সরে গেল রেললাইনের মাটি, বাঁশ-কলাগাছ দিয়ে ঠেস!

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
সরে গেল রেললাইনের মাটি, বাঁশ-কলাগাছ দিয়ে ঠেস!
বাঁশ ও কলাগাছ দিয়ে করা হয়েছে সংস্কার। ছবি: চরচা

রেললাইন সাধারণত পাথর আর ব্যালস্টে দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু ময়মনসিংহের নান্দাইলে তা দাঁড় করানো হয়েছে কলাগাছ আর বালুর বস্তায়।

ঘটনাটি ভৈরব-ময়মনসিংহ রেলপথের ৭৫ কিলোমিটার অংশে নান্দাইল উপজেলার শুভখিলা এলাকায়। সংস্কারের নামে রেললাইনের নিচে ফেলা হয়েছে বাঁশের খুঁটি, কলাগাছ ও প্লাস্টিকের বস্তাভরা বালু। দৃশ্যটি ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয় তীব্র সমালোচনা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই স্থানে দীর্ঘদিন ধরে মাটি সরে গিয়ে রেললাইনের পাথর নড়ে যায়। ফলে ট্রেন চললেই বিকট শব্দ হয়। বগি কেঁপে ওঠে। ট্রেন কখনও ওপরে, কখনও নিচে দুলে যায়। ভেতরের যাত্রী আর বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ—দু’পক্ষই আতঙ্কে থাকে।

স্থানটি ধীরে ধীরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাব আর মানবসৃষ্ট ত্রুটিতে বিপদ আরও বাড়ে।

বিষয়টি স্থানীয়রা আঠাবাড়ি রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষকে জানালেও ব্যবস্থা নিতে সময় লাগে। দীর্ঘদিন পর রেলওয়ের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় সংস্কার কাজ। কিন্তু সে সংস্কার যেন নতুন করে ভয় বাড়ায়। নিচু অংশের দুই পাশে প্লাস্টিকের বস্তায় বালু ভরে ফেলা হয়। বস্তা ঠেকাতে ফেলা হয় কলাগাছ। বাঁশ পুঁতে তা আটকে রাখার চেষ্টা চলে।

পথম দিনই দ্রুতগামী বিজয় এক্সপ্রেস চলার সময় আবারও বিকট শব্দ শোনা যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, রেললাইন স্থিতিশীল করার জন্য যেখানে পাথর ও ব্যালস্ট দরকার, সেখানে কলাগাছ ব্যবহার করা হয়েছে। তাঁদের ভাষায়, এটি সংস্কার নয়। খামখেয়ালিপনা আর অনিয়ম।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় রেলওয়ে প্রকৌশলী মো. আহসান হাবিব বলেন, “কলাগাছ দিয়ে সংস্কার, এটা হওয়ার কথা না।”

তিনি প্রথমে বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারেননি, ছবি পাঠাতে বলেন। ওয়াটসঅ্যাপে ছবি দেখে তিনি বলেন, “এভাবে কাজ করা ঠিক হয়নি। যারা করেছে, খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তবে মাটি সরে যাওয়ার জন্য তিনি স্থানীয় বসবাসকারীদের দায়ী করেন। মানবসৃষ্ট ত্রুটির কারণেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

সম্পর্কিত