কে ছিলেন শরিফ ওসমান হাদি?

চরচা ডেস্ক
চরচা ডেস্ক
কে ছিলেন শরিফ ওসমান হাদি?
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: ফেসবুক

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও এর পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে হওয়া আন্দোলনে বাংলাদেশে বড় পরিচিতি লাভ করেন শরিফ ওসমান হাদি।

ওসমান হাদি পরিচিতি বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ ইনকিলাব মঞ্চ। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার অভিজ্ঞতা ও দাবির ভিত্তিতে গঠিত সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ইনকিলাব মঞ্চ। এই মঞ্চ ওসমান হাদির হাত ধরে ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত হয়।

সংগঠনটির লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়, সমস্ত আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং “ইনসাফভিত্তিক”একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠন করা।

জুলাই আন্দোলনের সময় সক্রিয় ওসমান হাদি আন্দোলন সংগঠনে বড় ভূমিকা পালন করেন। তার গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলায়। তার বাবা নেছারাবাদ কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক, যেখান থেকেই হাদির শিক্ষাজীবন শুরু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা শেষে তিনি লেখালিখি ও পরে রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত। তার একটি সন্তান রয়েছে। ছয় ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট হাদি পেশাগতভাবে ছিলেন শিক্ষক। ইংরেজি কোচিং সেন্টার সাইফুরসের শিক্ষক ছিলেন। এ ছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সেও শিক্ষক ছিলেন তিনি। গুলিবিদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি এ পেশাতেই ছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১০–১১ বর্ষের শিক্ষার্থী হাদি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন। গত ১২ অক্টোবর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন রাজধানীর পল্টন এলাকায় নির্বাচনী প্রচার করছিলেন তিনি। পল্টনের কালভার্ট রোডে অটোরিকশায় করে যাওয়ার সময় একটি মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা আরোহী তাকে গুলি করে। গুলি তার মাথায় লাগে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান বলে জানা গেছে।

হাদিকে হত্যার হুমকি এর আগেও ছিল। গত নভেম্বর মাসে হাদি নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করে জানিয়েছিলেন যে, দেশি–বিদেশি অন্তত ৩০টি নম্বর থেকে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া তার বাড়িতে আগুন দেওয়াসহ তার মা–বোন এবং তার স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়েছিল।

সম্পর্কিত