ময়মনসিংহে দিপু হত্যা: ১২ আসামি তিনদিনের রিমান্ডে

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহে দিপু হত্যা: ১২ আসামি তিনদিনের রিমান্ডে
দিপু হত্যার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজের স্ক্রিনশট। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাক কারখানার শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাস (২৭) হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার ১২ আসামিকে তিনদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহের ৮ নম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদাত হোসেন এই আদেশ দেন।

পুলিশ গ্রেপ্তারদের পাঁচদিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলেও আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ময়মনসিংহ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোস্তাছিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য পরিকল্পনা, বহিরাগতদের সংগঠিত করার উৎস, কারখানার ভেতরের ভূমিকা এবং উসকানিদাতাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হবে।

রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড কারখানার ফ্লোর ইনচার্জ আলমগীর হোসেন (৩৮), কোয়ালিটি ইনচার্জ মিরাজ হোসেন (৪৬), শ্রমিক তারেক হোসেন (১৯), লিমন সরকার (২২), মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯) ও নিজুম উদ্দিন (২০), ভালুকা উপজেলার বাসিন্দা আজমল হাসান (২৬), আশিকুর রহমান (২৫), কাইয়ুম (২৫) ও শাহিন মিয়া (১৯) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাসিন্দা মো. নাজমুল (২১)।

নিহত দিপু চন্দ্র দাস ছিলেন ভালুকার পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস কারখানার শ্রমিক এবং পটুয়াখালীর তারাকান্দা উপজেলার বানিহালা ইউনিয়নের বাসিন্দা রবি চন্দ্র দাসের ছেলে।

পরিবারের অভিযোগ, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি আদায়ে সোচ্চার থাকার কারণেই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। দিপু উৎপাদন বৃদ্ধি, ওভারটাইম, কাজের পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতেন, যা মালিকপক্ষের সঙ্গে তার বিরোধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পরিবার জানায়, ঘটনার আগের রাতে দিপুকে জোরপূর্বক চাকরি ছাড়তে বলা হয় এবং তিনি রাজি না হওয়ায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়। পরদিন সেই হুমকিই বাস্তবে রূপ নেয়।

অভিযোগ রয়েছে, কারখানা কর্তৃপক্ষ পুলিশকে না জানিয়ে গেট খুলে দিয়ে দিপুকে তথাকথিত বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে তুলে দেয়। পরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় এবং মরদেহ গাছে বেঁধে আগুন দেওয়া হয়।

সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, হামলাকারীদের কেউই স্থানীয় বাসিন্দা নন। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা অন্তত ১৫০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

সম্পর্কিত