জমি নিয়ে দুই পক্ষের বিবাদ, দুর্গা মন্দির ভাঙচুরের অভিযোগ

বরিশাল প্রতিনিধি
বরিশাল প্রতিনিধি
জমি নিয়ে দুই পক্ষের বিবাদ, দুর্গা মন্দির ভাঙচুরের অভিযোগ
বরিশালে একটি মন্দির ভেঙে প্রতিমা নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ছবি: চরচা

বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার সুন্দরদী মহল্লায় জমি নিয়ে দুই পক্ষের বিবাদের জেরে ১৫০ বছরের পুরোনো একটি মন্দির ভেঙে প্রতিমা নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত ১৯ নভেম্বর দিবাগত রাতে একটি পক্ষ ভাড়া করা লোক দিয়ে সেই জমি দখল করে সেখানে থাকা প্রতিমা পাশের নদীতে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ।

এ নিয়ে গৌরনদী মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সুন্দরদী এলাকার বাসিন্দা নারায়ণ মিত্র।

নারায়ণ মিত্রের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, এই জমির মালিক ব্রজবিলাশ মিত্রের কাছ থেকে তিনি এই জমি কেনেন। জমির ওপর প্রায় ১৫০ বছরের পুরোনো সুন্দরী মিত্রবাড়ী সার্বজনীন দুর্গা মন্দির রয়েছে। প্রতিবছর সার্বজনীন দুর্গা পূজাসহ ওই মন্দিরে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন হয়ে আসছে।

নারায়ণ মিত্র বলেন, ‘‘সরকারি অনুদানের ওপর নির্ভরশীল মন্দিরটি স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন করে পরিচালিত হচ্ছে। গত ১৯ নভেম্বর দিবাগত রাতে মৃত ব্রজ বলাশ মিত্রের ছেলে রিপন মিত্র ও সুমন মিত্র ওয়ারিশসূত্রে মন্দিরের ওই জমি নিজেদের দাবি করে ভাড়া করা লোকজন নিয়ে পরিকল্পিতভাবে পুরোনো দুর্গা মন্দিরটি ভেঙে ফেলে জোরপূর্বক জমি দখল করে নেয়।’’

লিখিত অভিযোগে নারায়ণ মিত্র আরও উল্লেখ করেন, রিপন মিত্র ও সুমন মিত্রসহ তাদের ভাড়া করা লোকজন মন্দিরের প্রতিমা এবং পূজার সামগ্রী পার্শ্ববর্তী পালরদী নদীতে ফেলে দিয়েছে। এ ঘটনায় আজ বুধবার বরিশাল বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের শরণাপন্ন হলে বিচারক ওই সম্পত্তির ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেন। সম্পত্তির দখল ও রেকর্ডের বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য গৌরনদী মডেল থানার ওসিকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

তবে জমি দখল ও দুর্গা মন্দিরের প্রতিমা এবং পূজার সামগ্রী পাশ্ববর্তী পালরদী নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত রিপন মিত্র ও সুমন মিত্র বলেন, জমিটি ওয়ারিশসূত্রে পাওয়া। তাদের মায়ের অসুস্থতার কারণে ঋণের দায়ে জর্জরিত হয়ে জমিটি বিক্রি করে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে বসা হয়েছিল। সহকারী কমিশনার উভয়পক্ষকে জমির মূল কাগজপত্র নিয়ে যেতে বলেছেন।

এ বিষয়ে গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘বুধবার সকালে পুনরায় দখল প্রক্রিয়া শুরুর খবর পেয়ে দুবার ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। এখনো আদালতের নির্দেশের কপি হাতে পাইনি। কাগজ হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’

সম্পর্কিত