, দল গঠন করে, সেই দল চালাতে অপারগতা প্রকাশের মতো ঘটনা ঘটল। চট্টগ্রামের ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক নাকি বিসিবিকে জানিয়েছে, তাদের হাতে টাকা নেই, তারা ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক পরিশোধ করতে পারবে না, দল চালানোর মতো টাকাও নাকি তাদের নেই। বিসিবির একে হতবাকই হয়ে যাওয়ার কথা তবে বিসিবির বোধহয় প্রতিটি বিপিএলে নানা অনিয়ম ও অদ্ভূতুরে সব ঘটনা দেখতে দেখতে অভ্যাস হয়ে গেছে। বেশ দ্রুততার সঙ্গেই বিসিবি সেই ফ্র্যাঞ্চাইজির দায়িত্ব নিয়েছে। বাধ্য হয়েই হাবিবুল বাশারকে টিম ডিরেক্টর আর মিজানুর রহমান বাবুলকে হেড কোচ বানিয়ে পরিস্থিতি সামলেছে। উদ্বিগ্ন ক্রিকেটারদের আশ্বস্ত করেছে, চুক্তির কাগজ থাকলে তাদের পারিশ্রমিকও বিসিবি দিয়ে দেবে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন। যদি এমনই চলতে থাকে, তাহলে ফ্র্যাঞ্চাইজি বিক্রির কী দরকার। বিসিবি নিজেই ছয়–সাতটা দল নামিয়ে নিজেদের মতো করেই বিপিএল মাঠে গড়াতে পারে। তাহলে তো অন্তত বিপিএল কৌতূকনকশায় পরিণত হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যায়।
২০২৫–২৬ বিপিএল আজ শুরু হবে। কিন্তু শুরুর আগেই দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে যে বিতর্ক সেটির রেশ না আবার পুরো টুর্নামেন্টেই থাকে। যদিও এ নিয়ে মন্তব্য করার সময় এখনো আসেনি। বিসিবি বিপিএলের নতুন সংস্করণ নিয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেটির বাস্তবায়ন হোক, মাঠের খেলাটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও আকর্ষণীয় হোক, শুরুর দিন আপাতত চাওয়া এটিই।