৩০ বছর পর কোনো শিশুর জন্ম হলো এই গ্রামে

চরচা ডেস্ক
চরচা ডেস্ক
৩০ বছর পর কোনো শিশুর জন্ম হলো এই গ্রামে
প্রতীকী ছবি/ফ্রিপিক

ইতালির এক শান্ত পাহাড়ি গ্রাম পাগলিয়ারা দেই মার্সি। এই গ্রামে মানুষের থেকে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। প্রায় ৩০ বছর পর এই গ্রামে জন্ম নিয়েছে একটি শিশু। শিশুটির জন্মে উচ্ছ্বসিত গ্রামবাসী।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট গিরিফালকোর ঢালে অবস্থিত ছোট গ্রাম পাগলিয়ারা দেই মার্সি বহু বছর ধরেই জনশূন্যতার সংকটে ভুগছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ায় জনসংখ্যা ক্রমেই কমেছে।

গ্রামটির সরু পাথুরে গলিতে এখন অবাধে ঘুরে বেড়ায় অসংখ্য বিড়াল। তারা অনায়াসে ঘরে ঢুকে পড়ে। মানুষের কোলাহল হারিয়ে যাওয়া এই গ্রামে দীর্ঘদিনের নীরবতা যেন ভরে ছিল বিড়ালের পায়ের নরম শব্দে। চলতি বছরের মার্চে সেই নীরবতা ভেঙে দিয়েছে একটি শিশুর জন্ম।

শিশুটির নাম লারা বুসসি ত্রাবুক্কো। সে তিন দশকের মধ্যে পাগলিয়ারা দেই মার্সিতে জন্ম নেওয়া প্রথম শিশু। তার জন্মের পর গ্রামটির মোট জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ জনে। সন্তান জন্ম এখানে এতটাই বিরল যে অল্প সময়েই লারা হয়ে উঠেছে গ্রামের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ।

লারার মা চিনজিয়া ত্রাবুক্কো জানান, আগে যারা পাগলিয়ারা দেই মার্সির নামই শোনেনওনি, তারাও এখন শুধু লারার কারণেই গ্রামটি দেখতে আসছেন। মাত্র নয় মাস বয়সেই লারা বেশ ‘বিখ্যাত’ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

লারার জন্মে এই আনন্দের পেছনে প্রকট হয়ে উঠেছে ইতালির গভীর জনসংখ্যা সংকট। দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা ইস্তাতের (আইএসটিএটি) এর তথ্যমতে, ২০২৪ সালে ইতালিতে শিশু জন্মের সংখ্যা নেমে এসেছে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৯৪৪টিতে, যা দেশটির ইতিহাসে সর্বনিম্ন। টানা ১৬ বছর ধরেই এই পতন অব্যাহত রয়েছে।

একই সঙ্গে জন্মহারও রেকর্ড সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। বর্তমানে ইতালিতে নারীরা গড়ে মাত্র দশমিক ১৮টি সন্তান জন্ম দিচ্ছেন, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংকটের পেছনে রয়েছে অনিশ্চিত চাকরি, তরুণদের বিদেশে চলে যাওয়া, কর্মজীবী মায়েদের জন্য পর্যাপ্ত সহায়তার অভাব, পুরুষদের মধ্যে বাড়তে থাকা বন্ধ্যাত্ব এবং অনেকেরই সন্তান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত।

সম্পর্কিত