চরচা প্রতিবেদক

জুমার নামাজের পর প্রায় জনমানবহীন পল্টন কালভার্ট রোডে দায়িত্ব পালন করছিলেন দুই নিরাপত্তা রক্ষী মো. রতন ও হাফিজ। তাদের কর্মস্থল প্যারামাউন্ট হাইটস ভবনের কয়েক গজ দূরে ডিআর টাওয়ারের সামনে বেলা ২টা ২১ মিনিটে গুলি করা হয় ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে।
ঘটনাটি পেছন থেকে দেখেছেন মো. রতন। ওই মুহূর্তের বর্ণনা দিতে গিয়ে চরচাকে বলেন, ‘‘জুমার পর ভাত খাইয়া এহানে (প্যারামাউন্ট হাইটস ভবনের সামনে) বইয়া আছি। শব্দ হইছে একটাই-জোরে, এরপর মাগো কইয়া চিৎকার।’’
ঘটনাস্থলের পাশের ভবন ডিআর টাওয়ারের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, একজনকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশায় করে কালভার্ট রোড থেকে বিজয়নগরের দিকে যাচ্ছিলেন হাদি। রিকশার ঠিক পেছনেই হোন্ডা হরনেট মোটরসাইকেলে দুইজন তাকে অনুসরণ করছিলেন।
ডিআর টাওয়ারের সামনে এলে মোটরসাইকেলটি রিকশার ডান পাশে চলে যায়। এরপর মোটরসাইকেলের পেছনে বসা একজন হাদির মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
শরিফ ওসমান হাদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত বছর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সরব ভূমিকার জন্য তিনি পরিচিতি পান।
ঝালকাঠির নলছিটির ছেলে হাদির শিক্ষাজীবন শুরু নেছারাবাদ কামিল মাদ্রাসায়। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর হাদির হাতে গড়ে ওঠে ‘ইনকিলাব মঞ্চ’। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সোচ্চার ওসমান হাদি বিভিন্ন সময় বিএনপিরও সমালোচনা করেছেন।
সেনাবাহিনীরও সমালোচনা করেছেন হাদি। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের ‘দুর্বলতা এবং দৃশ্যত পরিবর্তনের’ ঘাটতি নিয়ে সমালোচনা করে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাবও করেছিলেন।
গত নভেম্বরে হাদি নিজের ফেসবুক পেজে করা এক পোস্টে দাবি করেন, দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি ফোন নম্বর থেকে তাকে ফোন এবং মেসেজ পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তিনি লিখেছেন, তার বাড়িতে আগুন দেওয়া ও তার মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
মতিঝিল, শাহজাহানপুর, পল্টন, রমনা ও শাহবাগ এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৮ আসন থেকে আসন্ন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন হাদি। প্রতি শুক্রবার জনসংযোগও করতেন।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার আগে শুক্রবার জুমার নামাজের আগে বেলা ১১টা ৫২ মিনিটে হাদি ফেসবুকে লেখেন, “যেহেতু ঢাকা-৮ এ আমার পোস্টার-ফেস্টুন কিছুই নাই, তাই আমার এখন ছেঁড়া-ছিঁড়িরও চাপ নাই। দুদকের সামনে থেইকা জুম্মা মোবারক।”
প্যারামাউন্ট হাইটস ভবনের মো. রতন চরচাকে জানান, ঘটনার সময় পুরো সড়কটি ছিল ফাঁকা। হাদি ও তার এক সঙ্গীকে বহন করা রিকশাটি মতিঝিলের দিক থেকে এসে কালভার্ট রোড হয়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংকের দিকে যাচ্ছিল। তিনি বলেন, ‘‘রাস্তাত লোক আছিল দুই-তিনডা। গুলি করার লগে লগে একজন ওই রিকশাতে কইরাই তারে (ওসমান হাদি) মেডিকেল নিয়া গেছে।’’
ঘটনাস্থলে রক্তের ছিটা ছিটা দাগ দেখা গেছে। ওই স্থান থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আশপাশের ভবন থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ, সিআইডি ও র্যারের ফরেনিসক টিম।
হাদির সঙ্গে রিকশায় থাকা তার সঙ্গী মেসবাহ গণমাধ্যমকে বলেন, “জুমার নামাজ শেষে আমরা হাইকোর্টের দিকে যাচ্ছিলাম। তারা খুব কাছে থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়।’’
বিকাল পাঁচটার দিকে অস্ত্রোপচারের জন্য হাদিকে নিউরোসার্জরি বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। এর আগে তার সিটি স্ক্যান করে মাথায় গুলি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন চিকিৎসকরা।
হাদিকে গুলি করার পর প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এক বিবৃতিতে বলেন, “নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে কোনো ধরনের সহিংসতা বরদাশত করা হবে না। জনগণের নিরাপত্তা এবং প্রার্থীদের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। দোষীরা যে-ই হোক, আইনের আওতায় আনা হবে।”

জুমার নামাজের পর প্রায় জনমানবহীন পল্টন কালভার্ট রোডে দায়িত্ব পালন করছিলেন দুই নিরাপত্তা রক্ষী মো. রতন ও হাফিজ। তাদের কর্মস্থল প্যারামাউন্ট হাইটস ভবনের কয়েক গজ দূরে ডিআর টাওয়ারের সামনে বেলা ২টা ২১ মিনিটে গুলি করা হয় ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে।
ঘটনাটি পেছন থেকে দেখেছেন মো. রতন। ওই মুহূর্তের বর্ণনা দিতে গিয়ে চরচাকে বলেন, ‘‘জুমার পর ভাত খাইয়া এহানে (প্যারামাউন্ট হাইটস ভবনের সামনে) বইয়া আছি। শব্দ হইছে একটাই-জোরে, এরপর মাগো কইয়া চিৎকার।’’
ঘটনাস্থলের পাশের ভবন ডিআর টাওয়ারের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, একজনকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশায় করে কালভার্ট রোড থেকে বিজয়নগরের দিকে যাচ্ছিলেন হাদি। রিকশার ঠিক পেছনেই হোন্ডা হরনেট মোটরসাইকেলে দুইজন তাকে অনুসরণ করছিলেন।
ডিআর টাওয়ারের সামনে এলে মোটরসাইকেলটি রিকশার ডান পাশে চলে যায়। এরপর মোটরসাইকেলের পেছনে বসা একজন হাদির মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
শরিফ ওসমান হাদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত বছর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সরব ভূমিকার জন্য তিনি পরিচিতি পান।
ঝালকাঠির নলছিটির ছেলে হাদির শিক্ষাজীবন শুরু নেছারাবাদ কামিল মাদ্রাসায়। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর হাদির হাতে গড়ে ওঠে ‘ইনকিলাব মঞ্চ’। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সোচ্চার ওসমান হাদি বিভিন্ন সময় বিএনপিরও সমালোচনা করেছেন।
সেনাবাহিনীরও সমালোচনা করেছেন হাদি। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের ‘দুর্বলতা এবং দৃশ্যত পরিবর্তনের’ ঘাটতি নিয়ে সমালোচনা করে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাবও করেছিলেন।
গত নভেম্বরে হাদি নিজের ফেসবুক পেজে করা এক পোস্টে দাবি করেন, দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি ফোন নম্বর থেকে তাকে ফোন এবং মেসেজ পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তিনি লিখেছেন, তার বাড়িতে আগুন দেওয়া ও তার মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
মতিঝিল, শাহজাহানপুর, পল্টন, রমনা ও শাহবাগ এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৮ আসন থেকে আসন্ন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন হাদি। প্রতি শুক্রবার জনসংযোগও করতেন।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার আগে শুক্রবার জুমার নামাজের আগে বেলা ১১টা ৫২ মিনিটে হাদি ফেসবুকে লেখেন, “যেহেতু ঢাকা-৮ এ আমার পোস্টার-ফেস্টুন কিছুই নাই, তাই আমার এখন ছেঁড়া-ছিঁড়িরও চাপ নাই। দুদকের সামনে থেইকা জুম্মা মোবারক।”
প্যারামাউন্ট হাইটস ভবনের মো. রতন চরচাকে জানান, ঘটনার সময় পুরো সড়কটি ছিল ফাঁকা। হাদি ও তার এক সঙ্গীকে বহন করা রিকশাটি মতিঝিলের দিক থেকে এসে কালভার্ট রোড হয়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংকের দিকে যাচ্ছিল। তিনি বলেন, ‘‘রাস্তাত লোক আছিল দুই-তিনডা। গুলি করার লগে লগে একজন ওই রিকশাতে কইরাই তারে (ওসমান হাদি) মেডিকেল নিয়া গেছে।’’
ঘটনাস্থলে রক্তের ছিটা ছিটা দাগ দেখা গেছে। ওই স্থান থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আশপাশের ভবন থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ, সিআইডি ও র্যারের ফরেনিসক টিম।
হাদির সঙ্গে রিকশায় থাকা তার সঙ্গী মেসবাহ গণমাধ্যমকে বলেন, “জুমার নামাজ শেষে আমরা হাইকোর্টের দিকে যাচ্ছিলাম। তারা খুব কাছে থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়।’’
বিকাল পাঁচটার দিকে অস্ত্রোপচারের জন্য হাদিকে নিউরোসার্জরি বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। এর আগে তার সিটি স্ক্যান করে মাথায় গুলি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন চিকিৎসকরা।
হাদিকে গুলি করার পর প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এক বিবৃতিতে বলেন, “নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে কোনো ধরনের সহিংসতা বরদাশত করা হবে না। জনগণের নিরাপত্তা এবং প্রার্থীদের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। দোষীরা যে-ই হোক, আইনের আওতায় আনা হবে।”